×

ফিচার

সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু অনলে পুড়িয়া গেল

Icon

মেলা প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০১:১৫ পিএম

শাকিব-অপু দম্পতিই প্রথম নয়, এর আগেও ভালোবেসে ঘর বেঁধেছেন চিত্রতারকারা। দাম্পত্য সম্পর্কে জড়ালেও সবার সংসার সুখের হয়নি। বিচ্ছেদের অনলে পুড়ে গেছে কিছু চিত্রতারকার সাজানো বাগান। এমনই কয়েকটি জুটিকে ফিরে দেখব এই আয়োজনে। লিখেছেন স্বাক্ষর শওকত
শাকিব-অপু ২০০৬ থেকে ২০১৭- এগারো বছরের দীর্ঘ পেশাগত ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক শাকিব খান-অপু বিশ্বাসে’। ‘কোটি টাকার কাবিন’ থেকে ‘রাজনীতি’ পর্যন্ত অর্ধশতাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন তারা দুজন। এই সময়ে তাদের অভিনীত ছবিগুলোর সিংহভাগ পেয়েছে বাণিজ্যিক সাফল্য। জুটি হিসেবেও শাকিব-অপু ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। কিন্তু চলতি বছরের শুরু থেকে তাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। অপু বিশ্বাস তাদের গোপন বিয়ের ও একমাত্র ছেলেসন্তান থাকার খবর প্রকাশ করলে শাকিব-অপু সম্পর্কে টানাপড়েন শুরু হয়। তাদের সম্পর্কে ঢুকে পড়েন নবাগত নায়িকা শবনম বুবলী। শেষ পর্যন্ত অপুকে ডিভোর্স নোটিশ পাঠিয়ে দুজনের সম্পর্ককে বিচ্ছেদের পথে ঠেলে দিলেন শাকিব। এর মধ্য দিয়ে ২০০৮ সালে কাবিননামায় স্বাক্ষর করে বিয়ের পিঁড়িতে বসা শাকিব-অপু জুটির সম্পর্কের ইতি ঘনিয়ে এল বলা চলে। জসীম-সুচরিতা আশির দশকে ভালোবেসে বিয়ে করেন জসীম-সুচরিতা। একজন ছিলেন ভিলেন, আরেকজন নায়িকা। এই দুজন অভিনীত ‘দোস্ত দুশন’ খুবই জনপ্রিয় ছবি। পরস্পরবিরোধী অবস্থানে থেকেও জসীম-সুচরিতা একে অন্যকে কবুল বলেন। পরে পর্দায়ও নায়ক-নায়িকার ভ‚মিকায় অবতীর্ণ হোন দুজনে। কিন্তু বিয়ের পর তাদের প্রেমে ভাটার টান পড়ে। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক কেচ্ছা-কাহিনী করার পর দুজনে ডিভোর্সে সম্মত হোন। একটি বৈবাহিক সম্পর্কের ইতি ঘটে। শেষ হয় একটি জুটিরও। সোহেল চৌধুরী-দিতি আশির দশকে নতুন মুখের কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে একসঙ্গে চলচ্চিত্রের আঙিনায় পা রাখেন সোহেল চৌধুরী ও দিতি। নতুন শিল্পীদের প্রেম একটি নতুন সম্পর্কেরও সূচনা করে। বেশ কিছু ছবিতে ফ্রেমবন্দি হয়ে প্রেমকে আরো গভীর করার সুযোগ পান সোহেল-দিতি। এই প্রেম এক সময় বিয়েতে গড়ায়। তাদের ঘরে আসে ছেলে দীপ্ত ও মেয়ে লামিয়া। কিন্তু সোহেলের বেহিসেবী জীবনের কারণে ধীরে ধীরে দিতি সরে যেতে থাকেন দূরে। সোহেলের বিচ্ছেদে আগ্রহ না থাকলেও দিতি নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। ভেঙে যায় সুদর্শন এক জুটি। পরে খুন হোন সোহেল। দীর্ঘদিন একাকী জীবন কাটিয়ে কিছুদিন আগে চির একাকীত্বের দেশে