×

জাতীয়

উইনিং প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২০ জুন ২০১৮, ১২:৫৯ পিএম

উইনিং প্রার্থী দেবে আওয়ামী লীগ
সিটি করপোরেশন নির্বাচন ঘিরে সিলেট, রাজশাহী ও বরিশালের রাজনীতি এখন সরগরম। কে পাচ্ছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনয়ন- এ নিয়ে চায়ের টেবিলে ঝড় বইছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর বাইরে কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে কারা দলের সমর্থন পাচ্ছেন তা-ও আসছে আলোচনায়। ৩০ জুলাই এই তিন সিটির নির্বাচনে আওয়ামী লীগ চায় দুর্গ পুনরুদ্ধার করতে। আর বিএনপি চায় দুর্গ অক্ষত রেখে সরকারের ওপর জনগণ আস্থা হারিয়েছে এমন প্রচারণা চালাতে। সার্বিক বিবেচনায় নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বাছাইয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছে। সাংগঠনিক রিপোর্ট, দেশি-বিদেশি সংস্থা দিয়ে করানো জরিপ এবং একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট সমন্বয় করে মেয়র পদে প্রার্থী বাছাই করতে যাচ্ছে দলটি। আওয়ামী লীগের সেন্টার ফর রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ (সিআরআই) এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত তিন সিটিতে আওয়ামী লীগের প্রায় এক ডজন সম্ভাব্য মেয়রপ্রার্থীর নাম আলোচনায় থাকলেও হাইকমান্ড থেকে ‘দুজন’ সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে চাউর রয়েছে। তবে সম্ভাব্যরা কেউই এখনো হাল ছাড়েননি। যারা মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন তারা দলে পদোন্নতি বা সংসদ নির্বাচন করার সুযোগ পাবেন, এমন আশায় অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী মরিয়া হয়ে এখনো মাঠ দাবড়াচ্ছেন। কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে নানা মাধ্যমে তারা চেষ্টা-তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। অনেকেই দলের সভানেত্রীর কাছে নিজের ইচ্ছার বার্তা পৌঁছে দিতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছেন। ধর্না দিচ্ছেন প্রবাসী নেতাকর্মী এবং বিদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের কাছেও। আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক সাবেক সচিব রাশিদুল আলম বলেছেন, আওয়ামী লীগ বৃহৎ দল। এই দলে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী রয়েছেন। অনেকেই কেন্দ্র থেকে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করছেন। সবদিকের তথ্য নিয়ে ‘উইনেবল প্রার্থী’ মনোনয়ন দেয়া হবে। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতা না থাকলে রাজনীতি জমে না। একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও দলের সিদ্ধান্ত মেনে সবাই দল মনোনীত প্রার্থীর হয়ে কাজ করবেন। পুরো বিষয়টি কেন্দ্র থেকে পৃথক টিম করে দিয়ে মনিটরিং করা হবে। সূত্র মতে, ঢাকার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে ১৮ জুন মেয়র পদে সম্ভাব্যদের কাছে মনোনয়ন ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। তিন সিটির প্রায় ডজন খানেক সম্ভাব্য প্রার্থী দলের ফরম সংগ্রহ করেছেন। ২২ জুন দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভায় প্রার্র্থী চ‚ড়ান্ত করা হবে। ২৩ জুন সকালে গণভবনে অনুষ্ঠিত বর্ধিতসভায় দলের নেতাকর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে তিন মহানগর থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী অন্তত ৫ জনের নাম কেন্দ্রে পাঠাতে বলা হয়েছে। সিলেট থেকে ৫ জন, বরিশাল থেকে চারজন এবং রাজশাহী থেকে একজনের নাম কেন্দ্রে এসেছে বলে জানা গেছে। দলীয় সূত্র জানায়, ১৮ জুন সোমবার দুপুরে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভায় সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন চাওয়া ৫ প্রার্থীর নাম কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরপর রাতের মধ্যেই পাঁচ মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। সিলেটে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের ৫ মনোনয়ন প্রত্যাশী হলে- সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল আনোয়ার আলোয়ার, অধ্যাপক জাকির হোসেন এবং সিলেট সিটি করপোরেশনের ২১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, আগামী ২২ জুন মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠকে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত থাকবেন। সেখানেই সিদ্ধান্ত হবে কে হচ্ছেন মেয়রপ্রার্থী। ওই বৈঠকে সিলেট আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতাদের উপস্থিত থাকার জন্য কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হচ্ছেন- জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) জাহিদ ফারুক শামীম, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, মাহবুব উদ্দিন বীরবিক্রম ও মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন। এদের মধ্যে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর ছেলে। বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। তবে প্রার্থী নিয়ে খোঁজখবর নিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমানকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রাজশাহী সিটি করপোরেশনে সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ছাড়াও মহানগর সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার আগ্রহী ছিলেন। কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ করে সাড়া না পেয়ে তিনি এখন লিটনের পক্ষেই মাঠে নেমেছেন। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানককে রাজশাহীর প্রার্থী সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App