×

জাতীয়

দক্ষিণ রাউজান-কাপ্তাই সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০৩:২৪ পিএম

দক্ষিণ রাউজান-কাপ্তাই সড়ক যেন মৃত্যু ফাঁদ
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাউজান অংশ এখন বড় ধরনের মৃত্যুফাঁদ। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের চট্টগ্রাম প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) গেট থেকে মদুনাঘাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার সড়কজুড়ে সহস্রাধিক খানাখন্দ রয়েছে। এতে করে যান চলাচলে বাড়ছে সীমাহীন জনদুর্ভোগ। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, নষ্ট হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশ, যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। গাড়ির ঝাঁকুনিতে পথেই মারা যাচ্ছেন রোগী ও প্রসূতি মা। সড়কটি দিয়ে যাতায়াতকারী রাঙ্গুনিয়া, রাউজান, হাটহাজারী, পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির কাপ্তাইসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রায় অর্ধ কোটি মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগ করছেন নারকীয় যন্ত্রণা। এই জনদুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য ওয়াসা কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলাকে দায়ী করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। জানা যায়, চট্টগ্রাম ওয়াসার ‘শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার’ প্রকল্পের পাইপলাইন সংস্থাপনের জন্য চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি, কাজের দীর্ঘসূত্রিতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দায়সারা মনোভাবের কারণে রাঙ্গুনিয়ার গোডাউন থেকে মোহরা রাস্তার মাথা পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার সড়কজুড়ে খানাখন্দে বিপর্যস্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে ওঠে। দুর্ভোগে অতিষ্ঠ হয়ে রাউজান-রাঙ্গুনিয়াবাসী গত বছর নভেম্বরে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। ওই সময় আন্দোলনকারীরা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফয়জুল্লাহ ও প্রকল্পপ্রধান ইয়াকুব সিরাজদৌল্লাহর পদত্যাগ ও রাস্তা সংস্কারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন ও ওয়াসা অফিস ঘেরাওয়ের আল্টিমেটাম দেন। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তখন জনরোষে পড়ে সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করলেও অদৃশ্য কারণে রাউজান অংশে কাজ বন্ধ রাখে। সড়কটি সংস্কারের বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, আমি নিজে পরিদর্শন করে সড়কটির পাহাড়তলী, নোয়াপাড়াসহ বিভিন্ন অংশের বেহাল দশা দেখেছি। মানুষের চলাচলের উপযোগী নয় এটি। তিনি বলেন, ২০১৩ সাল থেকে চুক্তি অনুযায়ী সড়কটির সম্পূর্ণ দায়ভার এককভাবে ওয়াসা কর্তৃপক্ষের। তাদের দায়সারা কাজের কারণে এই জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, মদুনাঘাট বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র হয়ে চট্টগ্রাম প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর সম্মুখ পর্যন্ত সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কের পশ্চিম থেকে মদুনাঘাট, জিয়াবাজার, বৈজ্জ্যাখালী, মিয়ারঘাটা, নোয়াপাড়া সিএনজি স্টেশন, নোয়াপাড়া কলেজ, আমেনা বশর বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র, পথেরহাট, মিয়ামার্কেট, ব্রাহ্মণহাট, কালুমরার টেক, ধরের টেক, গশ্চি নয়াহাট, দমদমা, রাউজান পিংক সিটি-২, পাহাড়তলী বাজারের রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল কার্যালয় চুয়েট পর্যন্ত সড়কটি অগণিত খানাখন্দে পরিপূর্ণ। বিশেষ করে পাহাড়তলী বাজারের পশ্চিম থেকে চুয়েট পর্যন্ত ছোট ছোট গর্ত ছাড়াও ডোবাসদৃশ প্রায় ১৫টি গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এসব গর্ত যেন একেকটা মৃত্যুকূপ। এই অংশগুলোতে বিটুমিনের অস্তিত্বও নেই। বৃষ্টির পানিতে সড়কটি কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। পায়ে হেঁটে চলারও উপায় নেই। এ ব্যাপারে ওয়াসার প্রকল্প পরিচালক ইয়াকুব সিরাজদৌল্লাহ বলেন, আমাদের পাইপলাইন স্থাপনের কাজ হয়ে গেছে। সামান্য কিছু কাজ চলছে। অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হবে। এ ছাড়া বৃষ্টির জন্য সংস্কার কাজের বিঘ্ন ঘটছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App