×

জাতীয়

এক সময় আমি ওবায়দুল কাদেরের নেতা ছিলাম: মোশাররফ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০১৮, ০৯:০০ পিএম

এক সময় আমি ওবায়দুল কাদেরের নেতা ছিলাম: মোশাররফ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ চার দফায় সরকারে থাকলেও ‘একাত্তরের ২৫ মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে পারেনি’।

তিনি বলেন, ‘আ. লীগ সরকার বাংলাদেশের জন্য লজ্জ্বাকর একটি স্বীকৃতি পেয়েছেন। সেটা হচ্ছে পৃথিবীর পাঁচটি স্বৈরাচারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। ’

মোশাররফ বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বেশি কথা বলেন। উনাকে নিয়ে বেশি বলতে পারবো না। এক সময়ে আমি তার নেতা ছিলাম। সেটারও একটু অসুবিধা আছে। আমি যখন মহসিন হলের ভিপি তখন উনি (ওবায়দুল কাদের) ফাস্ট ইয়ারের ছাত্র। আমি তাকে ছাত্র রাজনীতিতে সেসময়ে সম্পৃক্ত করেছিলাম। আমি তাকে বলতে চাই, বেশি কথা বইলেন না। বললে সত্যকথা বেরিয়ে যায়। যেমন ইতোপূর্বে আপনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ কাওয়াদের দল, আওয়ামী লীগ হাইব্রিডের দল ।’

আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় দলটির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘২৫-এর কালো রাত্রিতে এই বাংলাদেশে পশ্চিম পাকিস্তানিরা যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, জেনোসাইড হয়েছিল- এটা ঘৃণ্যতম জেনোসাইড। দুঃখের বিষয় যে, আজকে যারা ক্ষমতায় তারা মুক্তিযুদ্ধের ঠিকাদার মনে করেন। দাবি করেন তারা এই ৪৭ বছরে বেশ কয়েকবার ক্ষমতায় এসেছেন কিন্তু ২৫ শে কালো রাত্রিতে জেনোসাইডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি তারা আদায় করতে পারেন নাই।’

জার্মানির এই গবেষণা সংস্থার জরিপের প্রসঙ্গ টেনে খন্দকার মোশারররফ বলেন, ‘২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে ব্যর্থ হলেও আ. লীগ সরকার বাংলাদেশের জন্য লজ্জ্বাকর একটি স্বীকৃতি পেয়েছেন। সেটা হচ্ছে পৃথিবীর পাঁচটি স্বৈরাচারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। আমরা লজ্জ্বিত, আমরা ক্ষুব্ধ।’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের তিনটি স্তম্ভকে যারা ধ্বংস করে দেয়। যারা গণতন্ত্রকে বাক্সবন্দি করে রাখে। কথা বলার, সমাবেশ করার অধিকার থাকে না- সেই দেশের সরকারের নাম অবশ্যই স্বৈরাচারি হবে।’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপিকে জনসভার করতে না দেওয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবসের দিন পতিত স্বৈরাচারকে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সমাবেশ করতে দেওয়া হলো। অথচ আমরা সমাবেশ করতে একাধিবার আবেদন করেও অনুমতি মেলেনি। কারণ সরকার জনগনকে ভয় পায় বলে আমাদেরকে সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সমাবেশ করতে দেয় না। এটা কী কোনো গণতন্ত্রের সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে যে, বিরোধী দলকে একটি সমাবেশ করতে দেবেন না।’

মোশাররফ বলেন, ‘আপনারা (সরকার) সমাবেশ করবেন, আপনাদের দালালদের করতে দেবেন, পতিত সেই স্বৈরাচারকে করতে দেবেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির পর থেকে আমরা বলে আসছি, এই সরকার গায়ের জোরের সরকার, অবৈধ সরকার । এই গায়ের জোরের সরকারই হচ্ছে স্বৈরাচার সরকার। ’

নির্বাচনের আগে সরকার প্রধানের পদত্যাগের নজির দেশেই আছে বলে ওবায়দুল কাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, পৃথিবী কোথাও নির্বাচনের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী বা সরকার প্রধানের পদত্যাগের নজির নাই। আমি বলতে চাই, পৃথিবীতে অনেক নজির আছে সেগুলো আনতে চাই না। শুধু বাংলাদেশের নজিরের কথা বলতে চাই। উনাদের বর্তমান সাথী এককালীন স্বৈরাচার এরশাদ প্রেসিডেন্ট ছিলেন, সরকার প্রধান। তিনি পদত্যাগ করেছেন গণঅভ্যুত্থানের মধ্যেই। এরপর বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহম্মেদের অধীনে নির্বাচন হয়েছিলো।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আরেকটি নজিরের কথা বলছি। আমাদের নেত্রী ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করে প্রধানমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর সেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছিলো যেই নির্বাচনে শেখ হাসিনা ক্ষমতা এসেছিলেন।’

মোশাররফ আরও বলেন, ‘ক্ষমতায় থেকে আবার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছিলেন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার এসেছিলো তার অধীনে নির্বাচন হয়েছে। ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনি যা বলছেন এটা ঠিক নয়। বরং সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে একটি সংসদ রেখে আরেক সংসদ নির্বাচনের নজির কোথাও নেই।’

সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া, এলডিপির যুগ্ম মহাসচিব সাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, জাসাস সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম শায়লা প্রমুখ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App