×

জাতীয়

নানা শঙ্কায় বিএনপির পুরনো কৌশল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০১৮, ০২:১২ পিএম

বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একতরফা ভোট হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রধান একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রেখেছে। গতকালই পুলিশের বিশেষ অভিযানে বিএনপির অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আটক হয়েছেন। গ্রেপ্তার আতঙ্কে বাকি নেতাকর্মীরাও গাঁ ঢাকা দিয়েছেন। যাদের অধিকাংশেরই ভোটের দিন পোলিং এজেন্ট কিংবা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকার কথা। এমন পরিস্থিতিতে ভোট কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্ট না থাকা ও দলীয় ভোটার উপস্থিতির হার কমে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যা একতরফা নির্বাচনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় কার্যকরী একটি ‘পুরনো কৌশল’ অবলম্বন করার কথা ভাবছেন বিএনপির নেতাকর্মী ও ভোটাররা। গত দুদিন বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর সঙ্গে আলাপ করে তেমন আভাসই মিলেছে। বরিশাল নগরীর ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন ভোটারের জন্য ১২৩টি কেন্দ্র রয়েছে। এতে ৭৫০টি ভোটকক্ষ বা বুথ স্থাপন করা হয়েছে। নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে রিটার্নিং অফিসার, সহকারি রিটানিং অফিসার, প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসাররা দায়িত্ব পালন করবেন। ইতোমধ্যেই তাদের প্রশিক্ষণের কাজ শেষ করেছে নির্বাচন কমিশন। এর সঙ্গে প্রতিটি বুথে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টরা দায়িত্বে থাকবেন। তাদের তালিকাও নির্বাচন কমিশনের হাতে পৌঁছে দিয়েছেন প্রার্থীরা। কিন্তু আইনশৃংখলা বাহিনীর আটকাভিযান অব্যাহত থাকায় বুথে বিএনপির পোলিং এজেন্ট পাওয়া যাবে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো নগরীতে। আটক ও পলাতকরা কেন্দ্রে যেতে পারবেন নাÑ এটা নিশ্চিত হয়েছে বিএনপি। বাকি যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। এ জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের পকেটে পকেটে রয়েছে সিটি নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশনা। ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নির্বাচনকালে মামলা অথবা ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার ও অহেতুক হয়রানি করা যাবে না। কিন্তু তাতেও রেহাই মিলছে না বিএনপি নেতাকর্মীদের। যাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে তাদের কোনো না কোনো মামলার আসামি হিসেবেই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নগরীর কোতোয়ালি, কাউনিয়া ও এয়ারপোর্ট থানার ওসিরা। তারা তিনজনই বলছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। সুনির্দিষ্ট মামলা ও ওয়ারেন্ট যাদের নামে রয়েছে, তারাই কেবল গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এখানে পক্ষপাতিত্বের সুযোগ নেই। তবে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মজিবর রহমান সরোয়ার অভিযোগ করেছেন, পুলিশ ক্ষমতাসীন দলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। যে হারে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আরো বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে ভোটারদের মধ্যে স্বস্তি আসবে না, তারা ভোট কেন্দ্রে যেতে সাহস ও আগ্রহ পাবে না। ভোটও অবাধ হবে না। বিএনপির এসব অভিযোগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী সেরনিয়াবাত আবদুল্লাহ বলেন, বরিশালের নির্বাচনী পরিবেশ খুব ভালো। হামলা, মারধর, অশান্তি নেই। মিথ্যাচারের মাধ্যমে বিএনপি এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে ঘোলাটে করতে চাইছে। আমি আহবান জানাব, ভোটাররা যেন ৩০ জুলাই ভোটকেন্দ্রে যান এবং নিজেদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেন। পুরনো কৌশলে বিএনপি : পুলিশি ধড়পাকর, সরকারি দলের হুমকি মোকাবেলায় এবারও পুরনো কৌশল অবলম্বন করবে বিএনপি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা জানান, বিপদ এড়াতে নৌকার ব্যাজ লাগিয়ে ভোটকেন্দ্রে পাঠানো হবে সাধারণ ভোটারদের। যারা নৌকার পরিচয়ে কেন্দ্রে ঢুকে ধানের শীষে ভোট দেবেন। এ কাজে কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীর সহযোগিতাও পাবে বিএনপি। তারা নিজেদের লোক পরিচয় দিয়ে ধানের শীষের পাশাপাশি কাউন্সিলর পদে নিজের প্রতীকের ভোট নিশ্চিত করবেন। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ মেয়াদে বরিশাল-৫ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে নৌকার ব্যাজ পরে ধানের শীষে ভোট দিয়েছিলেন নগরীর ভোটাররা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App