কক্সবাজারের টেকনাফ পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর যুবলীগের সাবেক সভাপতি মো. একরামুল হকের নিহতের সময় ফোনে রেকর্ড করা বলে দাবি করা অডিও ক্লিপটি চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে মাদক সরকারের ‘ভিন্ন উদ্দেশ্য’ প্রমাণ করে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানী ধানমন্ডিতে এক ইফতার অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। রংপুর মেডিকেল কলেজ জাতীয়তাবাদী প্রাক্তন ছাত্র কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে এই ইফতারের আয়োজন করা হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বন্দুক যুদ্ধে কক্সবাজারের পৌর মেয়র একরাম হত্যাকাণ্ডই প্রমাণ করে মাদক বিরোধী অভিযানে সরকারের ‘ভিন্ন উদ্দেশ্য’ ছিল। একরাম হত্যাকাণ্ডের অডিওই প্রমাণ করে, এই অভিযান চালানো হয়েছে সম্পূর্ণভাবে একটি ভিন্ন উদ্দেশ্যে, একটি ভিন্ন কারণে।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা এই অভিযানকে (মাদক বিরোধী অভিযান) প্রথমেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছি। আমরা আশঙ্কা করেছিলাম যে, এটাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে কিনা? আজকে এই অডিওর মধ্য দিয়ে এটা যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে নিঃসন্দেহে এটা প্রমাণিত হচ্ছে যে, এই অভিযানে মধ্য দিয়ে সরকার জনগণের দৃষ্টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতে চায়।’

বিএনপির মহাসচিব এ সময় সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘তাদের (সরকার) যে দুঃশাসন, তাদের যে অন্যায়-অত্যাচার-হত্যা কল্পনা করা যায়? একটা স্বাধীন মুক্ত দেশে পাখির মতো মানুষকে গুলি করে মারা হচ্ছে তার কোনো বিচার হবে না। বিচারবর্হিভুত হত্যাকাণ্ড- এই কোন দেশে বাস করছি আমরা? এটা কি সেই জঙ্গলের মধ্যে, জঙ্গি আইন এখানে আছে? এগুলোকে প্রতিরোধ করে আমাদের দাঁড়াতে হবে। আজকে আমাদের পথে নামতে হবে। পথেই এদের পরাজিত করতে হবে।’

ফখরুল আরও বলেন, ‘আমাদের দেশের গণতন্ত্রকে এই সরকার পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। সংসদ ও শাসনব্যবস্থায় জনগণের কোনো অংশগ্রহণ নেই। দেশে সুশাসন বলতে কিছু নাই। পুরোপুরিভাবে দুঃশাসন। সে কারণে জনজীবন দুঃর্বিসহ হয়ে পড়েছে। চালের দাম যেভাবে বেড়েছে, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যে হারে বেড়েছে যেটা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কেউ কোথাও কোনো বিচার পান না। না আদালতে বিচার রয়েছে, না অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে রয়েছে। যারা ব্যবসায়ী, ব্যবসা করছেন- শুধুমাত্র ভিন্ন মতের হওয়ায় তারা গ্যাস অথবা বিদ্যুতের সংযোগ পান না। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর তাদের শিল্প-কারখানা পড়ে থাকে। এটা একটা খণ্ডিত চিত্র।’

অনুষ্ঠানে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া সম্পর্কেও কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এ সময় কারাবন্দী খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে দেশকে ধ্বংস করে দেবার ষড়যন্ত্র করছে মন্তব্য করে তা রুখে দিতে জাতীয় ঐক্য ও জনগনের ঐক্য সৃষ্টি করতে আহ্বান জানান তিনি।

সংগঠনের সভাপতি ড. আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও ডা. আবুল কানানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, সহসভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাক রহিম স্বপন, চিকিৎসক একেএম মোজাম্মেল হক, এটিএম ফরিদউদ্দিন, ফরহাদ হাসান চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।