×

জাতীয়

আ.লীগ সরকারের ৯ বছরেও তিস্তা চুক্তি হয়নি : ফখরুল

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মে ২০১৮, ১০:২৮ পিএম

আ.লীগ সরকারের ৯ বছরেও তিস্তা চুক্তি হয়নি : ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার গঠনের সময় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তিস্তা চুক্তির বিষয়ে আশ্বাস দিয়েছিল। কিন্তু গত নয় বছরেও সেই চুক্তি বাস্তবায়ন হয়নি।

আজ শুক্রবার বিকেলে রাজধানী গুলশানের ইমান্যুয়েলস কনভেশন সেন্টারে ইফতারপূর্ব আলোচনায় এ কথা বলেন ফখরুল। রাজনীতিবিদদের সন্মানে ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর) এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতে পশ্চিমবঙ্গে গেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তি নিকেতনে বাংলাদেশ ভবন নির্মান করেছে, অত্যন্ত ভালো কথা। সেই সঙ্গে আমাদের প্রশ্ন, জনগণের প্রশ্ন, আমাদের যে পাওনাগুলো রয়েছে, সমস্যাগুলো রয়েছে, সেই সমস্যাগুলো সম্পর্কে তিনি (প্রধানমন্ত্রী) কথা বলছেন কি না।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেছিল তখনই তারা বলেছিল, এখন এটা শুধু সময়ের ব্যাপার যে আমরা তিস্তা নদী পানিবণ্টন চুক্তি করতে পারব। অথচ দীর্ঘ নয় বছর হয়ে গেল, এখন পর্যন্ত তিস্তা নদীর এক ফোঁটা পানির ব্যাপারেও কোনো চুক্তি হয়নি।’

ফখরুল বলেন, ‘শুধু তিস্তা নয়, অভিন্ন যে ১৫৮টি নদী রয়েছে সেই নদীগুলোর হিস্যার ব্যাপারে কোনো চুক্তি হয়নি। অথচ দেখা যাচ্ছে যে, সামরিক চুক্তি হচ্ছে। সীমান্তে যে মানুষদের হত্যা করা হয় সেটাকে বাদ দিয়ে ট্রানজিট হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন বন্দর নির্মিত হচ্ছে। আমরা অবশ্যই কানেকটিভিটির পক্ষে, আমরা অবশ্যই একটি দেশের সঙ্গে আরেকটি দেশের সংযোগ স্থাপন হবে তার পক্ষে। একই সঙ্গে তার বিনিময় আমরা কী পাচ্ছি, সেটাও জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। আমরা বারবার বলছি, এভাবে জনগণকে বোকা বানিয়ে, জনগণের সাথে প্রতারণা করে আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাচ্ছেন।’

‘নির্বাচনী বিধি সংশোধন থেকে বিরত থাকুন’ স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারণায় অংশ নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন যে সংশোধন এনেছে, তা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ফখরুল বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের দাবির কাছে নতি স্বীকার করে সংসদ সদস্যদেরকে নির্বাচনের প্রচারণায় নামার জন্য অনুমোদন দিয়ে কাজ করছে। আমরা খুব স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, এই বিধি ইসির এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে, সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ক্ষেত্রে যদি সংসদ সদস্যদের প্রচারণায় নামতে দেওয়া হয়, তাহলে সেখানে কিছুতেই লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড তৈরি হবে না। সেই কারণে আমরা এটার বিরোধিতা করেছি। আমরা মনে করি, এটা এখনো আইন হয়নি। এটা থেকে তারা (ইসি) রিবত থাকবেন এবং লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড তৈরি করবার কাজ তারা করবেন।

মাদক বিরোধী অভিযানের প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে সরকার বিভিন্ন অভিযানের নামে এ দেশের নিরীহ মানুষদের হত্যা করছে। আজকে আবার নতুন যে অভিযান শুরু করেছেন, হঠাৎ করেই রোজার মাসে নির্বাচনের বছরে আপনারা মাদকবিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। আগে নিজের ঘরটা পরিস্কার করুন। আপনার ঘরের মধ্যে কতজন আছেন, যারা মাদকের ব্যবসার সাথে সরাসরি জড়িত, তাদের আগে নিয়ে আসুন। তাদের নিয়ে আসার পরে হতদরিদ্র মানুষগুলো যারা সত্যিকার অর্থে মাদকব্যবসার সাথে জড়িত কি না বা তাদের যে ভয়াবহ পরিণতি বন্দুকযুদ্ধের নাম করে হত্যা করা, ক্রসফায়ার করা, বিচারবর্হিভূত হত্যা করা, সেটা আইনসম্মত হচ্ছে কি না, মানবতার বিরুদ্ধে যাচ্ছে কি না।’

ফখরুল বলেন, ‘আজকে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলের কাছে, এই অভিযান রাজনৈতিক উদ্দেশে চালানো হচ্ছে। এটা শুধুমাত্র আরেকটি কৌশল, বিরোধী পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য।’

জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. টি আইএ ম ফজলে রাব্বী চৌধুরীর সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে স্বাগত বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর মিয়া গোলাম পারোয়ার, আবদুল হালিম, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা এম এ রকীব, বিজেপির আবদুল মতিন সাউদ, খেলাফত মজলিশের মাওলানা শেখ গোলাম আজগর, জাগপার খন্দকার লুৎফর রহমান, আসাদুর রহমান খান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, মো. ফরিদউদ্দিন, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, লেবার পার্টির দুই অংশের হামদুল্লাহ আল মেহেদি, মাহমুদ খান, ন্যাপের মোস্তফা ভূঁইয়া, মো. শহীদন্নবী ডাবলু, ন্যাপ-ভাসানীর আজহারুল ইসলাম, মুসলিম লীগের এ এইচ এম কামরুজ্জামান খান, শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, পিপলস লীগের সৈয়দ মাহবুব হোসেন, সাম্যবাদী দলের সাঈদ আহমেদ, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মাওলানা মহিউদ্দিন ইকরাম।

ইফতারে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম এম আলম, আহসান হাবিব লিংকন, নওয়াব আলী আব্বাস খান, আনোয়ারা বেগম, মাওলানা রুহুল আমিন, অ্যাডভোকেট শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীমসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App