×

জাতীয়

নানা সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ আগস্ট ২০১৮, ১১:৩৭ এএম

নানা সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত
চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। হাসপাতালে গাইনি বিশেষজ্ঞ সংকটে গর্ভবতী মায়েদের সেবা (এএনসি কর্নারে) দিচ্ছেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসাররা (এসএসিএমও)। অনভিজ্ঞ এসএসিএমও দিয়ে চিকিৎসা দেয়ায় জটিল গর্ভবতীদের ক্ষতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রোগীরা। অন্যদিকে হাসপাতালের আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিনটি গত ১০ জুলাই চালুর কয়েকদিনের মধ্যে আবারো বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে গর্ভবতী রোগীরা পড়েছেন জটিলতায়। উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিনা বেগম বলছেন গাইনি চিকিৎসক সংকটের কারণেই এ ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, বারবার চিকিৎসক চেয়েও না পেয়ে সম্প্রতি সিজারিয়ান রোগীদের জন্য সিভিল সার্জনকে বলে একজন গাইনি ডাক্তারকে নিয়ে আসা হয়েছে কয়েকদিনের জন্য। তিনি হাসপাতালে গাইনি চিকিৎসকসহ ডাক্তার দেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন মহলকে জানিয়েছেন। আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিনের বিষয়ে ডা. নাহিদ সিরাজ বলেন, মেশিনটি ২০১১ সালে দেয়া। দীর্ঘদিন ব্যবহার না করার কারণে মেশিনটি বারবার বিকল হয়ে পড়ছে। হাসপাতালের এই আলট্রাসোনোগ্রাফি মেশিনটি ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ বরাদ্দে দেয়া হলেও রেডিওলজিস্ট না থাকার অজুহাতে সেবাদান বন্ধ রাখেন তৎকালীন দায়িত্বরত চিকিৎসা কর্মকর্তারা। পরে ২০১৫ সালে তৎকালীন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইমদাদুল হক রাজু সেটি চালু করার ছয় মাস পরই নষ্ট হয়ে যায়। সম্প্রতি সেটি মেরামতের পর ১০ জুলাই আবার চালু করা হয়েছিল। গাইনি বিশেষজ্ঞসহ চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে রোগীর চাপে হাসপাতালটিতে পোস্টিং পেয়েও চিকিৎসকরা আসতে চান না বলে জানা যায়। এদিকে চিকিৎসক সংকট অন্যদিকে ডাক্তাররা সঠিক সময়ে আউটডোরে চিকিৎসা না দেয়ায় হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। গত সোমবার সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে অর্থপেডিক বিভাগের চিকিৎসক ইউনূস হোসেনের চেম্বার বন্ধ ছিল। এ সময় ২৫ রোগী উপস্থিত ছিলেন। চৌগাছা পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বেলেমাঠ এলাকার মেহেদী হাসান নামের এক রোগী অভিযোগ করে বলেন, ১০টা ৫০ মিনিটের দিকে তিনি চেম্বারে ঢোকেন। সেখানে রোগী দেখে আবার বেলা ১টার আগেই চেম্বার থেকে বেরিয়ে চলে যান। এ ছাড়া হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আওরঙ্গজেব ও হাসপাতালের দন্ত চিকিৎসক ডা. ইয়াসির আরাফাতকে পাওয়া যায়নি। রোগীদের অভিযোগ সকাল আটটা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত রোগী দেখার কথা থাকলেও চিকিৎসকরা ১০টার আগে কেউই আউটডোরে রোগী দেখেন না। আবার ১০টার পরে চেম্বারে বসলেও একটার পর আর রোগী না দেখে মেডিকেল রিপ্রেজেন্টিটিভদের সঙ্গে সময় কাটান। দন্ত চিকিৎসক ডা. ইয়াসির আরাফাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি চেম্বারে থাকেন না বললেই চলে। এ ছাড়া চেম্বারে বসেই তিনি নিজের প্রাইভেট চেম্বারের প্রচার চালান বলে অভিযোগ রয়েছে। একাধিক রোগী বলেন, তিনি হাসপাতালে নিজের চেম্বারে বসেই ভিজিটিং কার্ড দিয়ে রোগীদের যশোরে তার প্রাইভেট চেম্বারে যাওয়ার জন্য বলেন। একইদিন বেলা ১২টা ৪৫ মিনিটে হাসপাতালের এএনসি কর্নারে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) সুলতানা আশরাফুন্নাহার গর্ভবতী মায়েদের সেবা দিচ্ছেন। যেখানে সার্বক্ষণিক একজন গাইনি বিশেষজ্ঞ থাকার কথা। একই সময়ে জরুরি বিভাগে ছিলেন না কোনো চিকিৎসক। এসব বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা সেলিনা বেগম বলেন, চিকিৎসক সংকটের কারণে এএনসি কর্নারে এসএসিএমও দিয়ে গর্ভবতী নারীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মাঝে মধ্যে সেখানে ডা. সুরাইয়া পারভীনকে বসানো হচ্ছে। আবার মাঝে মধ্যে এ সব উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. সুব্রত কুমার বাগচী ১৫ দিনের ছুটিতে রয়েছেন। ফলে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য সিভিল সার্জনকে বলে ডা. ফারিয়াকে আপৎকালীন চিকিৎসক হিসেবে নিয়ে এসে সিজার করানো হচ্ছে। ডাক্তার ইউনূসের বিষয়ে তিনি বলেন, বারবার মিটিং করে তাদের সঠিক সময়ে রোগী দেখতে বললেও তারা মানছেন না। ডা. ইয়াসির আরাফাতের বিষয়ে তিনি বলেন, সেখানে তো রোগী কম থাকে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App