×

খেলা

বুন্দেসলিগায় বায়ার্নের একচেটিয়া আধিপত্য

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০১৮, ০৪:২০ পিএম

বুন্দেসলিগায় বায়ার্নের একচেটিয়া আধিপত্য
বিশ্বের দামি ও জনপ্রিয় ৫টি লিগের মধ্যে জার্মান বুন্দেসলিগা একটি। স্প্যানিশ লা লিগা এবং ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের মতো জার্মান বুন্দেসলিগাও ফুটবলপ্রেমীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। বিশ্বের নামকরা অনেক ফুটবলারই খেলেন এই লিগে। গতি এবং ছন্দময় ফুটবলের কারণে বুন্দেসলিগার ম্যাচগুলো দর্শককে সবসময় আকৃষ্ট করে। ফুটবলপ্রেমীদের উন্মাদনায় মাতিয়ে রাখতে আগামী মাসের ২৪ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে জার্মান বুন্দেসলিগার ২০১৮-১৯ মৌসুমের খেলা। এটি হবে বুন্দেসলিগার ৫৬তম আসর। বিশ্বের অন্য জনপ্রিয় লিগগুলোর তুলনায় জার্মান বুন্দেসলিগার যাত্রা শুরু হয় কিছুটা দেরিতে। বুন্দেসলিগার প্রথম আসর বসেছিল ১৯৬৩ সালে। এর আগে জার্মানিতে বেশ কয়েকটি লিগ অনুষ্ঠিত হতো। তবে এসব লিগের ওপর জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের নিয়ন্ত্রণ ছিল না বললেই চলে। দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের বোধোদয় হয় ১৯৬২ সালে। ওই বছর বিশ্বকাপের আসর বসেছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ চিলিতে। ওই বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে অপেক্ষাকৃত দুর্বল দল যুগোস্লাভিয়ার কাছে হেরে বিদায় নিতে হয় জার্মানদের। এরপর নিজ দেশে মানসম্মত একটি ঘরোয়া ফুটবল লিগ আয়োজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন দেশটির ফুটবল ফেডারেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর শুরু হয় ঘরোয়া লিগ আয়োজনের পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে যার ভ‚মিকা সবচেয়ে বেশি তিনি হলেন হারমান গসম্যান। তিনি ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জার্মান ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টাতেই শুরু হয় বুন্দেসলিগার যাত্রা। প্রথম মৌসুমে বুন্দেসলিগায় অংশ নেয়ার জন্য মোট ৪৬টি ক্লাব আবেদন করেছিল। সেখান থেকে মোট ১৬টি দলকে অংশগ্রহণের জন্য বাছাই করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে দলগুলোর অতীতের পারফরমেন্সকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছিল। জার্মান বুন্দেসলিগার প্রথম মৌসুমে অংশ নেয়া দলগুলো হলো এনট্রাচট ব্রোনটাওয়েচট, ওয়ার্ডার ব্রিম্যান, হামসবার্গ এসবি, বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, এফসি ক্লোন, এমএসবি ডুইসবার্গ, প্রিউবেচন মুনস্টার, শালখে, এফসি কেনসার স্লাউর্টান এফসি সারব্রোকেন, এনট্রাচট ফ্রাঙ্কপোর্ট, কার্লস্লেহের এসসি, এফসি নার্নবার্গ, হেরথা বিএসসি, ১৮৬০ মিউনিখ এবং ভিএফবি স্টাটগার্ট। প্রথম মৌসুমে ১৬টি দল অংশ নিলেও বিভিন্ন সময়ে জার্মান বুন্দেসলিগায় অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যায় পরিবর্তন এসেছে। যেখানে ১৯৬৩ থেকে ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত বুন্দেসলিগায় খেলেছে মোট ১৬টি দল। তবে পরির্বতন আসে এরপরের মৌসুমে। ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমের বুন্দেসলিগায় অংশ নেয় মোট ১৮টি দল। অর্থাৎ অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ২টি বাড়ানো হয়। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ১৮টি দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে বুন্দেসলিগা। তবে ১৯৯১-৯২ সালের মৌসুমে বুন্দেসলিগায় অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা আরো ২টি বাড়িয়ে ২০টিতে উন্নীত করা হয়। তবে ১৯৯৩ সালে ফের ১৮টি দলের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় বুন্দেসলিগা। এরপর থেকে এখন পর্যন্ত ১৮টি দলের অংশগ্রহণেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে জার্মানির ঘরোয়া ফুটবলের সবচেয়ে জনপ্রিয় এই আসরটি। অর্থাৎ বুন্দেসলিগায় বর্তমানে ১৮টি দল অংশ নেয়। সেখান থেকে প্রতি মৌসুম শেষে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে থাকা ২টি দলের অবনমন ঘটে বুন্দেসলিগা ২-তে। বুন্দেসলিগার পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ৩টি দল অংশ নেয় উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে। এ ছাড়া পয়েন্ট টেবিলের চতুর্থ স্থানে থাকা দলটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে অফ পর্বে খেলার সুযোগ পায়। সেখানে জিততে পারলে পায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অংশ নেয়ার সুযোগ এবং হারলে অংশ নিতে হয় উয়েফা ইউরোপা লিগে। এ ছাড়া বুন্দেসলিগার পয়েন্ট টেবিলের পঞ্চম স্থানে থাকা দলটিও সরাসরি উয়েফা ইউরোপা লিগে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। শুরু থেকে জার্মান বুন্দেসলিগায় একতরফা আধিপত্য দেখাচ্ছে বায়ার্ন মিউনিখ। বুন্দেসলিগার বর্তমান চ্যাম্পিয়নও তারা। এ ছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যকবার বুন্দেসলিগার শিরোপা জিতেছে বুরুশিয়া ডর্টমুন্ড ও বরুশিয়া মুনচেন গ্লাডবাচ। দুদলই সমান ৫ বার করে জিতেছে বুন্দেসলিগার শিরোপা। এতেই বোঝা যায়, বুন্দেসলিগায় বায়ার্ন মিউনিখের আধিপত্য। বুন্দেসলিগার সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডটি কিংবদন্তি ফুটবলার গার্ড মুলারের দখলে। দীর্ঘদিন ধরে বায়ার্নের হয়ে খেলা এই স্ট্রাইকার বুন্দেসলিগায় মোট ৩৬৫টি গোল করেছেন। জার্মান বুন্দেসলিগায় সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছেন ডিফেন্ডার কার্ল হেইন্স করবেল। বুন্দেসলিগায় মোট ৬০২টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। জার্মান বুন্দেসলিগার সর্বশেষ ৬টি আসরের শিরোপা জিতেছে বায়ার্ন মিউনিখ। এবারো কি তারাই শিরোপা জিতবে নাকি উত্থান হবে নতুন কোনো জায়ান্টের- সেটা দেখার অপেক্ষায় এখন সারা বিশ্বেরফুটবলপ্রেমীরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App