×

আন্তর্জাতিক

ফ্লোরিডায় বিক্ষোভের পাশাপাশি বন্দুক প্রদর্শনী, আগ্নেয়াস্ত্র বিতর্ক তুঙ্গে

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০৮:৫৫ পিএম

ফ্লোরিডায় বিক্ষোভের পাশাপাশি বন্দুক প্রদর্শনী, আগ্নেয়াস্ত্র বিতর্ক তুঙ্গে
যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় হাইস্কুলে গুলির ঘটনায় বেঁচে যাওয়াদের বন্দুকবিরোধী বিক্ষোভ আর এর পাশাপাশি একই সময়ে তাদের অদূরেই আয়োজিত বন্দুক প্রদর্শনীতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। ফ্লোরিডা স্কুলে বন্দুকধারীর হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া শিক্ষার্থীরা শনিবার এক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ-সমাবেশে বন্দুকের ওপর কড়াকড়ি আরোপের আইন করার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু এ সমাবেশ থেকে কিছু দূরেই আয়োজিত এক বন্দুক প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারীরা বলেছেন, বেপরোয়া হত্যাকাণ্ডের জন্য আগ্নেয়াস্ত্রকে দায়ী করা ঠিক নয়। গত বুধবার বিকালে ফ্লোরিডায় পার্কল্যান্ডের মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলে বন্দুকধারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে ১৭ জন নিহত হয়। এদের ১৪ জন বিভিন্ন বয়সের শিক্ষার্থী। বাকিরা হলেন, স্কুলের সহকারী ফুটবল কোচ অ্যারন ফিস, অ্যাথলেটিক পরিচালক ক্রিস হিক্সন এবং শিক্ষক স্কট বিগেল। ঘটনার পর আটক ওই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী নিকোলাস ক্রুজ (১৯) অপরাধ স্বীকার করেছেন। ক্রুজকে স্কুল থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। ২০১২ সালের পর যুক্তরাষ্ট্রের স্কুলগুলোতে ঘটা সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ঘটনা এটি। যা আবারও দেশে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের দ্বিতীয় সংশোধনীতে নাগরিকদের বন্দুক রাখার অধিকার সংক্ষিত আছে। এ অধিকারের পক্ষে- বিপক্ষেই আবার বিতর্ক জোরাল হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আরও কয়েকজন ক্রুজের মানসিক অসুস্থতাকে এ হামলার পেছনে মূল কারণ বলেছেন। এর বিরোধিতা করে শনিবারের বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী এমা গঞ্জালেস বলেন, “বাস্তবতা হচ্ছে, এটি শুধুমাত্র মানসিক অসুস্থতার বিষয় নয়। এদিকটিতে আমাদের আরো মনযোগ দেওয়া প্রয়োজন।” বন্দুকধারী ছুরি নিয়ে হামলা চালালে এত মানুষকে হত্যা করতে পারত না বলে উল্লেখ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসেবে আগ্নেয়াস্ত্রের ক্রেতার অতীতে মানসিক অসুস্থতার রেকর্ড আছে কিনা তা যাচাই করে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা ছিল। ক্ষমতায় আসার পর ট্রাম্প ওই বাধ্যবাধকতা তুলে নেন। গঞ্জালেস ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। আগ্নেয়াস্ত্রের মালিকদের অধিকার সমর্থনের জন্য ‘ন্যাশনাল রাইফেল অ্যাসোসিয়েশন’ (এনআরএ) এরও সমালোচনা করেন তিনি। ফ্লোরিডা স্কুলে হামলাকারী ক্রুজ সেখানকার এক বৈধ ডিলারের কাছ থেকে রাইফেল কিনেছিলেন বলে জানিয়েছেন ব্রওয়ার্ড কাউন্টির শেরিফ। এ অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে কড়া ব্যবস্থা আইনপ্রণেতারাই ভোটের মধ্য দিয়ে নিতে পারে বলে এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন হামলার শিকার হওয়া স্কুলের আরেক শিক্ষার্থী রায়ান। কঠোর বন্দু আইন নিয়ে ফ্লোরিডায় বিক্ষোভ সমাবেশ চলার সময় সেখান থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরেই চলছিল বন্দুক প্রদর্শনী। প্রদর্শনীটি বাতিলের দাবি তোলা হলেও সেখানে ৫০ লাখ ডলার মূল্যের বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনীতে যাওয়া সাবেক এক আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা জো আরিংটন বলেন, বন্দুক ক্রেতাদের অতীত ইতিহাস সম্পর্কে ভাল করে খোঁজ খবর নেওয়া দরকার। কিন্তু বন্দুকের ওপর আরো বেশি বাধানিষেধ আরোপ করে পার্কল্যান্ডের মত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা যাবে বলে তিনি মনে করেন না। আরিংটন বলেন, “কোনও নতুন আইনকরেই যা ঘটেছে তা বন্ধ করা যেত না। আমার ধারণা, অনেকগুলো সংস্থা তাদের কর্তব্যে অবহেলা করার কারণে ওই ঘটনা ঘটেছে।” হামলাকারী ক্রুজ সম্পর্কে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই’কে অবহিত করার পরও তারা হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচনার মুখে পড়েছে। ৫ জানুয়ারিতে এফবিআইকে একজন ফোন করে ক্রুজের মানুষ হত্যার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App