×

বিনোদন

সুপার ভিলেন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুন ২০১৮, ০৩:২৯ পিএম

সুপার ভিলেন
সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে অ্যাভেঞ্জার্স : ইনফিনিটি ওয়ার। নিঃসন্দেহে মুভির সবচেয়ে বড় উল্লেখযোগ্য দিক ছিল থ্যানোস। একজন সুপার ভিলেনের অভিনয় এমনই হওয়া উচিত। এসব মানুষ সমাজকে অচল এবং পৃথিবীকে ধ্বংস করে দেয়ার যে পরিকল্পনা করে থাকেন তা দেখে দর্শকরা মোহাবিষ্ট হয়ে পড়েন। জেনে নিন সুপার ভিলেন চরিত্রে এমন অসাধারণ ৫টি অভিনয় পারফরমেন্সের কথা জোকার চরিত্রে হিথ লেজার জোকার চরিত্রে লেজারের আগে অভিনয় করেছিলেন আরো তিনজন। ষাটের দশকের টিভি সিরিজে সিজার রোমেরো, টিম বাররটনের ১৯৮৯ সালের ঞযব ইধঃসধহ মুভিতে জ্যাক নিকোলসন এবং নব্বইয়ের দশকে ইধঃসধহ ঞযব অহরসধঃবফ ঝবৎরবং এ মার্ক হ্যামিল। তারা প্রত্যেকেই অভিনয়ের সময় জোর দিয়েছিলেন জোকার চরিত্রের কমিক্যাল দিকগুলোতে। কিন্তু মেথড অ্যাক্টর হিথ লেজার যখন চরিত্রটি নিয়ে কাজ করেন তখন তিনি চেষ্টা করেছেন জোকার চরিত্রের এমন সব দিক ফুটিয়ে তুলতে যা পর্দায় আগে কখনো দেখা যায়নি। তার অভিনয়কৃত জোকারকে দেখে মনে হয়েছে কমিক বইয়ের পাতা নয় বরং বাস্তব দুনিয়ার কোনো এক গলি থেকে উঠে আসা এক ভিলেনকে দেখছে সবাই। মানসিক বিকারগ্রস্ত এক সন্ত্রাসী যে নিছকই উপভোগের জন্য পুরো শহরজুড়ে হত্যালীলায় মেতে ওঠে। ছোট মাপের হত্যা হোক বা বড় মাপের দাঙ্গা, সবই তার কাছে কেবলই খেলা। বিশৃঙ্খলায় বিশ্বাসী জোকার দেখাতে চায় যে, সমাজে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং বিচার ব্যবস্থা আছে কেবলই একটি কৌতুক হিসেবে। সহানুভ‚তির লেশমাত্র না থাকা এই জোকার চরিত্রে অভিনয়ের পর অসুস্থ হয়ে পড়েন লেজার। ছবি মুক্তির আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। জোকার চরিত্রে অভিনয়ের জন্য ২০০৯ সালের অস্কারে সেরা সহঅভিনেতা ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান তিনি। ম্যাগনেটো চরিত্রে স্যার ইয়ান ম্যাকক্যালেন কমিক ইতিহাসের অন্য কোনো সুপার ভিলেনের ইতিহাস যেন ম্যাগনেটোর মতো নয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকায় নিজের পরিবারের সবাইকে হারানোর পর সে জানতে পারে যে, সে আর দশজনের মতো হোমো সেপিয়েন নয়। বরং এক্স জিন বাহক মিউট্যান্ট। মাস্টার অব ম্যাগনেটিজম নামে পরিচিত ম্যাগনেটোর উদ্দেশ্য আর দশজন ভিলেনের মতো ক্ষমতা বা অর্থের মোহ নয়। বরং স্বজাতি মিউট্যান্টদের সাধারণ মানুষের হাত থেকে বাঁচাতেই মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে সে। তার দাবি, মানুষ কখনো মিউট্যান্টদের শান্তিপূর্ণভাবে থাকতে দেবে না। অন্যদিকে তার চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী এক্সম্যানদের নেতা প্রফেসর এক্স চান শান্তিপূর্ণ সমাধান। চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী হলেও প্রফেসর এক্সের জন্য রয়েছে অসীম শ্রদ্ধা; আর মাল্টি ডিমেনশনাল চরিত্রের সবগুলো