×

মুক্তচিন্তা

নিয়ম মানতে বাধ্য করুন

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২০ জানুয়ারি ২০১৮, ০৭:২৮ পিএম

নিয়ম মানতে বাধ্য করুন

ফায়ার সার্ভিস যদি এককভাবে এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারে সে ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অন্য সংস্থার সঙ্গে তাদের সমন্বয়ের ব্যবস্থা করতে পারে। প্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার মতো কঠোর ব্যবস্থায় যেতে হবে।

অগ্নিঝুঁকি নিয়েই চলছে রাজধানীর শীর্ষস্থানীয় স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল-ক্লিনিক, শপিংমল, ব্যাংক, আবাসিক হোটেল ও মিডিয়া সেন্টারের মতো সাড়ে ৩ হাজার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে যে কোনো সময় অগ্নিকাণ্ডের আশঙ্কা থাকলেও ন্যূনতম অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। উদ্বেগের বিষয় হলো এসব বাণিজ্যিক ভবন বা মার্কেটগুলোকে অগ্নিনির্বাপকের নিয়ম অনুসরণ করার জন্য বারবার ফায়ার সার্ভিস থেকে বলা হলেও কেউ তা মানছে না।

ফায়ার সার্ভিসের সূত্র উদ্ধৃত করে গতকালের ভোরের কাগজের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত বছরের অক্টোবর-নভেম্বর এই দুই মাসে যে ৩ হাজার ৭৩৪টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ, এর মাঝে ১ হাজার ৬৬ প্রতিষ্ঠান খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, ২ হাজার ৫৮৩টি ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত হয় এবং বাকি মাত্র ৮৫টি পাওয়া যায় সন্তোষজনক। এর আগে জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে রাজধানীর ৩ হাজার ৭৮৬টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে পাওয়া যায়, ১ হাজার ৬৯টি প্রতিষ্ঠান খুবই ঝুঁকিপূর্ণ, ২ হাজার ৫৮৮টি ঝুঁকিপূর্ণ এবং মাত্র ১২৯টি সন্তোষজনক। উদ্বেগজনক ব্যাপার হলো, ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ এসব প্রতিষ্ঠানকে বারবার চিঠি ও চূড়ান্ত নোটিশ দিয়ে নিয়মের মধ্যে আনতে পারছে না। খুবই বিস্ময়ের বিষয় ঝুঁকিপূর্ণ তালিকার ২৯৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মিটফোর্ড হাসপাতাল, জাতীয় বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, জাতীয় ক্যান্সার ইনস্টিটিউট, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ইউনাইটেড হাসপাতাল, ল্যাবএইড, ইবনে সিনা, বসুন্ধরা শপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্ক, রেডিসন ব্ল, লা মেরিডিয়ান, ঢাকা রিজেন্সি হোটেল এন্ড রিসোর্ট, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, এনসিসি ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের হেড অফিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। রাজধানীর বুকে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ব্যাংক ভবনের মতো স্থাপনা অগ্নি-ঝুঁকিপূর্ণ থাকে বছরের পর বছর- এটা কী করে সম্ভব?

আমরা দেখেছি বসুন্ধরা শপিংমল, এনটিভি ভবন কিংবা তাজরীন গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা। এসব প্রতিষ্ঠানে অগ্নিনির্বাপণের সঠিক ব্যবস্থা থাকলে হতাহতের ঘটনা কম হতো। ফায়ার সার্ভিস যদি এককভাবে এসব ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারে সে ক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অন্য সংস্থার সঙ্গে তাদের সমন্বয়ের ব্যবস্থা করতে পারে। প্রয়োজনে ঝুঁকিপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের ভবনগুলোতে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার মতো কঠোর ব্যবস্থায় যেতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনাগুলোকে যদি দ্রুত নিয়মের মধ্যে না আনা যায় তাহলে যে কোনো সময় বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড ঘটতে পারে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়াই এখন সময়ের দাবি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App