×

জাতীয়

ভোটারে আস্থা জাহাঙ্গীরের, সেনা মোতায়েন চান হাসান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০১৮, ১২:২৪ পিএম

ভোটারে আস্থা জাহাঙ্গীরের, সেনা মোতায়েন চান হাসান

প্রচারণার সময় কম, তাই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই নির্বাচনী মাঠে নেমে পড়েন মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। গণসংযোগ, পথসভার মাধ্যমে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন তারা। এ সময় আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম তার ব্যাপারে বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, বিএনপি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বেকায়দায় ফেলতে মিথ্যাচার করছে। তবে ভোটারদের উপর আমার আস্থা আছে। আর বিএনপি প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হওয়ার ব্যাপারে আশঙ্কা প্রকাশ করে সেনা মোতায়েনের দাবি তুলেছেন। এ দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলছেন, নির্বাচন অবাধ করার লক্ষ্যে তাদের পূর্ণ প্রস্তুতি রয়েছে। ২০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েনসহ পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নির্বাচনী মাঠে কাজ করবে। এ ছাড়া ভোটগ্রহণের জন্য ৯ হাজার সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম গতকাল ১৫টি পথসভায় বক্তব্য রাখেন। সকাল ১০টায় ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে পথসভার মাধ্যমে তার গণসংযোগ শুরু হয়। দুপুরে ২ নম্বর ওয়ার্ড লোহা আলীর মাজারে জোহরের নামাজ আদায় করেন তিনি। পরে সেখানে আয়োজিত পথসভায় জাহাঙ্গীর আলম অভিযোগ করেন, বিএনপি প্রার্থী সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে বেকায়দায় ফেলার জন্য, প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য মামলা, হামলার কথা বলছে। নির্বাচনের সময় কারো বিরুদ্ধে মামলা হয়নি, তারা জানমালের ক্ষতি ও গাড়ি ভাঙচুরের যে কর্মকাণ্ড করেছিল সে সময়ের মামলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভোটারদের উপর আমার আস্থা আছে। আমি বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচনে তারা সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণভাবে আমাকে এবং নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন।

দুপুরে ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কালেরভিটায় জাহাঙ্গীরের পথসভায় যাগ দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খান। পরে তিনি ৭, ৮, ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের পথসভায়ও বক্তব্য রাখেন। আজমত উল্লা খান বলেন, জাহাঙ্গীর আলম একজন ভালো মানুষ। আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিন। আপনাদের ভোট বিফলে যাবে না। তিনি জননেত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় একটি পরিকল্পিত নগর উপহার দিতে পারবেন।

অন্যদিকে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী মুক্তিযোদ্ধা হাসান উদ্দিন সরকার গতকাল নগরীর গাছা অঞ্চলের ৩২, ৩৩, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইশড্ডা, জাঝর, অ্যারাবিয়ান গার্মেন্ট, বটতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় এবং বিকেলে টঙ্গী এলাকার টিএন্ডটি, শিলমুন, মরকুনসহ সংলগ্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন। পথসভায় হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সেনা মোতায়েন করতে হবে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী দেশের সব কাজে লাগতে পারলে নির্বাচনে কেন অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী অতিরিক্ত মাত্রায় ওয়াদা দিচ্ছেন। তিনি ডাবল রেললাইন ও চলমান বিআরটিসহ জাতীয় প্রকল্পগুলোকে স্থানীয় সরকারের প্রকল্প হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছেন। স্থানীয় সরকারের ক্ষমতা, পরিধি ও স্থানীয় সরকার আইন সম্পর্কে ন্যূনতম ধারণা থাকলে তিনি এসব ওয়াদা দিতেন না।

বিকেলে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের হারিনাল এলাকায় হাসান সরকারের পক্ষে গণসংযোগ ও পথসভা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, শামা ওবায়েদসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা। এ ছাড়া কাউলতিয়া অঞ্চলে গণসংযোগ করেন বিএনপির শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভ‚ইয়া, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে এডভোকেট রফিক শিকদার, ১ নম্বর ওয়ার্ডে গৌতম চক্রবর্তী, ২ নম্বর ওয়ার্ডে আবুল কালাম আজাদসহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় নেতা বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।নজরুল ইসলাম খান বলেন, খুলনা ও গাজীপুর এক নয়। গাজীপুরের বীর জনতা বারবার ইতিহাস রচনা করেছেন। আসন্ন মেয়র নির্বাচনেও গাজীপুরবাসী ধানের শীষকে বিজয়ী করে ইতিহাস রচনা করবেন। খুলনার মতো কারচুপি গাজীপুরে করলে ক্ষমতাসীনদের শিকড়ে নাড়া লাগবে।

এদিকে নির্বাচনকে সামনে রেখে দফায় দফায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল। তিনি জানান, বুধবার (আজ) প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও চারজন কমিশনার গাজীপুরে আলাদা দুটি মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন। বেলা ১১টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে এবং বিকেল ৩টায় প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ কেউ করলে সেগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে রকিব উদ্দিন মণ্ডল বলেন, নির্বাচনে ৪২৫ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে বিভিন্ন বিবেচনায় ৩৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। এ ছাড়া ২০ প্লাটুন বিজিবি, ৫৮টি র‌্যাবের টিমসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কাজ করবে। এবার ৬টি কেন্দ্রে ইভিএম ও দুটি কেন্দ্রে সিসিটিভি বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে দুটি কেন্দ্রে সিসিটিভি থাকবে সেই কেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশন সরাসরি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন এবং সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশনা দিতে পারবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App