×

জাতীয়

চট্টগ্রামে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য থেমে নেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০১:৩২ পিএম

চট্টগ্রামে পরিবহন সেক্টরে নৈরাজ্য থেমে নেই
পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের একগুয়েমির কারণে চট্টগ্রামের সড়কে চলছে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা। বেপরোয়া ড্রাইভার ও হেলপারদের কারণে প্রতিদিন প্রাণহানি ঘটছে। অনেকেই পঙ্গুত্ববরণ করছেন। সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্র আন্দোলনের মুখে তড়িঘড়ি করে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন করা হলেও সড়কের চিত্র পাল্টায়নি। তবে পুলিশ, বিআরটিএ ও পরিবহন মালিকরা কিছুটা হলেও সজাগ হয়েছেন। চট্টগ্রাম বিআরটিএ অফিসে নতুন লাইসেন্স গ্রহণ, পুরনো লাইসেন্স নবায়ন, ফিটনেস সনদ, ডিজিটাল নাম্বার প্লেট তৈরির আবেদন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়েছে। চালকদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, বিপজ্জনক ওভারটেকিং, হেলপার দিয়ে গাড়ি চালানো, যাত্রীদের অসতর্কতা, ট্রাফিক আইন না মানা, চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার করা এবং অসচেতনতার কারণেই সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। ৩০ আগস্ট বন্দর নগরীর বাকলিয়া রাহাত্তারপুল এলাকায় আনোয়ারাগামী যাত্রীবাহী বাসচাপায় অটোরিকশার চালক ও যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত আরো ৩ জন আহত হন। দুর্ঘটনার পরপর বেপরোয়া বাসের চালক ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, ইয়াছিনের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। এ ছাড়া বাসটির কোনো বৈধ কাগজপত্রও পাওয়া যায়নি। এর আগে ২৭ আগস্ট সিটি সার্ভিসের ৪ নম্বর রুটের একটি বাস নগরীর সিটি গেটের অদূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কালীরহাটে এক যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে পিষে মারে। ভাড়া নিয়ে বাসের ভেতর যাত্রী রেজাউল করিম রনির সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় বাসের সহকারীর। এর জের ধরে বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে তার ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে দেয় চালক। এ সময় মহাসড়ক অবরোধ করে স্থানীয়রা। বাসচালক দিদারুল আলম ও সহকারী মো. মানিককে আসামি করে হত্যা মামলা এবং মানিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দোষীদের শাস্তির দাবিতে নগরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধনসহ আন্দোলন চলছে। এদিকে সড়ক দুর্ঘটনা তদারকির দায়িত্বে থাকা বিআরটিএ, ট্রাফিক পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের মধ্যেই কোনের সমন্বয় নেই। একে অপরের ওপর দায়িত্ব দিয়ে দায় সারছে। এ প্রসঙ্গে লেখক-সাংবাদিক হাসান নাসির বললেন, সড়ক ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন না হলে দুর্ঘটনা বন্ধ করা সম্ভব নয়। সড়কে যত প্রাণহানি ঘটছে, তার সবগুলোই দুর্ঘটনা নয়। বরং বেশির ভাগই হত্যা এবং আত্মহত্যার পর্যায়ে পড়ে। সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা না এনে শুধু চালককে ফাঁসি দিয়ে মৃত্যুর মিছিল থামানো যাবে না। আইন কেউ মানতে চায় না, সিস্টেমে ফেলে আইন মানাতে হবে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-বন্দর) মোহাম্মদ আকরামুল হোসেন বলেন, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক বিভাগ কাজ করছে। নগরীর বিভিন্ন স্পটে যানবাহনের কাগজপত্র তল্লাশির পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধে মামলা দেয়া হচ্ছে। বিআরটিএ চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক (মেট্রো সার্কেল-২) ওসমান সরওয়ার আলম বলেন, নতুন লাইসেন্স, লাইসেন্স নবায়ন ও গাড়ির ফিটনেসের জন্য ভিড় হচ্ছে বেশি। সচরাচর গাড়ির ফিটনেস হয়ে থাকে গড়ে ২৫০টি। অভিযানের পর থেকে প্রতিদিন ফিটনেসের জন্য আসে গড়ে ৩০০টি গাড়ি। তিনি বলেন, প্রতিটি যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষার জন্য ৬১টি বিষয় দেখতে হয়। ম্যানুয়ালি একটি যানবাহনের ফিটনেস দেখতে হলে একজনের কমপক্ষে ২০ মিনিট করে সময় দরকার। জনবল সংকটের মধ্যেও কাজ করে যাচ্ছেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App