×

মুক্তচিন্তা

এই দুর্ভোগ-দুর্দশার শেষ কোথায়?

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ৩০ জুন ২০১৮, ০৬:৩৭ পিএম

পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক পাম্প বসানো, নর্দমা, কালভার্ট এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজধানীর খালগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম। রাজধানীর খালগুলো উদ্ধারে কর্তৃপক্ষকে আরো সোচ্চার হতে হবে।

‘নগরে বারো মাসই পানিবন্দি জীবন’ এই শিরোনামে গতকাল ভোরের কাগজে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে। শিরোনামটি দেখে আশ্চর্য লাগলেও এটাই বাস্তবতা। বৃষ্টি হলে নগরবাসীর জীবনে দুর্ভোগ-দুর্দশা আরো দ্বিগুণ হয়ে ওঠে। এই অবস্থা থেকে মুক্তির কোনো উপায় যেন মিলছে না। জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে চলছে নানা অব্যবস্থাপনাও। নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সেবাদানকারী সংস্থা কেউ দায় নিতে নারাজ। দিনদিন এই অবস্থা রাজধানীবাসীর জন্য উদ্বেগ ছাড়া আর কিছু নয়।

জলাবদ্ধতা নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি কম হয়নি। সরকারের নানামুখী উদ্যোগ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পরামর্শ কোনোটাই যেন কাজে আসছে না। গতকাল ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহানগরীর মাতুয়াইল ইউনিয়নের বিশাল এলাকাজুড়ে সারাবছর ধরে লেগে থাকে জলাবদ্ধতা। খাল দখল, ভরাট ও আবর্জনা জমে ড্রেনেজ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়ায় এসব এলাকায় পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। হালকা বৃষ্টিতেই দেখা দেয় ভয়াবহ জলাবদ্ধতা। আরো ভয়ঙ্কর খবর হচ্ছে, বছরজুড়ে জলাবদ্ধতার কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। ঘরে-বাইরে নোংরা পানি জমে থাকায় দেখা দিয়েছে মশার উপদ্রব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে নজর দিতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, পানি নিষ্কাশনের কোনো জায়গা না থাকার কারণেই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। রাজধানীর যে খালগুলো ছিল সেগুলো ভরাট ও দখল হওয়ার পাশাপাশি আশপাশের নদীগুলোও ভরাট হয়ে গেছে। তাহলে এ পানিগুলো যাবে কোথায়? ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। আশার বিষয়, ডিএনডি বাঁধ এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে পানি উন্নয়ন বোর্ড ‘ডিএনডি নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন (ফ্রেজ-২)’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ চলছে। এতে বেদখল খালগুলো উদ্ধার করে সেগুলো খনন করা হচ্ছে। আর নতুন করে যেন খালগুলো কেউ দখল করতে না পারে, সে জন্য দুই পাড় বাঁধাই করে দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ইসলামপুর, শনির আখড়া ও বিশ্বরোড এলাকায় খাল উন্নয়নে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ডিএনডি এলাকায় জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দাবি করছেন। আমরাও তাদের কথায় আশান্বিত হতে চাই। এ ছাড়া নগরীর অন্যান্য এলাকায় কৃত্রিমভাবে ওয়াসা ও সিটি কাপোরেশনের যে ড্রেনগুলো আছে সেগুলো সঠিকভাবে মেরামত করতে পারলে কিছুটা জলাবদ্ধতা থেকে লাঘব পাওয়া যাবে। আন্ডারগ্রাউন্ড ও উপরিভাগে যে ড্রেনগুলো আছে সেগুলো রয়েছে পৃথকভাবে ঢাকা ওয়াসা ও সিটি করপোরেশনের অধীনে। এ দুই প্রতিষ্ঠানের কাজে অনেক সময় সমন্বয় হয় না। একে অন্যের ঘাড়ে দায় চাপানোর প্রবণতা দেখা যায়। এই সমন্বয়হীনতা দূর করা জরুরি। এই ড্রেনেজ সিস্টেম মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ একক কর্তৃত্বে আনার বিশেষজ্ঞদের সুপারিশ গুরুত্বসহ বিবেচনা করা প্রয়োজন। পানি নিষ্কাশনের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক পাম্প বসানো, নর্দমা, কালভার্ট এবং পানি নিষ্কাশনের খালগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে হবে। জলাবদ্ধতা নিরসনে রাজধানীর খালগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখতে সক্ষম। রাজধানীর খালগুলো উদ্ধারে কর্তৃপক্ষকে আরো সোচ্চার হতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App