×

জাতীয়

মধ্যপাড়া খনিতে ৪ লাখ টন পাথরের হিসাব নেই

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ আগস্ট ২০১৮, ০১:৩৭ পিএম

মধ্যপাড়া খনিতে ৪ লাখ টন পাথরের হিসাব নেই
কয়লা কেলেঙ্কারির রেশ কাটতে না কাটতেই এবার পার্বতীপুরের মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) প্রায় ৫৬ কোটি টাকা মূল্যের ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮১৭ টন পাথরের হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না। এমজিএমসিএল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পরিমাপগত ত্রুটি, সিস্টেম লস বা পদ্ধতিগত লোকসান ও মাটির নিচে দেবে গেছে বলে দাবি করছে। কয়লা কেলেঙ্কারির ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর তড়িঘড়ি করে গত ২৯ জুলাই এমজিএমসিএল বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। বিষয়টি তদন্তের জন্য পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) ও মধ্যপাড়া খনির নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাবেদ চৌধুরীকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। জানা গেছে, মধ্যপাড়া খনি উন্নয়নকালীন পিরিয়ডসহ ২০০৭ সালের ২৫ মে বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত পাথর উত্তোলন করা হয়েছে ৪২ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৫ টন। গত ২৯ জুলাই অনুষ্ঠিত এমজিএমসিএল বোর্ড মিটিংয়ে উত্থাপিত রিপোর্টে ২০০৬-৭ অর্থবছর থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত পরিমাপগত ত্রুটি ও সিস্টেম লস দেখানো হয়েছে ২ লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ টন এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছর পর্যন্ত ১ লাখ ৬ হাজার ৪৮৬ টন পাথর খনি ইয়ার্ডে মাটির নিচে দেবে গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। খনি কর্তৃপক্ষ মোট ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৮১৬.৮৯ টন পাথরের মূল্য বাবদ ৫৫ কোটি ২৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪৪৮ টাকা অবলোপন করার জন্য এমজিএমসিএল বোর্ডকে অনুরোধ করেছে। এ বিষয়ে পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) ও মধ্যপাড়া খনির নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাবেদ চৌধুরীকে আহবায়ক করে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্যরা হলেন পেট্রোবাংলার ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন, আনোয়ার হোসেন খান ও মধ্যপাড়া কঠিন শিলাখনির উপমহাব্যবস্থাপক রাজেউন নবী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এমজিএমসিএলের দায়িত্বশীল দুজন কর্মকর্তা ভোরের কাগজকে জানান, মধ্যপাড়া খনির পাথরের পরিমাপগত ত্রুটি, সিস্টেম লস বা পদ্ধতিগত লোকসান ও মাটির নিচে দেবে যাওয়ার বিষয়ে এমজিএমসিএল বোর্ড এবং পেট্রোবাংলাকে সময়ে সময়ে জানানো হয়েছে। এরপরও এত দিনেও বিষয়টি সমন্বয় বা অবলোপন না করা দুঃখজনক। খনির অপর একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২০০৬-৭ থেকে ২০১২-১৩ অর্থবছর পর্যন্ত খনি বাস্তবায়নকারী উত্তর কোরিয়ান প্রতিষ্ঠান নামনাম কর্তৃক উৎপাদনকালীন পরিমাপগত ত্রæটি ও সিস্টেম লস দেখানো হয় ২ লাখ ২৭ হাজার ২৩৩ টন। ২০১২-১৩ অর্থবছরের পর আর পরিমাপগত ত্রæটি ও সিস্টেম লস নেই। এরপর থেকে মাটির নিচে দেবে গেছে বা মাটিই খেয়ে ফেলেছে বলে দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি রহস্যজনক বলে তিনি মনে করেন। এ বিষয়ে এমজিএমসিএল বোর্ড চেয়ারম্যান ও জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. রুহুল আমিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পেট্রোবাংলার মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) জাবেদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গত ২৯ জুলাই এমজিএমসিএল বোর্ড মিটিংয়ে বিষয়টি উত্থাপন করা হয় বলে তিনি জেনেছেন। তবে তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন না এবং কাগজপত্র না দেখে কিছু বলতে পারবেন না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App