×

মুক্তচিন্তা

নতুন শ্রমবাজার তৈরিতে দৃষ্টি দিক সরকার

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০১৮, ০৭:২৩ পিএম

বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া। এ বিশাল বাজার আমরা হারাতে বসেছি। তবে এরই মধ্যে ওমান, কাতার, বাহরাইন ও সিঙ্গাপুরে নতুন বাজার সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া শ্রমবাজার যাতে দ্রুত আবার উন্মুক্ত হয় এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

জনশক্তি রপ্তানিতে অশনি সঙ্কেত দেখা দিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের বৃহৎ শ্রমবাজার সৌদি আরবে কর্মী নিয়োগের চাহিদা হ্র্রাস পাচ্ছে। মালয়েশিয়ায় জিটুজি প্লাসে দশ সিন্ডিকেট চক্রের কর্মী নিয়োগের চলমান প্রক্রিয়া (এসপিপিএ) সম্প্রতি স্থগিত ঘোষণা করেছে দেশটির নতুন সরকার। এই সিদ্ধান্তে রেমিটেন্স প্রবাহে বড় ভাটা পড়ার আশঙ্কার পাশাপাশি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সংকটে পড়বে এতে কোনো সন্দেহ নেই। অন্যদিকে দেশে কাক্সিক্ষত হারে কর্মসংস্থান না হওয়ায়ও অবৈধ পথে বিদেশ গমনের হার বাড়ছে বলে খবর মিলছে। দরিদ্ররা এ ঝুঁকিপূর্ণ পথে পা বাড়াচ্ছে। তাদের জন্য সরকারের যথাযথ কর্মসূচি থাকা আবশ্যক; যেগুলো রয়েছে, তাও ঢেলে সাজাতে হবে। বিশেষ করে নতুন শ্রমবাজার তৈরিতে সরকারকে দৃষ্টি দিতে হবে।

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারগুলোর একটি মালয়েশিয়া। গত বছরের মার্চ থেকে এ বছরের জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৯০ হাজার অভিবাসী শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় পাড়ি দিয়েছেন। এই সংখ্যা সৌদি আরবে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের সমান। এই শ্রমবাজার কয়েকদিন পর অস্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জিটুজি প্লাস নামে যে এসপিপিএ সিস্টেমের আওতায় মালয়েশিয়া তাদের দেশে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নিয়োগ করত, সেই পদ্ধতি আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকেই স্থগিত হয়ে যাবে বলে সে দেশের সরকার বাংলাদেশকে ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে। নতুন সরকারের পক্ষ থেকে নতুন নীতিমালা না হওয়া পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানি বন্ধ থাকবে। উল্লেখ্য, ২০০৬ ও ২০০৭ সালের পর মালয়েশিয়ায় ভুয়া কোম্পানি দেখিয়ে, ভুয়া পারমিট দেখিয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত লোক এনে এবং সাগর ও আকাশপথে অবৈধভাবে লোক এনে মালয়েশিয়ায় অমানবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হলে দীর্ঘদিন মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী আনা বন্ধ রেখেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার প্রথমে জিটুজি পদ্ধতিতে লোক প্রেরণ করে তখন মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে কোনো জনশক্তি রপ্তানিকারক সংশ্লিষ্ট ছিল না। একটা দাবি ছিল যে, তাদের যেন সুযোগ দেয়া হয়। সে পরিপ্রেক্ষিতে জিটুজি প্লাস অর্থাৎ বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানিকারকরাও সুযোগ পেয়েছে। এ বাজার আকস্মিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। সরকার ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে। আর এর জন্য প্রয়োজন উচ্চ প্রবৃদ্ধি ও অধিক কর্মসংস্থান। বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুযোগ ভোগ করছে। দেশের অধিকাংশ মানুষ তরুণ। এদের শ্রমকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের অন্যতম ক্ষেত্র হলো রেমিটেন্স। জনশক্তি রপ্তানি এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাজার সৌদি আরব ও মালয়েশিয়া। এ বিশাল বাজার আমরা হারাতে বসেছি। তবে এরই মধ্যে ওমান, কাতার, বাহরাইন ও সিঙ্গাপুরে নতুন বাজার সৃষ্টি হয়েছে। সেগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগাতে হবে। সৌদি আরব, মালয়েশিয়া শ্রমবাজার যাতে দ্রুত আবার উন্মুক্ত হয় এ লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App