×

জাতীয়

বড়পুকুরিয়া খনির নথিপত্র জব্দ করেছে দুদক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ আগস্ট ২০১৮, ০১:২৮ পিএম

বড়পুকুরিয়া খনির নথিপত্র জব্দ করেছে দুদক
কয়লা দুর্নীতি মামলায় পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (বিসিএমসিএল) প্রায় ১৮ বছরের প্রয়োজনীয় নথিপত্র জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা দুর্নীতি মামলার তত্ত¡াবধানকারী কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক কাজী শফিকুল আলম এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিচালক সামছুল আলম তা জব্দ করে ঢাকায় নিয়ে যান। এর আগে গত রবিবার দুপুরে তারা কয়লাখনিতে আসেন। জানা গেছে, ২০০১ সাল থেকে চলতি বছরের ২৪ জুলাই পর্যন্ত মোট ১৭ বছর ৭ মাসের ৭ ধরনের প্রয়োজনীয় নথিপত্র জব্দ করে দুদক। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নথিপত্রের ফটোকপি গ্রহণ করা হয়। ৭ ধরনের নথির মধ্যে রয়েছে ২০০১ থেকে চলতি বছরের ২৪ জুলাই পর্যন্ত বছরভিত্তিক উৎপাদিত কয়লার পরিমাণের প্রতিবেদন ও রেজিস্টার, বিতরণের পরিমাণ ও বিতরণ রেজিস্টার, অডিট ফার্মের তৈরি নিরীক্ষা প্রতিবেদন, সম্প্রতি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) প্রতিনিধির খনির কোল ইয়ার্ড সরেজমিন পরিদর্শন প্রতিবেদন, পেট্রোবাংলা বা অন্য কোনো সংস্থার কয়লার মজুদের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করে থাকলে সেই প্রতিবেদন, বিসিএমসিএলের সর্বশেষ বার্ষিক সাধারণ সভায় উত্থাপিত রিপোর্ট, ধারাবাহিকভাবে প্রতিটন কয়লার মূল্য, এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন। এ ছাড়া ২০০১ থেকে চলতি বছরের ২৪ জুলাই পর্যন্ত সময়ে কয়লা উৎপাদন, বিক্রয় বা বিতরণ ও মজুদের সঙ্গে বিসিএমসিএলের এমডিসহ জড়িত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম, পদবি, বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, ফোন নম্বর ও তাদের কর্মবণ্টন আদেশসহ সময়কালের নথি ও অন্যান্য নথি। গতকাল সোমবার দুপুর ২টার দিকে কয়লা দুর্নীতি মামলার তত্ত¡াবধানকারী কর্মকর্তা ও দুদকের পরিচালক কাজী সফিকুল আলম খনি গেটে অবস্থানকারী সাংবাদিকদের জানান, গত দুদিন ধরে তারা খনির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কোল ইয়ার্ড পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া ২০০১ সাল থেকে চলতি বছরের ২৪ জুলাই পর্যন্ত সময়ের প্রয়োজনীয় নথিপত্র জব্দ করা হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নথিপত্রের ফটোকপি গ্রহণ করা হয়। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থেই নথিপত্র জব্দ করা হয় বলে তিনি জানান। উল্লেখ্য, গত ১৯ জুলাই খনির ইয়ার্ড থেকে কয়লা উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনাটি ধরা পড়ে। ২৩০ কোটি টাকার ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন কয়লা ঘাটতির অভিযোগে বিসিএমসিএলের সদ্য সরিয়ে দেয়া ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদ, মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) নুরুজ্জামান চৌধুরী ও উপমহাব্যবস্থাপক (স্টোর) খালেদুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। খনির এই তিন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাসহ ১৯ কর্মকর্তাকে আসামি করে ২৪ জুলাই দুর্নীতি দমন আইনে পার্বতীপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে দুদক। এ ঘটনায় পেট্রোবাংলার পরিচালক (মাইন অপারেশন) মো. কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি খনির সাবেক চার ব্যবস্থাপনা পরিচালক যথাক্রমে মো. কামরুজ্জামান, মো. আমিনুজ্জামান, এস এম নুরুল আওরঙ্গজেব ও সদ্য সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিব উদ্দিন আহমদকে কয়লা ঘাটতির জন্য দায়ী করে গত মাসের শেষ সপ্তাহে প্রতিবেদন দাখিল করে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এবং তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলায় অভিযুক্ত ১৯ কর্মকর্তা ও খনির সাবেক দুই ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. কামরুজ্জামান ও মো. আমিনুজ্জামানসহ ২১ কর্মকর্তাকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দুদক। সর্বশেষ ২৯ জুলাই কয়লা উধাও ঘটনার তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক (প্রশাসন) খলিলুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন যুগ্ম সচিব (জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ) নাজমুল হক ও পেট্রোবাংলার পরিচালক (মাইন অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App