×

বিনোদন

বৈশাখের ছবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ এপ্রিল ২০১৮, ০৩:১৭ পিএম

বৈশাখের ছবি
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে এ বছর মুক্তি পেয়েছে দুটি ছবি। একটি আলমগীর পরিচালিত ‘একটি সিনেমার গল্প’, আরেকটি ইফতেখার চৌধুরী পরিচালিত ‘বিজলী’। গত কয়েক বছর ধরে শুধু বৈশাখ উদযাপনের মাত্রাই বাড়েনি, বেড়েছে ছবি মুক্তিকে কেন্দ্র করে ডামাঢোলও। ঈদের মতো বৈশাখও এখন নির্মাতাদের পছন্দের উৎসবে পরিণত হয়েছে। শেষ বছরগুলোতে পহেলা বৈশাখে কোন কোন ছবি মুক্তি পেয়েছে, সেসব ছবির ফলাফল কেমন ছিল, তারই আদ্যোপান্ত জানাচ্ছেন এম রহমান
  জ্বী হুজুর নতুন মুখের ছবি ‘জ্বী হুজুর’। এ ছবির প্রযোজক আব্বাসউল্লাহ ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ এবং ‘এ জীবন তোমার তোমারে’ও বিনিয়োগ করেছিলেন। শেষোক্ত ছবিতে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল পূর্ণিমার। আর তাকে নায়িকা হিসেবে গড়েছিলেন জাকির হোসেন রাজু। রুচিশীল ছবির এ পরিচালক ‘জ্বী হুজুর’-এ আনলেন সাইমন সাদিক ও সারা জেরিনকে। ছবিটি তেমন ব্যবসা করল না। নায়িকা সারাও ছিটকে পড়লেন। তবে টিকে গেলেন সাইমন। ‘জ্বী হুজুর’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১২ সালের পহেলা বৈশাখকে টার্গেট করে। বৈশাখের একদিন আগে অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছিল আলোচিত ছবিটি। দেহরক্ষী ইফতেখার চৌধুরী চলচ্চিত্রে এনেছিলেন ববিকে। নায়িকার প্রথম ছবি ‘খোঁজ দ্য সার্চ’। যাতে একটি আইটেম গান আর কিছু দৃশ্যে অভিনয় করেই নজর কেড়েছিলেন ববি। ববির সঙ্গে ইফতেখারের দ্বিতীয় ছবি ‘দেহরক্ষী’। সবাইকে অবাক করে দিয়ে ছবিটি ব্যবসা করে ফেলেছিল। কাজী মারুফ ও ববির জুটি পছন্দ করেছিলেন দর্শকরা। ভিলেন হিসেবে আনিসুর রহমান মিলনও ঢাকাই বাণিজ্যিক ছবিতে যাত্রা করে দৃষ্টি কেড়েছিলেন। ‘দেহরক্ষী’ মুক্তি পেয়েছিল ২০১৩ সালের ১২ এপ্রিল। দবির সাহেবের সংসার ১১ এপ্রিল শুক্রবারকে ছেড়ে ৪ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছিল ‘দবির সাহেবের সংসার’। ২০১৪ সালে পহেলা বৈশাখের এক সপ্তাহ আগেই মুক্তি পেয়ে গিয়েছিল বৈশাখের ছবি বলে প্রচারিত ছবিটি। দুই সপ্তাহ ধরে দর্শকদের মন জয়ের টার্গেট ছিল প্রযোজনা সংস্থার। জাকির হোসেন রাজু ছিলেন ছবির পরিচালক। বাপ্পি ও মাহিকে নিয়ে তার প্রথম ছবি ‘দবির সাহেবের সংসার’ ছিল কমেডি ছবি। ছবিতে আরো ছিলেন আসিফ ইমরোজ। কিন্তু ‘দবির সাহেবের সংসার’ ব্যাপক প্রচারণা সত্তে¡ও ব্যবসা করতে পারেনি। ডেয়ারিং লাভার ২০১৪ সালের ১১ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছিল বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ‘ডেয়ারিং লাভার’। ওই বছরের পহেলা বৈশাখের সপ্তাহে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটিতে অভিনয় করেছিলেন শাকিব খান ও মিশা সওদাগর। পহেলা বৈশাখে কখনো এই জুটির ছবি মুক্তি পেতে দেখা যায়নি। বদিউল আলম খোকনের অন্যান্য ছবির মতো এটিও দক্ষিণ ভারতীয় একটি ছবির নকল বলে সমালোচিত হয়। কিন্তু শাকিব-অপু জুটির কারণে ‘ডেয়ারিং লাভার’ আলোচনা তৈরি করতে পেরেছিল। ছুঁয়ে দিলে মন শিহাব শাহিন ছিলেন ছোটপর্দার নাটক ও টেলিফিল্ম নির্মাতা। তাকে চলচ্চিত্রে আনেন মম ও আরিফিন শুভ। কেননা এই দুজনকে নিয়েই তিনি নির্মাণ করেন মিষ্টি প্রেমের ছবি ‘ছুঁয়ে দিলে মন’। ২০১৫ সালের পহেল বৈশাখে এ ছবিটি ছিল দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। ১০ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছিল ‘ছুঁয়ে দিলে মন’। দর্শক-সমালোচকদের মন ছুঁয়ে গিয়েছিল ছবিটি। গানগুলোও ছিল আলোচিত। আরিফিন শুভ সেই প্রথম বৈশাখে দর্শকদের সামনে এলেন। গুন্ডা ইস্পাহানি আরিফ জাহান বাজারের প্রতিষ্ঠিত নির্মাতা যুগল। তারা ‘ছুঁয়ে দিলে মন’-এর মুখোমুখি হোন ‘গুন্ডা দ্য টেরোরিস্ট’ নিয়ে। যে ছবির বাজি রাপ্পি চৌধুরী ও আঁচল। পহেল বৈশাখে এই জুটি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন ‘ছুঁয়ে দিলে মন’-এর জুটি শুভ-মমকে। ১০ এপ্রিল গুন্ডা’ ছবিটিও মুক্তি পায়। অবধারিতভাবে একসঙ্গে দুটি ছবির লড়াই বেঁধে যাওয়ায় কেউই চুটিয়ে ব্যবসা করতে পারেনি। যদিও ‘গুন্ডা’ ছবির বিরুদ্ধে নকলের অভিযোগ ওঠায় ছবির নির্মাতা ক্ষতিগ্রস্ত হোন। পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২ প্রথম ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ২০১৩ সালের ঈদে। সিক্যুয়েল মুক্তি পেল ২০১৬ সালের বৈশাখে। ১২ এপ্রিল সাফিউদ্দিন সাফি পরিচালিত ছবিটি দর্শকদের সামনে এল। শাকিব খান ও জয়া আহসান ছাড়াও এবার দেখা দিলেন ইমন। কিন্তু আগের ছবিটির মতো সাড়া ফেলতে পারল না ক্রিকেট নিয়ে ছবি ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২’। এমনকি হলের সংখ্যায় শুরুতে পিছিয়ে ছিল ছবিটি। প্রথম সপ্তাহে কিছুটা ভালো চলায় দ্বিতীয় সপ্তাহে হলের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল। অনেক দামে কেনা বাপ্পি চৌধুরী, মাহিয়া ও ডিপজলÑ এই তিন তারকার ছবি বলে হল মালিকদের মধ্যে দারুণ চাহিদা ছিল ‘অনেক দামে কেনা’র। তার ওপরে ছবির পরিচালক জাকির হোসেন রাজু। যিনি সদ্য ‘অনেক সাধের ময়না’র মতো হিট ছবি বক্স অফিসে উপহার দিয়েছেন। সিনেমা হলের সংখ্যায় ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী ২’-এর দ্বিগুণ হল পায় ‘অনেক দামে কেনা’। কিন্তু প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ছবিটির প্রচারণায় অবহেলা করায় তার প্রভাব পড়ে ব্যবসায়। দ্বিতীয় সপ্তাহে অর্ধেক হল ছুটে যায়। ২০১৬ সালের ১২ এপ্রিল মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিটি আশানুরূপ দর্শক টানতে পারেনি পহেলা বৈশাখে। শঙ্খচিল গৌতম ঘোষের ছবি ‘শঙ্খচিল’ ২০১৬ সালের পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মুক্তি পায়। কিন্তু যৌথ প্রযোজনার ছবিটি সীমিত কিছু হল জোটাতে পারে। একই দিনে ‘অনেক দামে কেনা’ এবং ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী ২’ মুক্তি পাওয়ায় ব্যবসায়িক দিক থেকে একেবারেই সুবিধা করতে পারেনি ‘শঙ্খচিল’। যদিও কলকাতায় প্রসেনজিৎ ও কুসুম শিকদার অভিনীত ছবিটি প্রশংসার ঝড় তোলে। পরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও জয় করে নেয়। ধ্যেততেরিকি গত বছরের পহেলা বৈশাখে মুক্তি পেয়েছিল ‘ধ্যেততেরিকি’। আরিফিন শুভ ও নুসরাত ফারিয়া জুটির সঙ্গে আরো ছিলেন নবাগত ফারিন ও রোশান। চার শিল্পীর ‘ধ্যেততেরিকি’ প্রচারণায় শোরগোল ফেলেছিল। কিন্তু ব্যবসায় তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেনি ছবিটি। শামিম আহমেদ রনি পরিচালিত তিন নম্বর ছবি ছিল এটি। জাজ মাল্টিমিডিয়ার যৌথ প্রযোজনার ছবির ভিড়ে ‘ধ্যেততেরিকি’ ছিল একক বাংলাদেশি প্রযোজনা। যদিও ভারতীয় ভিলেন রজতাভ দত্ত ছবিতে ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App