×

আন্তর্জাতিক

বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে উপেক্ষিত রোহিঙ্গা সংকট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৪৬ পিএম

বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে উপেক্ষিত রোহিঙ্গা সংকট
বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলের দক্ষিণ এশীয় সাতটি দেশের জোট বিমসটেকের সদ্য সমাপ্ত ৪র্থ শীর্ষ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা হয়নি। তবে, সম্মেলনে যোগ দেয়া শীর্ষ নেতা ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ক‚টনীতিকদের কেউ কেউ মনে করেন। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বে-অব-বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিক্যাল এন্ড ইকোনমিক কোঅপারেশন বা বিমসটেকের দুদিনব্যাপী ৪র্থ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয় এবং শেষ হয় পরদিন ৩১ আগস্ট। ওই সম্মেলনে অংশ নেয়ার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি এবং ভুটানের প্রধান উপদেষ্টা (অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান) দাশো সেরিং ওয়াংচুকের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন। এ ছাড়া, বিমসটেকের সদস্যভুক্ত দেশসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, সচিব এবং সংশ্লিষ্ট অপর কর্মকর্তারাও ওই সম্মেলনে অংশ নেন। সম্মেলনের আগের দিন গত ২৯ আগস্ট বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ অপরাপর শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনার আভাস দেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার সম্ভাবনার কথাও এ সময় জানান। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে তা হয়নি। সম্মেলন শেষে পররাষ্ট্র সচিব মো. শহিদুল হক জানিয়েছেন, আলোচ্য সূচিতে ছিল না বিধায় রোহিঙ্গা ইস্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়নি। এ ব্যাপারে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সি আহমদ ফয়েজ ভোরের কাগজকে বলেন, সাংগঠনিক বাধ্যবাধকতার কারণে বিমসটেকের শীর্ষ সম্মেলনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনা হয়নি। কিছুদিন আগে অনুষ্ঠিত আসিয়ান সম্মেলনেও এ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়নি একই কারণে। তবে সাবেক এই ক‚টনীতিক বলেন, সম্মেলনে বাইরে সদস্য দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের মধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে। সেখানে তাদের মধ্যে পারস্পরিক ও দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি উঠে আসে। তাদের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ও আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি, এমনটি ভাবার কোনো অবকাশ নেই। বিভিন্ন দেশের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় আলোচনাকালে রোহিঙ্গা ইস্যুসহ গুরুত্বপূর্ণ সব বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তবে, ভবিষ্যতে বিমসটেককে এই ইস্যুতে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত করার ব্যাপারে মতামত দেন এই ক‚টনীতিক। জানা গেছে, ১৮ দফা ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হয় বিমসটেকের ৪র্থ শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদে উৎসাহ, সমর্থন ও অর্থায়নের সঙ্গে জড়িত জোটভুক্ত দেশগুলোকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার বিষয়ে ঐকমত্য হয়। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগ সেতু হিসেবে বিমসটেকের বিশেষ অবস্থানকে গতিশীল করে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে কাজ করার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন বিমসটেকের শীর্ষ নেতারা। পাশাপাশি, সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা গভীরতর করার বিষয়ে পূর্ণ প্রতিশ্রুতিশীল থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, জ্বালানি, দারিদ্র্য বিমোচন এবং কৃষিবিষয়ক সহযোগিতা ও সাংস্কৃতিক বিনিময় ও জনস্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতাসহ ১৪টি সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রের উন্নয়নে এই জোটের প্রাধান্য রয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, ভুটান ও নেপাল বিমসটেকের সদস্য। ৯৭ সালে এই জোট গঠিত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App