×

মুক্তচিন্তা

যাত্রীদের জিম্মি দশা কাটবে কখন?

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০১৮, ০৭:৫২ পিএম

 
পরিবহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে আমাদের সবসময় কড়া অবস্থান। মানুষ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করে কোনো কার্যোদ্ধারের চেষ্টা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটি জনগণকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর শামিল। কথায় কথায় ধর্মঘট ও সহিংসতার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে এর বিকল্প কর্মসূচির কথা ভাবতে হবে আমাদের। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানা মহল উসকানি দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদেরও এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পাল্টায় এবার বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। গতকাল সকাল থেকে হঠাৎ করে ঢাকার আন্তঃজেলা টার্মিনালগুলো থেকে বাস ছাড়া বন্ধ করে দিয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েকদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে গণপরিবহনগুলোও বন্ধ রয়েছে। বাস মালিকরা বলছেন, সড়কে ছাত্রদের ভাঙচুরের কারণে পরিবহন শ্রমিকরা বাস চালাতে চাইছেন না। এমন অভিযোগের কতটা ভিত্তি রয়েছে তা দেখার বিষয়। আমরা দেখে আসছি, পরিবহন খাতে নৈরাজ্য চরমে পৌঁছানোর দৃশ্য। কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ধর্মঘট ডেকে মানুষকে ভোগান্তিতে ফেলা পরিবহন শ্রমিক-মালিকদের নিয়মিত বিষয় দাঁড়িয়েছে। গত ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে। আন্দোলনে বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এজন্য পরিবহন মালিকরা তাদের দায়ী করছে। আমরা মনে করি, এসব নাশকতা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দ্বারা সম্ভব নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢুকে কারা নাশকতা করছে, গাড়ি পুড়িয়ে দিচ্ছে প্রশাসনের নজরদারি দরকার। পরিবহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের বিরুদ্ধে আমাদের সবসময় কড়া অবস্থান। মানুষ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি করে কোনো কার্যোদ্ধারের চেষ্টা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটি জনগণকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করানোর শামিল। কথায় কথায় ধর্মঘট ও সহিংসতার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে এসে এর বিকল্প কর্মসূচির কথা ভাবতে হবে আমাদের। শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নানামহল উসকানি দিচ্ছে- তা আমরা দেখতে পাচ্ছি। শিক্ষার্থীদেরও এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। দেশের যে কোনো পরিস্থিতিতে প্রতিবাদ জানানো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যৌক্তিক, কিন্তু কোনো প্রতিবাদের ফলে যদি সাধারণ মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় তবে তারচেয়ে পরিতাপের আর কিছু হতে পারে না। প্রতিবাদের নামে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষকে এভাবে দুর্ভোগের কবলে ফেলে সারাদেশের সঙ্গে রাজধানীকে বিচ্ছিন্ন করা ঠিক নয়। এ ধরনের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে যে ক্ষতি হয় তার দায় কে নেবে? সাধারণ মানুষের আশঙ্কা অবিলম্বে পরিবহন ধর্মঘটের অবসান না হলে দুর্ভোগ আরো বাড়বে। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, জনগণকে জিম্মি করে আন্দোলনের ধারা আমাদের দেশে নতুন নয়। বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক দলের আন্দোলন থেকে শুরু করে বেশিরভাগ দাবি আদায়ের আন্দোলনের প্রথম এবং প্রধান ভুক্তভোগী হয় জনগণ। কেননা জনগণকেই সবার আগে জিম্মি করে দাবি আদায় করার চেষ্টা করা হয়। এমনকি বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষও তাদের নিজ নিজ স্বার্থ সংবলিত দাবি আদায় করার জন্য এই মোক্ষম হাতিয়ারকেই বেছে নেয়। ফলাফল হিসেবে সাধারণ মানুষের দুর্বিষহ দুর্ভোগ পোহাতে হয়। আমরা বলব, পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের জিম্মি করে এ কর্মসূচি পালন করছে। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকেই পরিবহন খাতে কঠোর মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। প্রতিবাদের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করলে সংশ্লিষ্ট পরিবহনের মালিকের বিরুদ্ধে নিতে হবে ব্যবস্থা। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ছাড়া নয়। যেভাবেই হোক, পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App