×

বিনোদন

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আনন্দ ও আক্ষেপ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০১৮, ০২:০২ পিএম

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আনন্দ ও আক্ষেপ
‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৬’ ঘোষণা করেছে সরকার। তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে গত বৃহস্পতিবার জানানো হয়, সেরা চলচ্চিত্রের জন্য নির্বাচিত হয়েছে তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’। সর্বোচ্চ ৭টি বিভাগে পুরস্কার পেতে যাচ্ছে অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’ ছবিটি। যারা এ বছর পুরস্কার পাচ্ছেন তাদের ফেসবুক টাইমলাইন এখন অভিনন্দন ও শুভেচ্ছার জোয়ারে ভাসছে।
অন্যদিকে শেষমেশ বরফ গলার আভাস দিলেন চলচ্চিত্র অভিনেতা ফারুক। দিন কয়েক আগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬-এর খসড়া তালিকা প্রকাশ হয়েছিল। সেখানে আজীবন সম্মাননা ক্যাটাগরিতে ‘যৌথভাবে’ নাম এসেছিল তার। এতেই ক্ষোভ ঝরে পড়ে তার কণ্ঠে। তখন বলেছিলেন, ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার নিয়ে আমার কোনো আগ্রহ নেই। আমাকে যৌথভাবে লাইফটাইম পুরস্কার দেয়া হচ্ছে। এ নিয়ে আমার প্রচন্ড ক্ষোভ রয়েছে। এই ক্ষোভের যৌক্তিক কারণ হলো এর আগে ১৯ বার আমাকে জাতীয় পুরস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার দিতে গিয়েও বাদ দেয়া হয়েছে। আমার অপরাধ আমি বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি করি।’ তবে এবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের চ‚ড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর তিনি বললেন একটু অন্যভাবে। ‘এটা আমার জন্য একটা ফাঁদের মতো হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে এ পুরস্কার দেবেন। তাই এ অনুষ্ঠানে না যাওয়াটা তাকে অসম্মান করা। আমি আবারো বলছি, পুরস্কারের প্রতি আমার আগ্রহ নেই। শুধু আপাকে (প্রধানমন্ত্রী) সম্মান জানাতেই সেখানে আমি যাব, সম্ভবত।’ এদিকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার গেজেট আকারে প্রকাশ হওয়ার পর নিজের অনুভ‚তি জানালেন অভিনেত্রী ববিতা। তিনি বললেন, ‘আমি ভীষণ আনন্দিত। লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট মানে সারা জীবনের কাজের সম্মান আর স্বীকৃতি। এবার আমাকে এই সম্মাননা জানানো হচ্ছে বলে সত্যিই আমি আনন্দিত আর উচ্ছ¡সিত। আমি যা পরিশ্রম করেছি তার সার্থকতা এটা। আমি এর পুরস্কার সংশ্লিষ্ট সবাইকে ও আমার ভক্তদের ধন্যবাদ দিতে চাই। তাদের ভালোবাসা ছাড়া আমার এ প্রাপ্তি হতো না।’ আরও প্রতিক্রিয়া জানান ‘আয়নাবাজি’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ নির্মাতা হিসেবে নির্বাচিত অমিতাভ রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ছবি মানুষের জন্য বানাই। পুরস্কার পেলে তো অবশ্যই ভালো লাগে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার মানে অন্যরকম বিষয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিজ্ঞ বিচারকরা চুলচেরা বিশ্লেষণ করেন। তাই ভালোলাগার পরিমাণটা বেশি। আমি ধন্যবাদ জানাই আমার ছবির সঙ্গে জড়িত প্রতিটি মানুষকে। এই সম্মাননা সবার।’ এ বছর শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পাচ্ছেন চঞ্চল চৌধুরী। আয়নাবাজি ছবিতে অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কার পাচ্ছেন সুচিন্তা চৌধুরী চঞ্চল। এই অভিনেতা বলেন, ‘দর্শকের ভালোবাসার চেয়ে বড় কোনো পুরস্কার নেই। আয়নাবাজি ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে সেটা আগেই পেয়েছি। অসংখ্য মানুষ তাদের ভালোবাসা দিয়েছেন। এবার রাষ্ট্রীয়ভাবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া অবশ্যই আনন্দের এবং আমার অভিনয় জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত।’ এবারের চ‚ড়ান্ত তালিকায় সর্বোচ্চ ৭টি বিভাগে পুরস্কার পেতে যাচ্ছে অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’ ছবিটি। ছবির নির্মাতা পাচ্ছেন শ্রেষ্ঠ পরিচালকের পুরস্কার। এদিকে তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পাওয়ার প্রত্যাশা ছিল ফজলুর রহমান বাবুর। তিনি পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে নাদের চৌধুরী পরিচালিত ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পাচ্ছেন। এ নিয়ে নিজের আক্ষেপের কথা জানিয়েছেন এই অভিনেতা। বাবু বলেন, ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হিসেবে আমার ছোট ভাই চঞ্চল চৌধুরী পুরস্কার পাচ্ছে। এটা আমার জন্য ভীষণ আনন্দের। তাকে অভিন্দন জানাই। তবে অজ্ঞাতনামা ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার পাওয়ার প্রত্যাশা আমারও ছিল। সেটা হয়নি। তবে অজ্ঞাতনামা শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের পুরস্কার পাচ্ছে, তার জন্য নির্মাতা তৌকীর আহমেদ ও ছবিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পুরস্কার পাচ্ছি। তার জন্য পরিচালক নাদের চৌধুরী, প্রযোজক আব্দুল আজিজ ভাইয়ের কাছেও আমার কৃতজ্ঞতা।’ এবছর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে ‘অজ্ঞাতনামা’ পুরস্কার পাওয়ায় উচ্ছ¡সিত তৌকীর আহমেদ। ‘অজ্ঞাতনামা ছবির পরিচালক তৌকীর বলেন, ‘পুরস্কার প্রাপ্তি সব সময়ই আনন্দের বিষয়। এই ছবিটি দর্শক পছন্দ করেছেন। আগেই দর্শকের প্রশংসা পেয়েছি। এবার রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পেতে যাচ্ছি। এটা ভীষণ আনন্দের।’ প্রথমবার চলচ্চিত্র নির্মাণে এসেই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাচ্ছেন মেহের আফরোজ শাওন। তার পরিচালিত ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ছবিটি পাচ্ছে দুটি পুরস্কার। একটি পাচ্ছেন ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ছবির পার্শ্বচরিত্র অভিনেত্রী হিসেবে তানিয়া আহমেদ এবং অন্যটি পাচ্ছেন শাওন। তবে শাওন পুরস্কারটি পাচ্ছেন সেরা নারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে। ওই ছবিতে ব্যবহৃত ‘যদি মন কাঁদে’ গানটির জন্য পুরস্কার পাচ্ছেন শাওন। তিনি বলেন, ‘গানটির গীতিকার হুমায়ূন আহমেদ বেঁচে থাকলে হয়তো ভীষণ খুশি হতেন। এই গানটি অনেকের ভীষণ প্রিয় একটি গান। তাই পুরস্কারটিও সবার।’ শ্রেষ্ঠ অভিনেতা হয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App