×

জাতীয়

বরিশালে জামায়াতের প্রচারণায় টার্গেট মসজিদ ও মাদ্রাসা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ জুলাই ২০১৮, ০২:৩৭ পিএম

বরিশালে জামায়াতের প্রচারণায় টার্গেট মসজিদ ও মাদ্রাসা
ফজর থেকে এশা পর্যন্ত প্রতি ওয়াক্ত নামাজের আগেই নগরীর মসজিদগুলোতে চলছে ভোট ভিক্ষা। মুসল্লিরা নামাজের জন্য মসজিদে প্রবেশ করলেই এক শ্রেণির মুসল্লি ধানের শীষ ও হাত পাখার জন্য ভোট চান। কোনো কোনো মসজিদে নামাজের জন্য কাতারবন্দি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মুসল্লিদের মধ্যে থেকে একজন দুটি কথা শোনার আহবান জানিয়ে মুসলমানদের ইমানি দায়িত্ব হিসেবে এই দুই প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। গত ১০ জুলাই প্রচারণা শুরু হওয়ার পর থেকে এ কাজ করে আসছিল ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। তারা হাত পাখার পক্ষে ভোট চাইতে গিয়ে নানান যুক্তিতর্ক দিচ্ছেন। সম্প্রতি এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। স্থানীয় বিএনপির সঙ্গে বিরোধ মিটমাট হওয়ার পরই মাঠে নামে জামায়াত। নগরীর জামে কসাই মসজিদ, বাইতুল মোকাররম মসজিদ, চকবাজার জামে মসজিদ, নতুন বাজার জামে মসজিদ, ভাটিখানা জামে মসজিদ, রূপাতলী মোল্লাবাড়ী জামে মসজিদসহ অসংখ্য মসজিদ থেকে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কাজ করতে গিয়ে গতকাল রবিবার পুলিশের হাতে আটক হয়েছে জামায়াতের আলেকান্দা সাংগঠনিক কমিটির সেক্রেটারি আবদুর রউফ। জামায়াতে ইসলামীর মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রামের জেলা সংবাদদাতা শাহ আলম। এর আগেই গ্রেপ্তার হয়েছে জামায়াতের মহানগর কমিটি সহ সেক্রেটারি জহির উদ্দীন মোহম্মদ বাবর। রূপাতলীর শাহজাহান মোল্লা ভোরের কাগজকে বলেন, নির্বাচনের মৌসুম হওয়ায় মসজিদে ভোট চাওয়াকে কেউ খারাপ হিসেবে নেয় না। তবে কাজটি ঠিক নয়। কসাইপট্টির বাবুল মিয়া বলেন, হুজুররা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তারা কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করেন না। ভোট চাওয়া ছাড়া ওদের আর কোনো কাম (কাজ) আছে বলে মনে হয় না। চকবাজারের আলতাফ হোসেনের মতে, জামায়াত মাঠে নামলে বরিশালে গন্ডগোল হতে পারে। এতদিনের যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান তা নষ্ট হতে পারে। বরিশালের ইতিহাস গ্রন্থের লেখক ইতিহাসবিদ সিরাজউদ্দীন আহমেদ ভোরের কাগজকে বলেন, বরিশাল হলো স্বাধীনতাবিরোধীদের শক্ত ঘাঁটি। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের শেষ সময়ে নভেম্বর মাসেও এখানে পাকিস্তানের পক্ষে বিশাল মিছিল হয়েছে। সে ধারাবাহিকতা আজো অক্ষুন্ন রয়েছে। বরিশাল সাংস্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সাবেক সভাপতি এড. নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, নগরের ভোটে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন কিংবা বিএনপিও বড় ফ্যাক্টর না। এখানে আওয়ামী লীগের ভোটারই বেশি। তার মতে নগরীর বাইরে বিএনপি ও অন্যান্য দলের ভোট বেশি। বাইরের ভোট থেকেই বিএনপি বারবার নির্বাচিত হয়। কেন্দ্র পাহারা দেবে ইসলামী আন্দোলন : জাল ভোট, ভোট কারচুপি ও কেন্দ্র দখলের মতো কোনো ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করতে তিন স্তরের বলয় তৈরি করে কর্মীর নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসলামী আন্দোলন। প্রথম স্তরটি ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটারদের কেন্দ্রে আসা যাওয়া নিশ্চিত করবে। দ্বিতীয় স্তরের কর্মীরা বুথের ভেতরে জাল ভোট ঠেকানোর দায়িত্বে থাকবে। তৃতীয়ত স্তরে থাকবে ভোট কেন্দ্র দখল ও ভোট কারচুপি পাহারায়। শক্ত এজেন্ট দেবে বিএনপি : বুথের মধ্যে জাল ভোট ঠেকাতে ও গণনার সময়ে ফলাফল পাল্টে ফেলা রোধে প্রতিটি বুথে শক্ত এজেন্ট দেবে বিএনপি। গত শনিবার গভীর রাতে মেয়রপ্রার্থী সরোয়ারের কাউনিয়ার বাসভবনে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান উপস্থিত ছিলেন। প্রয়োজনে ওয়ার্ড সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকরাও এ দায়িত্ব পালন করতে পারেন। এজেন্ট হিসেবে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের দেখা যেতে পারে বুথের মধ্যে। জামায়াত নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App