×

জাতীয়

বন্যার শঙ্কা, শ্রমিক সংকট চরম দুশ্চিন্তায় কৃষক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০১৮, ০৩:২৪ পিএম

বন্যার শঙ্কা, শ্রমিক সংকট চরম দুশ্চিন্তায় কৃষক
জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ধান পাকলে ও কৃষি শ্রমিকের অভাবে ধান কাটতে পারছে না কৃষকরা। গত বছর অরক্ষিত বাঁধ আর অকাল বন্যায় জেলার সবকটি হাওরের কৃষকদের সোনালি ফসল তলিয়ে যাওয়ার আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে কৃষকদের।কষ্টার্জিত বোরো ফসল ঘরে তুলতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। হাওরে সোনালি ধান পাকা শুরু হয়েছে। আবার কোনো কোনো হাওরে কৃষকেরা কিছুটা ধান কাটাও শুরু করেছেন। তবে বৃষ্টি ও আকাশ মেঘাছন্ন দেখলে আতঙ্কিত হয়ে উঠেন কৃষকরা। সম্প্রতি বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে হাওরের ফসলের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে বলে কৃষকেরা জানিয়েছেন। পানিসম্পদমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু সুনামগঞ্জে এসে সার্কিট হাউসের কনফারেন্স রুমে প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধিসহ সুশীল সমাজ ও কৃষকদের নিয়ে মতবিনিময় করেন। মতবিনিময়কালে মন্ত্রী আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ধান কেটে প্রত্যেক কৃষক তাদের কষ্টার্জিত সোনালি ফসল গোলায় তোলার পরামর্শ দেন। তবে কৃষকদের দাবি হাওরে আগাম জাতের রোপণ করা ধান পাকলেও ধান কাটার শ্রমিক সংকট রয়েছে। সরেজমিন জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন হাওর ঘুরে দেখা যায়, হাওরে ধান পাকতে শুরু করেছে। মাঠে মাঠে এখন সোনালি ধানের মৌ মৌ ঘ্রাণ ঘরে ঘরে চলছে ধান তোলার প্রস্তুতি। অনেক কৃষক পরিবার তাদের বাড়ির পাশে কিংবা মাঠে ধান শুকানোর জন্য জায়গা তৈরির কাজে ব্যস্ততা। তারা বিভিন্ন জেলায় ধান কাটার শ্রমিকের জন্য খবর পাঠালে ও বাইরের কোনো জেলা থেকে এবার কৃষি শ্রমিক না আসায় শ্রমিকের সংকট রয়েছে। গত বছর অরক্ষিত বাঁধ আর অকাল বন্যায় জেলার সবকটি হাওরের কৃষকদের সোনালি ফসল তলিয়ে যাওয়ার দিশাহারা ছিলেন কৃষকরা কিন্তু তারপরেও কৃষকদের আধাপাকা ধান তলিয়ে যাওয়ার পর নিঃস্ব-নিঃপ্রাণ হাওরে যেন আবারো জেগেছে প্রাণ। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরেছে হাওর পাড়ের কৃষকদের মনের মাঝে। ধানের ক্ষেতে প্রতিদিনের পরিবর্তন দেখে মলিন কৃষকের মুখে আবারো দেখা দিয়েছে আনন্দের ঝিলিক। কৃষকের একদিকে আকস্মিক বন্যা-শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা, অন্যদিকে দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুতি চলছে। ধান কাটার শ্রমিকের জন্য খবর পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। মেরামত করা হচ্ছে ধানের গোলা। কৃষকরা জানান, এখন জমির ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য বড় সংকট হচ্ছে শ্রমিক সংকট। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া ধান তুলতে পারলে হাওরের মানুষের দুঃখ অনেকাংশে লাঘব হবে বলে আশা করছেন তারা। কৃষকরা যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের ফসল ঘরে তুলতে পারেন সেজন্য কৃষি বিভাগ সর্বদা নজর রাখছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস। পৌর শহরের কৃষক আজব আলী, ভূষণ বৈদ্য, অকিল বৈদ্য জানান, হাওরে ধান পাকলেও শ্রমিক সংকটের কারণে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছি। কলকলিয়া ইউনিয়ন হিজলা গ্রামের কৃষক সানোয়ার হাসান শায়েক বলেন, এবার ৩০ কেয়ার জমিনে বোরো ধান করছি হাওরে ধান কাটা শুরু হযেছে অন্যান্য বছর উত্তরাঞ্চল থেকে ধান কাটার লোকজন আসত। কিন্তু চলতি বছর উত্তরাঞ্চল থেকে ধান কাটার শ্রমিক না আসায় এবার আমরা চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। আবার কৃষি শ্রমিকের এবার মজুরি ও অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। প্রতি শ্রমিক ৫৫০/৬০০ টাকা ছাড়া বর্তমানে কাজ করতে রাজি নয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App