দিকই ফুটিয়ে তুলেছেন শক্তিমান অভিনেতা স্যার ইয়ান ম্যাকক্যালেন। ডক্টর অক্টোপাস চরিত্রে আলফ্রেড মলিনা স্যাম রেইমির স্পাইডার ম্যান ট্রিলজির সেরা মুভি বলা হয় এটিকে। তার কৃতিত্বের অনেকাংশই দেয়া যায় বিবেকের তাড়নায় দ্বিধাভক্ত হওয়া জিনিয়াস ভিলেন ডক্টর অক্টোপাস চরিত্রে মলিনার অভিনয়কে। শুরুতে ডক্টর অটো অক্টেভিয়াস ছিলেন দেশ সেরা একজন বিজ্ঞানী যিনি কিনা আবার ছিলেন পিটার পার্কারের শিক্ষক। কিন্তু এক বৈজ্ঞানিক এক্সপেরিমেন্টের দুর্ঘটনায় প্রাণ প্রিয় স্ত্রীকে হারান তিনি। সেই সঙ্গে তার মস্তিষ্কের অনেকাংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় এক হালি মেকানিক্যাল হাত। এই দুইয়ের মিশেলে সমস্ত শহর ধ্বংস করে দিতে মত্ত হয়ে ওঠেন। মুভির শুরুর দিকে এই ভিলেনকে দেখে গা শিউরে ওঠে। কিন্তু ধীরে ধীরে দর্শক যখন তার দৃষ্টিকোণ থেকে সম্পূর্ণ ব্যাপারটি দেখেন, তখন তার প্রতি জাগে সহানূভ‚তি এবং সহমর্মিতা। আর এই পুরো ব্যাপারটা পর্দায় ফুটিয়ে তোলার কৃতিত্ব আলফ্রেড মলিনার। লকি চরিত্রে টম হিডলস্টোন গড অব মিসচিফ বা দুষ্টুমির দেবতা হিসেবে নর্ডিক মিথোলজিতে পরিচিত লকি। থরের সৎভাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ অভিনেতা টম হিডলস্টোন। আবেগপ্রবণ, খেপাটে, আনপ্রেডিক্টবলÑ তার অভিনয় সম্পর্কে যাই বলা হোক কম হয়ে যাবে। উচ্ছৃঙ্খল গরিমায় পূর্ণ চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন Thor (2011), Avengers (2012), Thor: Dark World (2013), Thor : Ragnarok (2017) Ges Avengers: Infinity War (2018) মুভিগুলোতে। হিডলস্টোনের লকি এমন এক চরিত্র যা আপনাকে মোহাবিষ্ট করে রাখবে। হাস্যকর, ভয়ঙ্কর, উন্মত্ত, ক্ষমতার জন্য মরিয়া। এগুলো হলো তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। অসাধারণ ভঙ্গিমায় বলা ডায়লগগুলো থেকেই তার বেপরোয়াভাবের পরিচয় অনেকটাই পাওয়া যায়। একজন দেবতা হিসেবে বিশৃঙ্খলার প্রতি যে ভালোবাসা এবং সেই বিশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার কীর্তিকলাপ দেখলে ঘৃণা নয়, বরং ভালোবাসা জন্মায়। লেক্স লুথার চরিত্রে জিন হ্যাকম্যান সুপারম্যানের চিরপ্রতিদ্ব›দ্বী এই টাক মাথার অসাধারণ বুদ্ধিমত্তার ব্যবসায়ী লোকটি একজন মেগালোম্যানিয়াক। যার প্রধান চিন্তা কীভাবে নিজের ক্ষমতা এবং সম্পদ বৃদ্ধি করা যায়। জিন হ্যাকম্যান চরিত্রটিকে ফুটিয়ে তুলেছেন অসাধারণ নৈপুণ্যে যার অতিসাবধানী এবং নিষ্ঠুর চরিত্র ক্রিস্টোফার রিভের সদা হাস্যোজ্জ্বল সুপারম্যানের সম্পূর্ণ বিপরীত। বুদ্ধি এবং খলের মিশেলে তৈরি হ্যাকম্যানের লুথার চরিত্রটি পরবর্তী সময়ে একটি বেঞ্চমার্ক প্রতিষ্ঠা করে। Superman Returns মুভিতে কেভিন স্পেসি এবং হালের Batman vs Superman ছবিতে জেসি আইসেনবার্গ লুথার চরিত্রটিকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলেন। তবে তারা কেউই হ্যাকম্যানের ধারে কাছে যেতে পারেননি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App