×

পুরনো খবর

কার্যালয়টিই ভুগছে ফিটনেসের অভাবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ আগস্ট ২০১৮, ১১:৪৯ এএম

কার্যালয়টিই ভুগছে ফিটনেসের অভাবে
বাংলাদেশ রোড ট্রন্সপোর্ট অথোরিটির (বিআরটিএ) ঢাকা জেলা সার্কেলের ইকুরিয়া (কেরানীগঞ্জ) কার্যালয়টি নিজেই ভুগছে ফিটনেসের অভাবে। জায়গার অপ্রতুলতা, সরঞ্জামের অভাব, টাকা জমা দেয়ার বুথ সংখ্যা কম ও যানবাহন পরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় কাজ বিঘিœত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। সম্প্রতি নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অন্দোলন ও মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া অনুমোদন হওয়ায় গাড়ির নিবন্ধন, রুট পারমিট, নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন করাতে আসছেন আগের দ্বিগুণের চেয়েও বেশি মানুষ। এই চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কর্মীদের। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের অধীন বিআরটিএ ইকুরিয়া কেরানীগঞ্জ কার্যালয়ে গতকাল বুধবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মানুষের প্রচন্ড ভিড় সেখানে। শুধু ব্যক্তিগত গাড়ি আসছে তা নয়, সরকারি অনেক সংস্থার গাড়িও লাইনে দাঁড়িয়েছে ফিটনেস সনদের জন্য। ইকুরিয়া কার্যালয় সংশ্লিষ্টদের তথ্যমতে, আগে প্রতিদিন গাড়ির নিবন্ধন, রুট পারমিট, নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়নসহ নানা কাজে যে পরিমাণ লোক আসতেন, তা এখন বেড়ে দিগুণের চেয়ে বেশি হয়েছে। কিন্তু আমাদের লোকবলসহ অন্যান্য সামর্থ্য রয়ে গেছে আগের মতোই। বিআরটিএ থেকে দায়িত্ব পাওয়া রেট্রো রিফ্লেকটিভ নাম্বারপ্লেট প্রজেক্টের এসিসটেন্ট রিজোনাল অপারেশন ম্যানেজার বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, আজকে (গতকাল) দুপুর পর্যন্ত ১২৮টি যানবাহনকে নাম্বারপ্লেট দেয়া হয়েছে। আরো অপেক্ষমাণ রয়েছে। গত মঙ্গলবার নাম্বারপ্লেট দিয়েছি ১০৪টি যানবাহনকে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইকুরিয়া বিআরটিএ এর একজন মোটরযান পরিদর্শক জানান, প্রতিদিন সকাল থেকে যে পরিমাণ গাড়ি আসছে তা সামাল দেয়ার মতো জায়গা ও জনবল আমাদের নেই। চাইলেও দ্রæত গতিতে কাজ শেষ করা যাচ্ছে না। কারণ, যানবাহন পরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রপাতিগুলো অকেজো হয়ে পড়ে আছে অনেকদিন। একসঙ্গে এতো গাড়ি আসায় আমাদের ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে। গতকাল প্রবেশ ফটকের বাইরেও অনেক গাড়িকে লাইনে দাঁড়াতে দেখা গেছে। এদিকে গত দুদিন ইকুরিয়া কার্যালয়ে বিআরটিএ ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালানোয় দালালের আধিপত্য কম দেখা গেছে। তবে বিভিন্ন ফি জমা দেয়ার জন্য নির্ধারিত ব্যাংক এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের বাইরে মিলেছে দালালদের দেখা। সেখানে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন দালাল জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত গত মঙ্গলবার অপুসহ ১০ দালালকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেন। গতকালও ধরা হয়েছে ৭ জনকে। এর ফলে দালালের দৌরাত্ম্য এখন কম। অভিযোগ করে তিনি বলেন, টাকার জন্য আমরা এ কাজ করি। তবে দালালির চেয়ে বেশি টাকাতো নিয়ে নেয় বিআরটিএ-র সংশ্লিষ্টরাই। আমাদের আদালত কারাদন্ড দেন, তাদেরতো কিছুই হয় না। গতকাল ইকুরিয়া কার্যালয়ে কথা হয় বিআরটিএ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিবুর রহমানের সঙ্গে। তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা দালালদের দৌরাত্ম্য ও অনিয়ম বন্ধে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। আজও (গতকাল) অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। বিআরটিএ এর পরিচালক আপরেশন সিতাংশু এস বিশ্বাস গতকাল বিআরটিএ ঢাকা জেলা সার্কেলের ইকুরিয়া কেরানীগঞ্জ কার্যালয় পরিদর্শনে আসেন। সে সময় তিনি ভোরের কাগজকে বলেন, বিআরটিএর কাজে আরো স্বচ্ছতা আনতে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। সব সার্কেল কার্যালয়কেই ঠিকভাবে কাজ করতে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমি নিজেও বিভিন্ন কার্যালয়ে পরিদর্শনে যাচ্ছি। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, হঠাৎ চাপ বেড়ে যাওয়ায় একটু সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। জায়গার অপ্রতুলতা, প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব, টাকা জমা দেয়ার বুথ সংখ্যা কম ও যানবাহন পরীক্ষার আধুনিক যন্ত্রপাতি নষ্ট থাকায় দ্রুত কাজ করা যাচ্ছে না। তবে এসব সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। ফিটনেসসহ অন্যান্য কাজে আধুনিক যন্তপাতি দেয়ার জন্য জাপানি সাহায্য সংস্থা জাইকাকে আমরা একটি চিঠি দিয়েছি। লোকবল বৃদ্ধির কাজ চলছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App