×

মুক্তচিন্তা

অভিযান যেন নিয়ম রক্ষা না হয়

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০১৮, ০৭:৩৫ পিএম

সড়কে শৃঙ্খলা আনতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত করা দরকার। শুধু ফিটনেস সনদ দেখাই যথেষ্ট হবে না, মোটরযান আইন অনুযায়ী যানবাহনের ফিটনেস যাচাই করতে হবে। ভুয়া ফিটনেস সনদের কারবার বন্ধ করতে হবে। সরকারের উচিত নামকাওয়াস্তে অভিযানের নামে জনভোগান্তি না বাড়িয়ে সুপরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়া।

রাজধানীতে গণপরিবহনে নৈরাজ্য যেন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। এতে করে সাধারণ মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। সড়ক দুর্ঘটনার চিহ্নিত কারণসমূহের অন্যতম একটি হলো সড়কে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালনা। অথচ এই ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে নামা বন্ধ করতে সরকারের সার্বক্ষণিক কোনো ব্যবস্থা বলবৎ নেই। বিআরটিএ এবং ডিএমপির পক্ষ থেকে মাঝে মাঝে অভিযান চালানো হলেও তা নিয়ম রক্ষাই হয়ে দাঁড়ায়। কাজের কাজ কিছু হয় না, মাঝখান থেকে কিছুদিন যানবাহন সংকটে নগরবাসীর ভোগান্তি বাড়ে। আমরা বুঝতে পারি না গুরুত্বপূর্ণ এ কাজটিতে কর্তৃপক্ষের এমন দায়সারা মনোভাব কেন?

সম্প্রতি গণপরিবহনে নৈরাজ্য, বেপরোয়া গতি এবং চালকদের রেষারেষিতে রাজধানীবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এতে করে সড়ক দুর্ঘটনায় অঙ্গহানি ও প্রাণহানির ঘটনাও বাড়ছে। রাজধানীতে গণপরিবহন পরিস্থিতি উন্নয়নের জন্য অভিযানে নামে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ভ্রাম্যমাণ আদালত। লাইসেন্স ছাড়া চালক ও ফিটনেসবিহীন গাড়িমুক্ত সড়ক এবং গাড়ির বেপরোয়া গতি নিয়ন্ত্রণে কঠোর অভিযান চালাচ্ছে ডিএমপি। এই অভিযানকে আমরা সাধুবাদ জানাই। গত ৪ দিনে অভিযান চালিয়ে ২০ জন চালককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযানের ফলে অনেক পরিবহন মালিক রাস্তায় গাড়ি নামাচ্ছেন না। দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান শুরু করলে রাস্তায় গাড়ি নামানো বন্ধ করে দেয়। এতে করে পরিবহন সংকটে পড়তে হচ্ছে সাধারণ যাত্রীদের। একপ্রকার জিম্মি হয়ে পড়ে নগরবাসী। তাই কর্তৃপক্ষের উচিত বিকল্প পরিবহনের বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমলে নেয়া। বিআরটিএর সর্বশেষ হিসাবে রাজধানীতেই ৯৪ হাজার ফিটনেস সনদহীন যানবাহন চলছে। ২/৪ দিনের অভিযানে এসব যানবাহন কীভাবে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব তা দেখার বিষয়। এর মধ্যে মালিকের চাপ তো রয়েছে। মালিকদের চাপে অনেক আইন অনেক নিয়মই কার্যকর করতে পারে না সরকার। অভিযানকে সফল করতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত সংখ্যক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মতো লোকবল নিয়োজিত করেই মাঠে নামতে হবে। আমরা মনে করি, সড়কে শৃঙ্খলা আনতে এ ধরনের অভিযান নিয়মিত করা দরকার। শুধু ফিটনেস সনদ দেখাই যথেষ্ট হবে না, মোটরযান আইন অনুযায়ী যানবাহনের ফিটনেস যাচাই করতে হবে। ভুয়া ফিটনেস সনদের কারবার বন্ধ করতে হবে। এর হোতাদের শনাক্ত করে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে। নিরাপদ সড়ক চাইলে সড়ককে আনফিট গাড়িমুক্ত করতেই হবে। এ কাজটিকে হেলাফেলার ভাবলে চলবে না। সরকারের উচিত নামকাওয়াস্তে অভিযানের নামে জনভোগান্তি না বাড়িয়ে সুপরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগ নেয়া। অভিযানের পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ও দুর্ঘটনা রোধে সড়ক ও পরিবহন ব্যবস্থার স্থায়ী সমাধানের দিকে নজর দেয়া জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App