×

জাতীয়

লাল শাপলার স্বর্গরাজ্য সাতলার বিল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৫০ পিএম

লাল শাপলার স্বর্গরাজ্য সাতলার বিল
লতা-পাতা গুল্মে ভরা বিলের পানিতে শত সহস্র লাল শাপলা হার মানিয়েছে সূর্যের আভাকেও। বরিশাল থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের এক বিলে দেখা মিলবে চোখজুড়ানো এমন দৃশ্যের। প্রকৃতির বুকে আঁকা এ যেন এক নকশি কাঁথা অপরূপ এ সৌন্দর্য। এ যেন শাপলার রাজ্য। বরিশালের উজিরপুর উপজেলার উত্তর সাতলা গ্রামের প্রায় এক হাজার ছয় শত হেক্টর জমিজুড়ে এই বিলের অবস্থান। স্থানীয়দের কাছে যেটি পরিচিত শাপলার বিল ও বাগান নামে। বিলের যত ভেতরে যাওয়া যায়, ততই বাড়তে থাকে লালের আধিক্য। এ যেন এক শাপলার রাজ্য। এ বিলে ঠিক কবে থেকে, শাপলা জন্মাতে শুরু করেছে তা নিয়ে নেই সঠিক কোনো তথ্য। তবে, স্থানীয় বয়স্কদের কাছ থেকে জানা যায় জন্মের পর থেকেই, এভাবে শাপলা ফুটতে দেখেছেন তারা। সাধারণত সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে এ বিলে লাল শাপলা ফোটে। আর ওই বিলের পানিতে ফুটন্ত লাল শাপলার হাতছানিতে জেলা শহর ছাড়িয়ে এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন বয়সের লোক আসতে শুরু করেছেন। অতি শিগগিরই এটি দেশের অন্যতম একটি পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। মনোমুগ্ধকর সাতলা বিলের শাপলা দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসছেন ভ্রমণ পিপাসু প্রকৃতিপ্রেমীরা। প্রত্যন্ত অঞ্চলের এ বিলের লাল শাপলাকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন চিত্র। ফলে দিন-দিন দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠছে সাতলার লাল ‘শাপলা বিল’। বরিশাল শহর থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত উজিরপুর উপজেলার সাতলা ইউনিয়নের উত্তর সাতলা, পার্শ¦বর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ও খাজুরিয়া গ্রামের এলাকা নিয়ে এ বিলের অবস্থান। বছরের অধিকাংশ সময় জলমগ্ন এ বিলের যত ভেতরে এগুতে যাবেন ততই লাল শাপলার আধিক্য। একপর্যায়ে মনে হবে শাপলার স্বর্গরাজ্যে বন্দি হয়ে গেছেন আপনি। তবে স্থানীয় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে প্রায় ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি নিয়ে বিস্তীর্ণ এ বিল। বিল সংলগ্ন গ্রামের করিম হাওলাদারসহ একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, বছরের ছয় মাস তারা অনেকেই এই বিলের শাপলার ওপর নির্র্ভরশীল। বিল থেকে শাপলা তুলে ও মাছ শিকার করে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন ওই এলাকার অনেক পরিবার। তারা আরো বলেন, ডিসেম্বর মাসের শুরুর দিকে শীতের মৌসুমে যখন পানি কমে যায় তখন সব শাপলা মরে যায়। ওই সময় কৃষকরা এখানে ধান চাষ করেন। তবে একই সঙ্গে ধান ও শাপলার এই সহাবস্থান আর কোথাও আছে কি না সন্দেহ। বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টরা জানান, সাধারণত শাপলা তিন প্রকারের হয়ে থাকে। এর মধ্যে সাদা, বেগুনি (হুন্দি শাপলা) ও অন্যটি লাল রঙের। সাদা ফুল বিশিষ্ট শাপলা সবজি হিসেবে ও লাল রঙের শাপলা ঔষুধি কাজে ব্যবহৃত হয়। সাতলা যাবেন কিভাবে : সড়কপথে ঢাকা থেকে বরিশাল আপনি ৬ থেকে ৮ ঘণ্টায় পৌঁছে যাবেন। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত গাবতলি বাস টার্মিনাল থেকে বেশকিছু বাস বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। ঢাকা থেকে আগত বাসগুলো বরিশাল এর নথুল্লাবাদ বাস স্ট্যান্ডে এসে থেমে থাকে। তার পর বরিশাল থেকে সাতলা শাপলা বিল যাওয়ার নিয়ম। বরিশাল থেকে সাতলা : উত্তর সাতলা নানাভাবে যাওয়া যায়। বরিশাল থেকে বাসে শিকারপুর। এরপর অটোতে উত্তর সাতলা। অথবা বরিশাল নথুল্লাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে সাতলা-বাগধা গ্রামে সরাসরী বাস সার্ভিস আছে। প্রায় আড়াই ঘণ্টার মতো লাগে। এ ছাড়া মোটরসাইলে ও মহেন্দ্র গাড়িতে করেও আপনি যেতে পারবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App