×

জাতীয়

রাজাপুরের শীতল পাটির কদর বাড়ছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩০ পিএম

রাজাপুরের শীতল পাটির কদর বাড়ছে
ঝালকাঠি জেলায় রাজাপুর উপজেলার শীতল পাটির কদর বরিশাল, ঢাকা ও চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে এখন বিদেশেও। কিন্তু সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় তারা অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত। চাহিদার তুলনায় তারা পর্যাপ্ত পাটি সরবরাহ করতে পারছেন না। রাজাপুর উপজেলার হাইলাকাঠি ও সাংগর গ্রামের প্রায় সবাই ১২ মাসই পাটি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এ দুই গ্রামের হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রায় দেড়শ পরিবারের ছয় শতাধিক লোক এই পেশায় সঙ্গে জড়িত। পাইতরা পাটি তৈরি গাছ বন থেকে কেটে শুকানো এবং বেতি তৈরি ও বাজারে বিক্রি করে পুরুষরাই। রাজাপুর উপজেলার হাইলাকাঠি ও সাংগর গ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের পাটি গ্রাম হিসেবে পরিচিত। তীব্র গরমে হিমেল পরশের জন্য শীতল পাটির জুড়ি নেই। আর এই পাটি তৈরি করে দেশ-বিদেশের নানা জায়গায় সরবরাহ করছেন পাটি কারিগররা। গ্রাম দুটির অধিকাংশ ঘরেই এখন চলছে পাটি তৈরির কাজ। যারা পাটি তৈরি করে স্থানীয় ভাষায় তাদের পাটিকর বলা হয়। গরমে ক্লান্তির ছোঁয়া লাগলেও পাটি তৈরির এ মৌসুমে তাদের কাজে নেই ক্লান্তি। বেতি দিয়ে বাড়িতে পাটি তৈরির আসল কাজটি করেন নারীরাই। তবে মাঝে মধ্যে পুরুষরাও নারীদের সঙ্গে এ কাজে হাত লাগায়। একটি পাটি তৈরি করতে সময় লাগে ৪-৫ দিন। যুগ যুগ ধরে বংশ পরম্পরায় তারা পাটি তৈরি করে আসছেন। গ্রাম দুটির প্রবেশ পথে চোখে পড়ার মতো দেখা যায় পাইতরা বন। গ্রাম দুটির প্রায় একশ একর জমিতে পাইতরা চাষ হয়। শীতল পাটি দক্ষিণাঞ্চল ছাড়াও এ পাটি এখন দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে। শীতল পাটির কদর ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। কিন্তু পাটিকরদের পুনর্বাসন এবং পাটি বিক্রির মৌসুমে বিনা সুদে ঋণের ব্যবস্থা নেই। এ শিল্পটি দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বড় ধরনের ভ‚মিকা রাখতে পারে। গ্রাম দুটিতে মৌসুম ছাড়াও বছরে প্রায় ২০ হাজার পাটি তৈরি হয় যার বাজার মূল্য প্রায় অর্ধ কোটি টাকা। স্থানীয় শীতল পাটি উন্নয়ন প্রকল্প সমিতির সভাপতি তাপস পাটিকর বলেন, শীতল পাটি যুগ যুগ ধরে তৈরি করে আসছি। এখন বর্তমান পরিস্থিতি শীতল পাটি প্রায় বিলুপ্তির পথে। যে কষ্ট করি আমরা সেই মূল্য পাই না। ভবতাজ পাটিকর জানান, আগে গরম এলেই শীতল পাটির চাহিদা অনেক বেশি ছিল। এখন আর আগের মতো নেই। কারণ বর্তমান যুগের প্লাস্টিকের তৈরি পাটি বাজার দখল করে রেখেছে। ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক বলেন, ঝালকাঠির শীতল পাটি দেশজুড়ে বিখ্যাত। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসকের আয়োজনে ৪০ নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তারা শীতল পাটি দিয়ে বিভিন্ন রকম খেলনা, ম্যাট ও কলমদানিসহ অনেক জিনিস তৈরি করছেন। এ সব বাজারজাতকরণের ব্যবস্থা করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App