দারুস সালামে জব্দকৃত গাড়ির দখলে খেলার মাঠ ও সড়ক
ইমরান রহমান
প্রকাশ: ২৬ জুন ২০১৮, ১২:১৮ পিএম
থানার সামনের রাস্তার প্রায় অর্ধেকটা দখল করে রাখা হয়েছে বিভিন্ন মামলায় জব্দকৃত গাড়ি। শুধু তাই নয়, দখল করা হয়েছে ৯ নম্বর ওয়ার্ড ঈদগা মাঠও। যেখানে প্রতিদিন খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে স্থানীয় কিশোর-যুবকরা। দীর্ঘদিন খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে বৃষ্টি-কাদায় মাখামাখি হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে যেতে শুরু করেছে গাড়িগুলো। অথচ এগুলোকে মাঠ থেকে সরানোর কোনো উদ্যোগ নেই। উল্টো মাঠটিতে দিন দিন বেড়েই চলেছে গাড়ির বোঝা। সড়কেও দীর্ঘতর হচ্ছে জব্দকৃত গাড়ির সারি। এদিকে দারুস সালাম থানারও নেই নিজস্ব ভবন। একটি আবাসিক ভবন ভাড়া নিয়ে কোনো রকমে চালানো হচ্ছে কার্যক্রম। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বেশ কিছু সমস্যা থাকলেও এ থানার সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো জনবল সংকট। তাদের মতে, রাজধানীর অন্যতম প্রবেশমুখ গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এ থানার আওয়াতাধীন। এ থানা এলাকায় রয়েছে নদীর পাড়ও। ফলে মাদকসহ যে কোনো অবৈধ জিনিস এ রুট দিয়ে আসার প্রবণতা বেশি থাকে। ফলে সব সময় সতর্ক অবস্থানে থাকতে হয় থানা পুলিশকে। কিন্তু এ জন্য যে জনবল প্রয়োজন তা নেই।
দারুস সালাম থানার ওসি সেলিমুজ্জামান ভোরের কাগজকে বলেন, নিজস্ব ভবন না থাকায় অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। জব্দকৃত আলামত রাখার জায়গা না থাকায় বিনা নিরাপত্তায় গাড়ি রেখে দিতে হচ্ছে। এর বাইরে আবাসিক সমস্যাটাও প্রকট। থানার নিজস্ব ভবন থাকলে এ সমস্যাগুলো থাকত না।
থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. ফারুকুল আলম ভোরের কাগজকে বলেন, রাজধানীর বর্ডার থানা হওয়ায় আমাদের চ্যালেঞ্জ বেশি। মাদকসহ সব অবৈধ জিনিসের প্রবেশ ঠেকাতে আমরা সচেষ্ট থাকি। তবে মাদকের আখড়া হওয়ায় আমিনবাজার বস্তি নিয়ে আমাদের ঝামেলা পোহাতে হয়।
গত শনিবার সরেজমিন দেখা যায়, থানায় ঢুকতে হলে আগে রাজি করাতে হয় কর্তব্যরত সেন্ট্রিকে। তার সম্মতি ছাড়া কেউ থানার ভেতর প্রবেশ করতে পারেন না। ওই দিন দুপুরে ২ যুবক ও ১ নারী কোনো একটি বিষয় নিয়ে থানায় আসেন। কিন্তু কর্তব্যরত সেন্ট্রি তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে না দিয়ে ফাঁড়ি পুলিশের কাছে পাঠিয়ে দেয়। থানার গেট থেকেই রিকশায় উঠে চলে যাওয়ায় তাদের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। সন্ধ্যার পর ভেতরে ঢোকার আশায় অনেককে থানার গেটের বাইরে অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
কর্মকর্তারা জানান, রাজধানীর দিয়াবাড়ী, গোলারটেক, লালকুঠি, কোটবাড়ী, বাগবাড়ী, গাবতলী, মাজাররোড দক্ষিণ মাথা, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল, টোলারবাগ, বাঙলা কলেজ, বিশিল ও শাহআলী মাজার এলাকা নিয়ে থানাটি গঠিত। এ থানায় ১ জন ইন্সপেক্টর ইনচার্জ (ওসি), ২ জন ইন্সপেক্টর, ২৩ জন এসআই, ৩৮ জন এএসআই ও ৪৬ জন কনস্টেবল রয়েছেন। থানাটিতে প্রতি মাসে ৩৫-৪০টি মামলা হয়। যার বেশির ভাগই মাদক ও প্রতারণা সংশ্লিষ্ট।