উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে চিলমারীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে উপজেলার ৮ শতাধিক মৎস্য খামার পানিতে ভেসে যাওয়ার মুখে পড়েছে। সেই সঙ্গে শত শত পরিবার পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি তলিয়ে গেছে রোপা আমন ক্ষেত। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. বদরুজ্জামান জানান, উজান থেকে নেমে আসা ঢলে ইতোমধ্যে কয়েকটি খামারসহ ৩০০ মৎস্য পুকুর তলিয়ে গেছে। আরো অন্তত ৫০০টি ভাসি ভাসি করছে। নদে যেভাবে পানি বাড়ছে তা অব্যাহত থাকলে মৎস্য খামার তলিয়ে চাষিরা বিপুল ক্ষতির মধ্যে পড়বেন। জানা গেছে, উপজেলায় বাণিজ্যিক খামার ১২টি রয়েছে। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে ৮৩২টি পুকুর ও দীঘি রয়েছে। এসব পুকুর ও খামার থেকে এ বছর মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৪ হাজার ৯২৬ টন, যার বাজারমূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। ১২০০ পরিবার সরাসরি মৎস্য চাষের সঙ্গে জড়িত। এদের অধিকাংশই দরিদ্র। অনেক চাষি ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করেন। পাত্রখাতা, চকিদারপাড়া, কার্প মিশ্রচাষ প্রদর্শনীর দলনেতা কাজিম উদ্দিন জানান, তার প্রকল্পে মাছের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ টন। কিন্তু হঠাৎ বন্যা দেখা দেয়ায় প্রকল্পের মাছ ভেসে গেছে। এতে তারা পুঁজি হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন। একই কথা জানান, মৎস্য চাষি মাদু মন্ডলপাড়া এলাকার আনোয়ার হোসেন, লালু মিয়া ও ফরিস উদ্দিন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খালেদুর রহমান জানান, গত ৩ দিনে উপজেলার প্রায় ২৪০ হাজার হেক্টর আমন ক্ষেত তলিয়ে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আমন ক্ষেত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এদিকে উপজেলার পাত্রখাতা, নামাচর, চকিদারপাড়া, মন্ডলপাড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় কয়েকশ পরিবার পানিবন্দি রয়েছেন। ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টের গেজ রিডার খন্দকার মাহফুজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র নদের চিলমারী পয়েন্টে পানি ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।