×

জাতীয়

কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় দুই নবজাতকের মৃত্যু : আত্মগোপনে চিকিৎসক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০১৮, ১২:৪৯ পিএম

কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় দুই নবজাতকের মৃত্যু : আত্মগোপনে চিকিৎসক
কুমিল্লার চান্দিনায় এক গাইনি চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় এক ঘণ্টা ব্যবধানে দুই নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার নবাবপুর বাজারে ‘নবাবপুর মেডিকেল সেন্টার’ নামে একটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে দোকান ঘরে ওই নামে সাইন বোর্ড থাকলেও কথিত ডাক্তার এর চিকিৎসাপত্রে ‘নাহার কন্সালটেশন সেন্টার’ নাম রয়েছে। এদিন উপজেলার বিচুন্দাইর-করইয়ারপাড়া গ্রামের প্রবাসী সফিকুল ইসলামের স্ত্রীর এবং কংগাই গ্রামের ওমর ফারুকের স্ত্রীর সিজারিয়ান প্রসব করান ওই ডাক্তার। দুজনেই ফুটফুটে দু’টি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। দুই নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা দোকান ঘরে থাকা ওই ক্লিনিকে ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে চান্দিনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত দুই নব জাতকের মরদেহ উদ্ধার এবং ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে গাইনি ডাক্তার কামরুন্নাহারের সহযোগী ইয়াসমিনকে (৩৫) আটক করে। ভুক্তভোগী নবজাতকের বাবা ওমর ফারুক জানান, আমার স্ত্রী প্রথম সন্তান ধারণ করার পর এলাকার লোকমুখে ডাক্তার কামরুন্নাহারের নাম শুনে তার কাছে প্রায়ই নিয়ে আসতাম। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে তার চেম্বারে নিয়ে আসি। সেখানে আনার পর তিনি আমার স্ত্রীকে ইনজেকশন ও স্যালাইন দেয়। বিকেল অনুমান ৫টার দিকে আমার ছেলে সন্তান হয়েছে বলে আমাকে জানান। কিছুক্ষণ পর আবার জানান, আমার স্ত্রীর সিজারে সন্তান ডেলিভারি হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে এবং নবজাতকটি মারা গেছে। নিহত অপর শিশুর খালা কুলসুম জানান, আমার ছোট বোনের প্রসব ব্যথা শুরু হলে সকাল ৯টায় আমরা কামরুন্নাহার ডাক্তারের চেম্বারে নিয়ে আসি। দুপুর অনুমান ২টায় আমার বোনের সন্তান প্রসব হওয়ার পর থেকে শিশুটির শরীর ধীরে ধীরে ঠাণ্ডা হয়ে আসছিল। বিষয়টি আমার তাকে (কামরুন্নাহারকে) জানাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ডাক্তার না আপনরা ডাক্তার’ আরও অনেক কিছু বলেন। বেলা অনুমান ৪টার দিকে তিনি আমাদের হাতে একটি কাগজ ধরিয়ে দিয়ে বলেন, ‘এই ইনজেকশনটি নিয়ে আসেন, আমাদের বাচ্চার অবস্থা ভাল না’ আমরা বাজার থেকে ওই ইনজেকশন এনে দিলে তারা ওই ইনজেকশনটি শিশুটির শরীরে প্রবেশ করার কিছুক্ষণের মধ্যে মৃত্যু ঘটে শিশুর। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে দুইটি বাচ্চার মৃত্যুর পর কামরুন্নাহার বলেন, আমি একটু বাজার থেকে আসছি। আপনারা থাকেন এই কথা বলেই তিনি পালিয়ে যান। পরবর্তীতে কথিত ওই চিকিৎসক কামরুন্নাহারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, ঘটনাটি শুনে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুটি নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করি। কথিত চিকিৎসক কামরুন্নাহার আত্মগোপন করায় তাকে পাওয়া যায়নি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তার সহযোগীকে আটক করেছি। জেলা সিভিল সার্জন ডা. মুজিব রাহমান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আগে জানা ছিল না। এখন যেহেতু জেনেছি, ভুয়া চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করবো।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App