পাড়ি জমিয়েছেন দিতি। কাঞ্চন-দিতি নব্বই দশকের সফল জুটিগুলোর একটি কাঞ্চন-দিতি। একসঙ্গে অজস্র ছবিতে অভিনয় করেছেন তারা। ধীরে ধীরে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। ১৯৯৪ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান কাঞ্চনের স্ত্রী জাহানারা। ১৯৯৭ সালে দিতির সাবেক স্বামী সোহেল চৌধুরী নিহত হোন। এরপর দুই ঘনিষ্ঠ সহকর্মী কাঞ্চন ও দিতি বিয়ে করেন। যাদের প্রেমের সম্পর্কের গুঞ্জন বহু বছরের। কিন্তু বিয়ের পিঁড়িতে বসতেই তাদের এতদিনের সম্পর্কে চরম অবনতি ঘটে। বিয়ের খুব অল্প কিছুদিনের মধ্যে বিচ্ছেন ঘটান কাঞ্চন-দিতি। তাদের আর একসঙ্গে দেখা যায়নি। শাকিল-পপি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের স্বামী-স্ত্রী ঘোষণা দেননি তারা। তারপরও গোটা ইন্ডাস্ট্রি জানে, শাকিল-পপি বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। নব্বই দশকের শেষের দিকে তাদের প্রেম যখন তুঙ্গে তখনই হুট করে বিয়ের ‘ভুল’টি করে বসেন শাকিল-পপি। পরে তাদের বিরোধ এতটাই তিক্ততায় পৌঁছায় যে, থানা-পুলিশ অবধি গড়ায় দুই তারকার দ্ব›দ্ব। একসঙ্গে জুটি বেঁধে ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’ ছবিতে দর্শক মাতিয়েছিলেন শাকিল-অপু। কিছুদিনের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রির ব্যস্ততম জুটিতেও পরিণত হয়েছিলেন। কিন্তু একের পর এক ছবির ব্যর্থতা এবং প্রেমে ভাটা পড়লে আর সংসার করা হয়নি শাকিল-পপির। পর্দায়ও একসঙ্গে আসা ছেড়ে দেন। শাকিল-জনা পপির সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শাকিল খান নতুন অবলম্বন খুঁজছিলেন। চাইছিলেন থিতু হতে। কারণ তার ক্যারিয়ারেও চলছিল মন্দা। চাইছিলেন গুছিয়ে সংসার করতে। কিন্তু বিয়ের ইচ্ছে পূরণ হলেও সংসার করে সুখী হওয়ার বাসনা মাঠে মারা যায় তার। পপিকে হারানোর পর শাকিল প্রেমে মজেন জনার। এই নায়িকার অভিষেক ঘটেছিল ‘হৃদয়ের বাঁশি’ ছবিতে শাকিলেরই বিপরীতে। শুটিং করতে গিয়ে প্রেম। সেই প্রেম পরিণতি পেতে বেশিদিন সময় লাগেনি। কিন্তু সেই সম্পর্ক বালির বাঁধের মতোই ভেঙে যায়। বিচ্ছেদের পর এখন দুজনেই নতুন সংসারে সুখী হতে ব্যস্ত। আলেক-একা খুব গোপনে ঘর বেঁধেছিলেন আলেকজান্ডার বো ও একা। ‘তেজী’ ছবিতে নায়িকা হয়ে আলোচিত হয়েছিলেন একা। আর আলেক কম বাজেটের ছবিতে ছিলেন প্রচন্ড ব্যস্ত। এই দুই শিল্পী হুট করেই প্রেমে হাবুডুবু খেতে থাকেন। একসঙ্গে কয়েকটি ছবি করতে গিয়ে দুজনের সম্পর্ক গাঢ় হয়। প্রেমকে সফলতা দিতে পারলেও ধরে রাখতে পারেননি সম্পর্ক। আলেক-একা যেভাবে চুপিসারে গাঁটছড়া বেঁধেছিলেন, তেমনই নীরবে দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে যায়। দুজনের প্রেম ও বিচ্ছেদের এক দশক হতে চলল প্রায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App