×

জাতীয়

খুলনার অভিজ্ঞতায় ৪ সিটি নির্বাচনের ছক আ.লীগের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০১৮, ১২:২৩ পিএম

খুলনার অভিজ্ঞতায় ৪ সিটি নির্বাচনের ছক আ.লীগের
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে এবার গাজীপুর, বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেটে জয় চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ লক্ষ্যে দলের হাইকমান্ড থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দ্রুত তৎপর হয়ে উঠেছেন সংশ্লিষ্ট নেতারাও। অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলো নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে বলা হয়েছে স্থানীয় নেতাদের। তাদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করছেন দলের শীর্ষ নেতারা। নির্বাচনের সার্বিক মনিটরিং করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইতোমধ্যে তিনি ঐক্যবদ্ধ প্রচারণা ও উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরতে কেন্দ্রীয় ও সিটি এলাকার নেতাদের নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এসব এলাকায় জনসভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নিজেই। এ সময় বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পও উদ্বোধন করেন তিনি। আগামী ২৬ জুন গাজীপুর এবং ৩০ জুলাই বরিশাল, রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। খুলনার মতো এ চার সিটিতেও জয়ের বিকল্প ভাবছে না দলটি। এসব নির্বাচনে জয়ের জন্য কী কৌশল নিচ্ছে আওয়ামী লীগ? জানতে চাইলে দলটির সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক ভোরের কাগজকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে ৫ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দলীয়ভাবে এসব নির্বাচনকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছি আমরা। কেননা এই নির্বাচনের ফলাফল জাতীয় নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে। ইতোমধ্যে খুলনা সিটি নির্বাচনে আমাদের প্রার্থী বিশাল ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন। আমাদের বিশ্বাস আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকি, তাহলে আগামী নির্বাচনে সবকটি সিটিতে বিজয়ী হব। শুধু তাই নয়, প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্লিন ইমেজের ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য, যারা এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে সক্ষম এমন প্রার্থীকে আমরা মনোনয়ন দেব। দলটির একাধিক সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের হেভিওয়েট প্রার্থী এ কে এম শামীম ওসমান থাকলেও সেখানে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে নৌকা প্রতীকে মেয়র পদে মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। কারণ সর্বস্তরের মানুষের কাছে আইভীর আলাদা গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। দলীয় সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করে বিপুল ভোটে জয়ী হন আইভী। কিন্তু রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রয়াত শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু খুব একটা শক্তিশালী প্রার্থী ছিলেন না। যার ফলে সেখানে আওয়ামী লীগকে হারতে হয়েছে। আর কুমিল্লায় আঞ্জুম সুলতানা সীমা যোগ্য প্রার্থী হলেও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের অনৈক্যের কারণেই তাকে বিজয়ী করা সম্ভব হয়নি। আবার খুলনা নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি করণীয় সফলভাবে এগিয়ে নিতে সক্ষম হয় আওয়ামী লীগ। তালুকদার আবদুল খালেকই ছিলেন এখানে যোগ্যতম প্রার্থী। তার ভোটের প্রচারণায় দলীয় নেতাকর্মীরা ছিলেন ঐক্যবদ্ধ ও স্বতঃস্ফ‚র্ত। সরকারের উন্নয়নের মন্ত্রও জপেছেন সঠিকভাবে। আর ফলও মিলেছে আশানুরূপ। সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় রেখেই এবার চার সিটিতে বিজয়ের টার্গেট নিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ জন্য প্রার্থী নির্বাচনে সতর্কতা, দলের ঐক্য ও সরকারের উন্নয়ন প্রচারের ওপর সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। বিতর্কিত প্রার্থীদের মনোনয়ন না দেয়ারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া দলের নেতাকর্মীদের কোন্দল যেন না থাকে, সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে। কোন্দল মেটাতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছেন স্ব স্ব বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকরা। সবকিছু মনিটরিং করছেন দলের প্রধান শেখ হাসিনা। এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ২০১৩ সালের আগে খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালে যারা আওয়ামী লীগের মেয়র ছিলেন, তারা অভ‚তপূর্ব উন্নয়ন করেছিলেন। বিগত ৫ বছর এসব এলাকায় বিএনপির মেয়র থাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। এলাকার উন্নয়নে তারা কোনো কাজ করেননি। নির্বাচিত হয়ে বিএনপির মেয়ররা নগর ভবনগুলোকে সেবা খাতের পরিবর্তে রাজনীতিকরণ করেছেন। এবার নির্বাচনে মানুষ আর ওই ভুল করবে না। তারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। কারণ তারা চান উন্নয়ন। আওয়ামী লীগ সারা দেশে সেই উন্নয়নের জোয়ার বয়ে দিয়েছে। মানুষ এই উন্নয়ন থেকে আর বঞ্চিত হতে চায় না। এ জন্যই খুলনায় তারা তালুকদার আবদুল খালেককে ভোট দিয়ে বিশাল ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত করেছেন। বাকি ৪ সিটিতেও তারা নৌকার প্রার্থীদের ভোট দেবেন বলে আমরা বিশ্বাস করি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App