বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের ‘নিয়মতান্ত্রিক’ কর্মসূচিতে পরিবর্তন আনবে বিএনপি। আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ দলের সিদ্ধান্তের কথা জানান।

মওদুদ বলেন, ‘আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী অবস্থায় আছেন। আমাদের কাছে তিনটি বিষয় মুখ্য। প্রথমত বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা এবং তার জন্য প্রয়োজন হলে যে আন্দোলনের কর্মসূচি আমরা এতদিন দিয়ে এসেছি সেটা আমাদের পরিবর্তন করতে হবে। এমন কর্মসূচি দিতে হবে যে কর্মসূচি কার্যকর কর্মসূচি হবে, যার মাধ্যমে আমরা তাকে মুক্ত করে আনতে পারব।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, আগামীতে এমন একটি আন্দোলন সৃষ্টি করা হবে যেই আন্দোলন শুধু ওই নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো স্বৈরাচারী সরকারকে পৃথিবীর কোথাও অপসারন করা সম্ভবপর হয়নি। সুতরাং এ দেশেও এটা সম্ভবপর হবে না। এই উপলব্ধি থেকে উপযুক্ত সময়ে উপযুক্ত কর্মসূচি দেওয়া হবে, সেই কর্মসূচি সফল হবে এবং দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

খালেদার মুক্তি আন্দোলন ছাড়াও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে জাতীয় ঐক্য ও নির্দলয়ীয় সরকাররের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘তারা (সরকার) বিএনপিকে মাঠে নামতে দেবে না, রাস্তায় নামতে দেওয়া দেবে না। এটাই তাদের উদ্দেশ্য। আমরা বলতে চাই, এর জবাব আমরা ইনশাল্লাহ দেব। আর অল্প কিছু দিন অপেক্ষা করতে হবে। যে ধরনের আন্দোলনে অতীতে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হয়েছে ১৯৬৯ সালে এবং ১৯৯০ সালে। সেই ধরনের আন্দোলনই বাংলাদেশে হবে।’

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঈদের দিন নোয়াখালীতের নিজের বাড়িতে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়টি প্রতিবাদ জানাতে বৃহত্তর নোয়াখালীর নেতারা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনের বৃহত্তর নোয়াখালীর সাবেক সাংসদ বরকতউল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, মাহবুব উদ্দিন খোকন, এ বি এম আশারাফ উদ্দিন নিজান, রেহানা আখতার রানু, নাজিম উদ্দিন আহমেদ বক্তব্য দেন।

এ সময় বক্তারা বলেন, বৃহত্তর নোয়াখালী বিএনপির দুর্গ। আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একটি আসনও পাবে না। ঈদের দিন বর্ষিয়ান নেতা মওদুদ আহমদকে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রেখেছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশেই। আমরা এহেন ঘটনার নিন্দা জানাচ্ছি। রাজনীতির সহবস্থানের যে ঐহিত্য তিনি সেখানে বিনষ্ট করে দিয়েছেন।

ঈদের দিনের দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে না দেওয়া, বড় মসজিদের ঈদের জামায়াতে পড়তে না দেওয়ান ঘটনা তুলে ধরে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘আমাকে কোনো ইফতার পার্টিতে যেতে দেওয়া হয়নি, সব ইফতার পার্টি পুলিশ নিষিদ্ধ করে দিয়েছিল। পুলিশ আমাকে বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল। আমার বাড়ির সামনে পুলিশ একটি ট্রাক আড়াআড়ি করে রেখে দিয়েছিল।’

মওদুদ বলেন, ‘আজকে ওবায়দুল কাদেরের পায়ের নিচে মাটি নেই। তিনি এখন মিথ্যা কথা বলছেন। ঈদের দিনের ঘটনার পেছনে ওবায়দুল কাদেরই দায়ী। পুলিশই আমাকে বলেছে যে স্যার আমাদের কোনো দোষ দিয়েন না। আমরা উপরের হুকুমে করছি। এই ঘটনা যে তারা ঘটিয়েছেন এটা শুধু আমরা নই, বৃহত্তর নোয়াখালীর সাধারণ মানুষের বক্তব্য যে এটা তারই (ওবায়দুল কাদের) নির্দেশে করা হয়েছে।’