×

মুক্তচিন্তা

এগোতে হবে আরো দূর

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৭:৩০ পিএম

এগোতে হবে আরো দূর

এ অগ্রগতি বৈশ্বিক গড় স্কোর ৪৩-এর তুলনায় এখনো অনেক কম। অর্থাৎ দুর্নীতির ব্যাপকতা এখনো অনেক। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরো কঠোর ও কার্যকর অবস্থান নিতে হবে সরকারকে। বিশেষ করে দুর্নীতি দমনে কমিশনের (দুদক) স্বাধীন ও সবল তৎপরতা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে হবে। দুর্র্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি।

বাংলাদেশে দুর্নীতি তুলনামূলকভাবে কমেছে বলে জানিয়েছে বার্লিনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)। তারা বলছে, দুর্নীতির ধারণা সূচকে স্কোর ও অবস্থান দুই ধাপ বেড়ে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৭তম। এর আগে তা ছিল ১৫তম। দুর্নীতি কমার ক্ষেত্রে সূচকে এই অগ্রগতি আশাব্যঞ্জক। তবে কিঞ্চিৎ এগোলেও এখনো অধিক দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের বলয়ের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। আমাদের এগোতে হবে আরো বহুদূর।

গত বৃহস্পতিবার টিআইয়ের দুর্নীতি ধারণা সূচক-২০১৭ প্রকাশ উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে উল্লিখিত তথ্য জানায় ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালের সূচকে মোট ১৮০টি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই সূচক অনুযায়ী, দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় এক নম্বরে আছে সোমালিয়া। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া। অন্যদিকে ১০০ স্কোরের মধ্যে ৮৯ স্কোর পেয়ে কম দুর্নীতিগ্রস্ত তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে নিউজিল্যান্ড। ৮৮ স্কোর পেয়ে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ডেনমার্ক, তৃতীয় স্থানে যৌথভাবে রয়েছে ফিনল্যান্ড, নরওয়ে ও সুইজারল্যান্ড, যাদের স্কোর ৮৫। আর বাংলাদেশ অর্জন করেছে ২৮ স্কোর। দক্ষিণ এশিয়ার ৮টি দেশের মধ্যে দুর্নীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান এখন দ্বিতীয়।

উল্লেখ্য, টিআইয়ের ২০১৫-এর দুর্নীতির ধারণা সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ২৫। ২০১৬ তে তা এক পয়েন্ট বেড়ে হয় ২৬। সে বছর অবস্থান আগের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে হয়েছিল ১৩তম। ২০১৭-এর সূচকে স্কোর বেড়েছে ২ পয়েন্ট এবং অবস্থানও এগিয়েছে দুই ধাপ। এতে প্রতীয়মান হয় যে, বাংলাদেশ উন্নতির ধারায় রয়েছে। তবে এই উন্নতিতে সন্তোষের কোনো সুযোগ নেই। টিআইয়ের বিবেচনায়, যে সব দেশ ৪৩ বা তার বেশি স্কোর পায়, সেসব দেশ মধ্যম পর্যায়ে দুর্নীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশের এ অগ্রগতি বৈশ্বিক গড় স্কোর ৪৩-এর তুলনায় এখনো অনেক কম। অর্থাৎ দুর্নীতির ব্যাপকতা এখনো অনেক। বাংলাদেশের আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও নীতি কাঠামো তুলনামূলকভাবে সুদৃঢ় হওয়ায় দুর্নীতি সূচকে বাংলাদেশের স্কোর বেড়েছে কিন্তু নীতি ও আইন প্রয়োগে ঘাটতি; অর্থনৈতিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে ক্রমবর্ধমান অনৈতিক প্রভাব বিস্তার, অনিয়ম-দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলায় জড়িতদের জবাবদিহি নিশ্চিত না হওয়ায় সূচকে বাংলাদেশ এগুতে পারছে না। উদীয়মান অর্থনীতি ও ভাবি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে এসব বিষয়ে আরো নজর দেয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরো কঠোর ও কার্যকর অবস্থান নিতে হবে সরকারকে। বিশেষ করে দুর্নীতি দমনে কমিশনের (দুদক) স্বাধীন ও সবল তৎপরতা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে হবে। দুর্র্নীতি দমনে রাজনৈতিক সদিচ্ছা খুবই জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App