×

জাতীয়

বিদ্রোহী প্রার্থী সেলিম অনড় দল ছাড়ার হুমকি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুলাই ২০১৮, ১২:২৭ পিএম

শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে লড়ে যাবেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। গতকাল রবিবার সিলেট নগরীর একটি হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত দলের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করবেন। তবুও দল তাকে সমর্থন না দিলে প্রয়োজনে দলত্যাগ করতেও পিছপা হবেন না, তবুও নির্বাচন করবেনই এমন ঘোষণা দিলেন সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। সিলেটে বিএনপি মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন আগেই, সংবাদ সম্মেলনে সেটাই আরো দৃঢ়ভাবে উপস্থাপন করলেন তিনি। সিলেট বিএনপির অনেকেরই ধারণা ছিল দলের চাপে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন সেলিম। কিন্তু গতকালের সংবাদ সম্মেলনে আরিফের বিরুদ্ধে আরো শক্ত অবস্থান ব্যক্ত করলেন তিনি। হাজির করলেন বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আগামী নির্বাচনে তার দৃঢ় অবস্থানের কথা জানিয়ে সেলিম বলেন, সিটি নির্বাচনে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আমি দীর্ঘদিন থেকে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছি এবং দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল, এমনকি এ লক্ষ্যে দলীয় হাইকমান্ড একটি নির্বাচনী সাক্ষাৎকার গ্রহণের ব্যবস্থাও করেছিল। তখন সিলেট থেকে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জনের ৫ জনই আরিফুল হককে মনোনয়ন না দেয়ার জোর দাবি জানান এবং ৫ জনই আমাকে সমর্থন জানান। এমনকি আরিফুল হককে মনোনয়ন না দিতে ৯ মাস আগে মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ২৭টি ওয়ার্ডের নেতাদের সম্মতিতে একটি স্মারকলিপি দলীয় চেয়ারপারসন, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের কাছে পাঠানোর পরও অজ্ঞাত কারণে দলের নেতাকর্মী বিচ্ছিন্ন একজনকে মনোনয়ন দিয়ে আমার প্রতি অবিচার করা হয়েছে, যা দলের তৃণমূল নেতাকর্মীসহ অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। এ সময় তিনি আরিফের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে বলেন, আরিফুল হক তার হলফনামায় ‘স্বশিক্ষিত’ বলে তথ্য গোপন করেছেন। কেননা ১৯৮২ সালে তৎকালীন এমসি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ এবং বর্তমান সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে আরিফ-সেলিম পরিষদ থেকে তিনি ভিপি পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। একজন মানুষ মাধ্যমিক শেষ না করে কীভাবে একটি কলেজে যান? মহানগর বিএনপির এ সাধারণ সম্পাদক জানান, আরিফুল হককে কেন্দ্র মনোনয়ন দিলেও স্থানীয় নেতারা তাকে মেনে নেয়নি, যার প্রমাণ কয়েক দিন আগে আরিফের সমর্থনে কর্মিসভায় মিলেছে। আরিফের সমর্থনে এ কর্মিসভায় মহানগর বিএনপির মোট ২৩২ জন নেতা এবং প্রতি ওয়ার্ডে ১০ জন করে নেতাকর্মীকে আমন্ত্রণ জানানোর পরও সেদিন মাত্র ৪৭ জন নেতাকর্মী উপস্থিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া সিলেট বিএনপির আরেক নেতা কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি শামসুজ্জামান জামান তার অনুসারীদের নিয়ে আরিফকে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং তার ওয়ার্ডে কোনো এজেন্ট ঢুকতে দেবেন না বলেও গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সিলেটের সাবেক দুই মেয়র বদরউদ্দিন কামরান ও আরিফুল হকের হলফনামার তথ্য উল্লেখ করে বলেন, সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরান ও সদ্য সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সহধর্মিণীরা এত সম্পত্তির মালিক হলেন কোন জাদুর মন্ত্রে? তারা কি কোনো আলাদিনের চেরাগ পেয়েছেন? তাহলে কি মেয়র পদটি টাকা কামানোর মেশিন? তাদের দুজনের মেয়র হওয়ার আগের আয়কর ফাইলের বিবরণী নগরবাসী জানতে চায়। এ সময় তিনি কেন্দ্রের সমর্থন না পেলেও নির্বাচনে অংশ নেবেন জানিয়ে বলেন, আমি আশা করি দলীয় নেতাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং আরিফুল হক চৌধুরীর মনোনয়ন বাতিল করে তারা আমাকে সমর্থন করবেন। তিনি আরো বলেন, আমি কেন্দ্রকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছি তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য, অন্যথায় কেন্দ্র যদি আমার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে চায়, নিতে পারে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App