×

জাতীয়

দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ মার্চ ২০১৮, ১২:৫৪ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা
দেশের দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বরিশাল বিভাগের ৬টি জেলার সড়ক ও মহাসড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ঘটবে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আগামী দুবছরের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে বলে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের মানুষ কম সময়ে রাজধানীসহ জেলা ও উপজেলার সঙ্গে সহজেই যাতায়াত করতে পারবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের একেবারে শেষ সময়ে এসে দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এই উন্নয়ন প্রকল্পটি ইতোমধ্যেই পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন চূড়ান্ত হয়েছে। গুরুত্ব বিবেচনায় রেখে আগামী একনেকের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। ওই বৈঠকেই প্রকল্পটি পাস হবে বলেও সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। একনেকের বৈঠকে প্রকল্পটি পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু হবে। প্রাথমিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ৬৬৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা ও ভোলা জেলার সব সড়ক ও মহাসড়কের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এ প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়িত হবে। এ জন্য জমি অধিগ্রহণ, সড়ক বাঁধ নির্মাণ, নতুন নতুন সেতু ও বক্স-কালভাট নির্মাণ, ডেন নির্মাণ, আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণসহ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার সবগুলো মহাসড়কের মান আরো উন্নত করা হবে। মহাসড়কগুলো আরো প্রশস্ত করা হবে। এ জন্যই জমি অধিগ্রহণ করা হবে। মান ঠিক রাখান জন্য পর্যাপ্ত ড্রেন নির্মাণ করা হবে। ১৭১ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার পেভমেন্ট প্রশস্ত এবং মজবুত করা হবে। ১ হাজার ১০০ মিটার সাইড ডিচ বা ইউ ড্রেন নির্মাণ করা হবে। জানা গেছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বহুল আকাক্সিক্ষত পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে। এখন পুরোদমে সেতুর কাজ চলছে। এই সেতু খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে ব্যবস্থার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। অল্প সময়ের মধ্যেই বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার মানুষ রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত হবে। দ্রুত যোগাযোগের জন্যই বরিশালের সড়ক ও মহাসড়কগুলোর অবস্থা এবং মানের পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে। শেষ সময়ে হলেও সরকার পদ্মা সেতুর বাস্তবতার নিরিখে বরিশাল বিভাগের সড়ক ও মহাসড়কগুলোর আমূল পরিবর্তনের জন্য এই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া পায়রা সমুদ্রবন্দর স্থাপনের ফলে বরিশাল বিভাগের ৬ জেলার ওপর দিয়ে পণ্য পরিবহন বেড়ে যাবে। পণ্যবাহী সব ধরনের যানবাহন এসব জেলার ওপর দিয়ে বিভিন্ন দিকে চলাচল করবে। বর্তমানে যে সড়ক ও মহাসড়ক রয়েছে তা কন্টেইনারবাহী ভারী যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী। সড়কগুলোর প্রশস্ততাও অনেক কম। আবার ভারী যানবাহন চলাচলের জন্য মজবুত না। এ ছাড়া আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভোলায় গ্যাস ও বিদ্যুতের আর কোনো সমস্যা থাকবে না। ১ দশমিত ৫ ট্রিলিয়ন গ্যাস পাওয়া গেছে। আরো গ্যাস ক‚প খননের চেষ্টা চলছে। সেখানে ২২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট রয়েছে। ভারতীয় একটি কোম্পানি থেকে ২২৫ মেগাওয়াট, আশুগঞ্জ থেকে ১০০ ও ৪০০ মেগাওয়াটের আরো বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গ্যাস ও বিদ্যুৎ সুবিধার কারণে অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে শিল্প কারখানা গড়ে উঠবে। এসব শিল্প কারখানার মালামাল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আনা-নেয়ার জন্য দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক ও মহাসড়কের উন্নয়ন করা জরুরি। পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বরিশাল বিভাগের সব সড়ক ও মহাসড়কগুলো প্রথম শ্রেণির সড়কে উন্নীত হবে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গেও বরিশালের ৬ জেলার সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার কৃষিপণ্য এক জেলা থেকে অন্য জেলায় এবং জেলা শহর থেকে উপজেলা পর্যন্ত সহজেই আনা-নেয়া সম্ভব হবে। সংগত কারণেই দক্ষিণাঞ্চলের সড়ক ও মহাসড়ক সংস্কার, টেকসই নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এসব কারণে সরকার পদ্মা সেতু নির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মহাসড়কগুলোর উন্নয়নে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। প্রকল্পটি একনেকে পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দ্রুততার সঙ্গে কাজ শুরু করবে। ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে এ প্রকল্পটির প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হয়। ২০২০ সালের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের সম্ভাবনার কথাও পিপিতে বলা হয়। পরিকল্পনা কমিশন প্রস্তাবনার সব ধরনের সম্ভাব্যতা যাচাই-বাছাইয়ের পর প্রস্তাবটি অনুমোদন করে। এখন একনেকে অনুমোদন হলেই সড়ক ও জনপদ বিভাগ কাজ শুরু করবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App