×

বিনোদন

মঞ্চনাটকে হুমায়ূন আহমেদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০১৮, ০২:১১ পিএম

মঞ্চনাটকে হুমায়ূন আহমেদ
সাহিত্যের নানা শাখায় তাঁর বিচরণ। তবে কথাসাহিত্যিক হিসেবেই পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। আর নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা হিসেবে পেয়েছেন আকাশছোঁয়া তারকাখ্যাতি। তিনি হুমায়ূন আহমেদ। এই সৃজন কারিগর শিল্প-সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও মঞ্চনাটকে সেভাবে সক্রিয় দেখা যায়নি। তবে হুমায়ূন আহমেদের লেখা থেকে মঞ্চ নাটক ঢাকার নাট্যাঙ্গনকে আলোকিত করেছে। গত বছরই হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করে নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায় মঞ্চে আনে তাঁরই লেখা নাটক ‘নৃপতি’। যেখানে লেখক স্বৈরাচার শাসকের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, শাসকদের একনায়কতন্ত্র ও খেয়ালিপনার বিরুদ্ধে তার নিজস্ব সাহিত্যরসে ব্যঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করেছেন। এটি নান্দনিক নাট্য সম্প্রদায়ের অষ্টম প্রযোজনা। নাম ভ‚মিকায় অভিনয় করছেন আ মা মা হাসানুজ্জামান। এ ছাড়া বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নিলুফার ওয়াহিদ, সোহেল রানা, শাহ আলম, অভীক মজুমদার, রনি, মারুফ, মাহিন, শোভা, রাসেল, হাবিবুল্লাহ, রাবিয়া প্রমুখ। অন্যদিকে হুমায়ূন আহমেদের ‘কে কথা কয়’ উপন্যাস অবলম্বনে নতুন নাট্যদল ম্যাড থেটার মঞ্চে আনে নাটক ‘নদ্দিউ নতিম’। মূল উপন্যাস থেকে নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দিয়েছেন আসাদুল ইসলাম। ২০১৫ সালের অক্টোবরে ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের উদ্বোধনী প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে নাট্যদল ‘ম্যাড থেটার’ নাট্যাঙ্গনে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে। নাটকের নির্দেশক আসাদুল ইসলাম জানান, নাটকটি ৩টি বিশেষ কারণে আলোচিত। প্রথমত, বাংলাদেশের মূলধারার থিয়েটারে ‘নদ্দিউ নতিম’ প্রথম নাটক যেখানে একটি শিশু কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছে। দ্বিতীয়ত, এই নাটকে একজন মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুর সত্যবোধকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য একজন কবি নিজেকে মৃত্যুর মুখে সমর্পণ করেন। তৃতীয়ত, এই নাটকে একটি কাল্পনিক পরিবারের গল্প বলা হয় যেটি মঞ্চে অভিনয় করেন তিন সদস্যের একটি বাস্তব পরিবার। তারা হলেন- আসাদুল ইসলাম, সোনিয়া হাসান ও আর্য মেঘদূত। নাটকটির সহযোগী নির্দেশক আনিসুল হক বরুণ, সেট ও লাইট ডিজাইন ফয়েজ জহির, পোশাক সোনিয়া হাসান, আবহসঙ্গীত আর্য মেঘদূত, আলোক নিয়ন্ত্রণে গর্গ আমিন, আরিফ আহমেদ ও আবহসঙ্গীত নিয়ন্ত্রণে রয়েছেন সোহেল খান ও আদর। ‘নদ্দিউ নতিম’ নাটকের কাহিনী মূলত মতিন নামে একজন কবিকে কেন্দ্র করে। যে মনে মনে নিজেকে কল্পনা করে নেয়, সে একজন উজবেক কবি। মতিনের মধ্যে বাস করে অন্য এক মতিন। দিনে দিনে মতিন উদ্দিন হয়ে ওঠে নদ্দিউ নতিম। মতিনের হৃদয়ের সবটুকু দখল করে থাকে সহপাঠিনী নিশু। ভাবের ভেলায় ভেসে বেড়ালেও ভাবাবেগে মতিন ডুবে যায় না, বুঝতে পারে নিশুর মতো স্কলার মেয়ের যোগ্য সে নয়। একদিন মতিনের চোখে পড়ে পত্রিকার পাতায় তিন লাইনের ছোট্ট একটা বিজ্ঞাপন- ‘একজন সার্বক্ষণিক টিউটর প্রয়োজন, টিউটরের সৃজনশীলতা ব্যক্তিগত যোগ্যতা হিসেবে ধরা হবে, বেতন আকর্ষণীয়।’ বেতনের আকর্ষণীয় ক্ষমতায় মতিন তার কবিসত্তাকে সাময়িকভাবে স্তিমিত রেখে কমল নামের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চার শিক্ষক হিসেবে কাজ শুরু করে। মতিনের কর্মকাণ্ড অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু প্রতিবন্ধী বাচ্চাটি কবিকে ভুলতে পারে না। বাচ্চাটিও কবির সঙ্গে কথা বলতে চায়। কিন্তু সে সুযোগ তো আর নেই। কবি চলে গেছে। বাচ্চাটি জিদ ধরে- সে কথা বলবেই বলবে। এক পর্যায়ে সুযোগ হয় কবির সঙ্গে কথা বলার। কমল মতিনকে তার জীবনের একটি গোপনীয় বিষয় জানায়, যার জন্য মতিনকে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়াতে হয়। হাসপাতালের এক হিমশীতল ঘরে শুয়ে তার মনে হয়, যেন অনন্তকাল সে এভাবেই শুয়ে ছিল। কী সেই গোপন বিষয় যার জন্য কবিকে জীবন দিতে হলো? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে হলে দেখতে হবে নাটকটি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App