×

মুক্তচিন্তা

শীতার্তদের রক্ষায় উদ্যোগ নিন

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:২২ পিএম

শীতার্তদের রক্ষায় উদ্যোগ নিন

কিছু কিছু এলাকায় এ অবস্থাকে দুর্যোগ হিসেবে চিন্তা করেই সরকারকে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। শীত নিবারণে শীতবস্ত্র সরবরাহ, ছিন্নমূলদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা এবং শীতজনিত অসুখবিসুখ চিকিৎসার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে।

রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই বইছে শৈত্যপ্রবাহ। দেশের ইতিহাসে অর্ধশত বছরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল গত সোমবার পঞ্চগড়ে ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র শৈত্যপ্রবাহে সারা দেশের মানুষ চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে। অনেকটাই বিপর্যস্ত জনজীবন। শীত ও শীতজনিত রোগে গত সাত দিনে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এটা খুবই মর্মান্তিক। এ রকম মৃত্যু কোনোভাবে কাম্য নয়। শীতার্ত মানুষদের রক্ষায় সরকারসহ সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, টাঙ্গাইল, শ্রীমঙ্গল ও চুয়াডাঙ্গাসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ওপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। স›দ্বীপ, সীতাকুণ্ড, কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলসহ ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ এবং ঢাকা, সিলেট ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্ট অংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বইছে। শীতে মানুষের পাশাপাশি কাবু হয়ে পড়েছে গবাদিপশু-পাখিও। শুধু বাংলাদেশই নয়, এবার শীতের রেকর্ড বৈশ্বিকভাবেই। সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায়ও গত অর্ধশত বছরের মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি শীত পড়েছে। কোথাও কোথাও তাপমাত্রা মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিপরীত দিকে এখন খরতাপে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া। সেখানে ৪৭ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। একই সময়ে বিশ্বের আলাদা প্রান্তে আবহাওয়ার এই যে ভিন্ন রূপ, সেটা জলবায়ু পরিবর্তনের কারণেই। তাই বিশ্ববাসীকে মিলেই জলবায়ু পরিবর্তনের এ ভয়ঙ্কর পরিণতি থেকে বাঁচার পথ খুঁজতে হবে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানোর বা থামানোর কোনো ক্ষমতা আমাদের নেই, কিন্তু দুর্যোগে মানুষের কষ্ট দুর্দশা লাঘবের চেষ্টা নিশ্চয়ই আমরা করতে পারি। আমাদের দেশে যে কোনো দুর্যোগ দৈবপাকে দুস্থ ও ছিন্নমূল মানুষই বিপাকে পড়ে বেশি। বিশেষ করে শীতকালে তাদের পক্ষে একদিকে শীতবস্ত্র ও লেপ-কম্বল কিনে শীত নিবারণ করা যেমন দুরূহ, অন্যদিকে পুষ্টিহীনতার কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতাও তাদের কম। ফলে শীতজনিত বিভিন্ন রোগে তারাই আক্রান্ত হয় বেশি। শৈত্যপ্রবাহ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে নানা রোগের প্রকোপ। গত রবিবার এক দিনেই শুধু সরকারি হিসাবেই ৬০৬ জন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়েছে গতকালের ভোরের কাগজের রিপোর্টে।

শীতার্তদের পাশে দাঁড়ানো দরকার এখনই। দেশের উত্তরাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় এ অবস্থাকে দুর্যোগ হিসেবে চিন্তা করেই সরকারকে জরুরি ব্যবস্থা নিতে হবে। শীত নিবারণে শীতবস্ত্র সরবরাহ, ছিন্নমূলদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা এবং শীতজনিত অসুখবিসুখ চিকিৎসার ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্রসহ কম্বল বিতরণের খবর অবশ্য আসছে গণমাধ্যমে। তবে তা যথেষ্ট নয়, এই ধরনের তৎপরতা আরো বিস্তৃত হওয়া উচিত। হতদরিদ্র মানুষদের শীতের দুর্যোগ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা নিশ্চয়ই আমাদের সামর্থ্যরে বাইরে নয়, তবে দরকার সময়োচিত উদ্যোগ নেয়া এবং এর যথাযথ বাস্তবায়ন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App