×

মুক্তচিন্তা

দণ্ডিতদের রায় দ্রুত কার্যকর হোক

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০১৮, ০৮:২১ পিএম

দণ্ডিতদের রায় দ্রুত কার্যকর হোক

এটি দেশের অন্যতম বৃহৎ ও ঐতিহাসিক রায়। পিলখানা হত্যা মামলা বাদে কোনো মামলায় একসঙ্গে ৩৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার নজির নেই। আমরা মনে করি, এই রায় মানুষের আতঙ্ক ও অসহায়ত্ব দূর করতে ভূমিকা রাখবে। আগামীতে এ ধরনের নৃশংস ঘটনা ঘটাতে দৃর্বৃত্তরা সাহস পাবে না। দ্রুত বহুল আলোচিত এই মামলার রায় কার্যকর হবে বলে আমরা আশাবাদী।

ফেনীর বহুল আলোচিত ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি একরামুল হক একরাম হত্যা মামলার রায়ে ৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত মঙ্গলবার জেলা ও দায়রা জজ আমিনুল হক চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। এই রায়ের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট যে, অপরাধের বিচার সম্পন্ন হচ্ছে। এটি স্বস্তির বিষয়। বহুল প্রতীক্ষিত এ রায়ে মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ওরফে মিনার চৌধুরীসহ ১৬ জন খালাস পেয়েছে।

২০১৪ সালের ২০ জুন প্রকাশ্যে ফুলগাজী উপজেলার চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একরামুল হক একরামকে গুলি ও ছুরিকাঘাতের পর আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। স্মরণকালের নৃশংসতম এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শিউরে ওঠে সারাদেশ। নিহতের ভাই রেজাউল হক জসিম এ ঘটনায় বিএনপি নেতা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ওরফে মিনার চৌধুরীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩০-৩৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। পরে দুই দফায় অভিযোগপত্র দেয়া হলে আদালত তা গ্রহণ করেননি। শেষবার ২০১৫ সালের ১১ এপ্রিল ৫৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেন তৎকালীন ফেনীর গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক। চার্জশিটে বলা হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে দ্ব›দ্ব ও ফেনী ডায়াবেটিক সমিতির নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধের জের ধরে একরামুল হককে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের আগের দিন সন্ধ্যা ও রাতে ফেনী শহরের মিজান রোডের একটি কমিউনিটি সেন্টার এবং ফেনী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আসামিরা দফায় দফায় বৈঠক করেন। সেখানেই হত্যার পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত করা হয়। তদন্ত শেষে ৫৬ জনকে অভিযুক্ত করে ওই বছরের ২৮ আগস্ট চার্জশিট দেয় পুলিশ। এর প্রায় চার বছর পর একরাম হত্যার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় এ মামলার ৫৬ আসামির মধ্যে ৩৬ জন আদালতে হাজির ছিলেন। বাকিদের মধ্যে ১০ জন মামলার শুরু থেকেই পলাতক। জামিন নিয়ে পলাতক আছেন নয়জন। অপরাধ প্রমাণ না হওয়ায় ১৬ জন এই মামলা থেকে খালাস পেয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করেছেন আদালত। বিচারক তার পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন, ১৬জন আসামী এতই প্রভাবশালী ও ক্ষমতাবান যে তাদের বিপক্ষে কেউ সাক্ষ্য দেয়ার সাহস পায়নি। এরপর বিচারক কিছু পর্যবেক্ষণ ও সাজার মূল অংশ আদালতে উপস্থিত আসামিদের পাঠ করে শোনান। মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যে রায় ঘোষণা শেষ করেন তিনি। রায় পাঠ করে শেষে জেলা ও দায়রা জজ এজলাস ত্যাগ করেন।

ফেনী জেলা পিপি এডভোকেট হাফেজ আহাম্মদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট। আমরা রাষ্ট্রপক্ষে মামলা প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। এ রায়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে। এটি দেশের অন্যতম বৃহৎ ও ঐতিহাসিক রায়। পিলখানা হত্যা মামলা বাদে কোনো মামলায় একসঙ্গে ৩৯ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার নজির নেই। আমরা মনে করি, এই রায় মানুষের আতঙ্ক ও অসহায়ত্ব দূর করতে ভ‚মিকা রাখবে। আগামীতে এ ধরনের নৃশংস ঘটনা ঘটাতে দৃর্বৃত্তরা সাহস পাবেনা। দ্রুত বহুল আলোচিত এই মামলার রায় কার্যকর হবে বলে আমরা আশাবাদী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App