×

মুক্তচিন্তা

উন্নয়নের জন্য ‘উদ্ভাবন’ সময়ের দাবি

Icon

মুক্তচিন্তা কলাম লেখক

প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭, ০৭:১৮ পিএম

বাংলাদেশ এখন সমৃদ্ধি এবং উন্নয়নের পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি, শিল্প, ব্যবসা, বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সর্বোপরি উন্নয়নের সব সেক্টরে টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিত করতে অব্যর্থ কৌশল উদ্ভাবনে সবাই সচেষ্ট এখন। বিদ্যমান বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সংস্থার সফলতা তার কর্মিবাহিনীর দক্ষতা, জ্ঞান ও উৎপাদনশীলতার ওপর নির্ভর করে। উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার, সৃজনশীলতার প্রয়োগ, উদ্ভাবনী ক্ষমতার বিকাশ জরুরি। এখন সর্বত্র উন্নয়নের জন্য ইনোভেশন অর্থাৎ উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে নানামুখী আলোচনা হচ্ছে। ‘ইনোভেশন’ বা উদ্ভাবন হচ্ছে প্রচলিত কর্ম বা সেবার প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত করা যা সবার জন্য নতুন সুবিধা বা উপকার তৈরি করে। নাগরিক সেবায় উদ্ভাবন বলতে সেবা প্রদান প্রক্রিয়ায় এমন কোনো পরিবর্তনের সূচনা করা, যার ফলে সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের আগের তুলনায় সময় বাঁচে, ব্যয় সাশ্রয় ও কষ্ট লাঘব হয়। এমনিতেই ইনোভেশন ধারণাটি বেসরকারি বা ব্যক্তি উদ্যোগের সঙ্গে বেশি সম্পৃক্ত। সাধারণভাবে উদ্ভাবন বা ইনোভেশন বলতে আমরা বুঝব- অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান, সেক্টর বা দেশ থেকে কোনো সৃজনশীল চর্চা নিজ ক্ষেত্রে অনুকরণ করা, সম্পূর্ণ নতুন একটি চর্চার অবতারণা করা, প্রশাসনিক পদ্ধতি অথবা সেবা প্রদানের প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করা। এই ছোটখাটো পরিবর্তন ক্রমাগতভাবে বিদ্যমান অবস্থা ও পদ্ধতির ধারাবাহিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশে এখন টেকসই উন্নয়নের জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করা হচ্ছে। সরকার সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত রাখতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। কম সময়ে সব প্রতিক‚লতা অতিক্রম করে নির্ঝঞ্ঝাটে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে মেধা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতার প্রয়োগে নতুন কৌশল উদ্ভাবনের প্রতি বেশি জোর দেয়া হচ্ছে। যেমন- নাগরিক সেবায় উদ্ভাবন বলতে সেব প্রদান প্রক্রিয়ায় এমন কিছু পরিবর্তনের সূচনা করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে সেবা গ্রহীতা নাগরিকের আগের তুলনায় সময়, খরচ, অফিস বা কর্মস্থলে যাতায়াত সময় সাশ্রয় হয়। প্রচলিত প্রশাসনিক উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ডর কলাকৌশলের পরিবর্তন করার মাধ্যমে হোক কিংবা অন্য কোনো দেশের অনুকরণে কিংবা সম্পূর্ণ নতুন কৌশল অনুসরণ করে হোক যদি সাধারণ মানুষের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পায়, কষ্ট লাঘব হয়, দুর্ভোগ অব্যবস্থার অবসান ঘটে তাহলে সেটাকেই আমরা ইনোভেশন হিসেবে গণ্য করতে পারি। আবার অতীতে যে সব কলাকৌশল প্রয়োগ করা হয়নি কিংবা চর্চা হয়নি, তা প্রয়োগের সুবাদে প্রশাসনে ব্যবস্থাপনার নতুন ধারা সৃষ্টি হয়, কর্মচাঞ্চল্য, উদ্দীপনা বেড়ে যায় তাহলে সেটাও এক ধরনের ইনোভেশন বা উদ্ভাবন বলে গণ্য হতে পারে।

সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের কর্ম উদ্যোগে যেহেতু নতুন নতুন বিষয় নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা বা যাচাই-বাছাই করা হয় সেহেতু এর প্রক্রিয়ায় ব্যর্থতার ঘটনা ঘটাও স্বাভাবিক। ইনোভেশন বা উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে সাফল্য প্রত্যাশী থাকেন সবাই। তবে সব প্রচেষ্টাই সাফল্যে পর্যবসিত হবে তেমনটি আশা করাটাও বোকামি। ইনোভেশনের ক্ষেত্রে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ব্যর্থতার ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন। উদ্ভাবনী সক্ষমতা সব সময় ঊর্ধ্বতন নির্বাহীদের মধ্যে থাকবে, তাও নয়। উদ্ভাবনী ধারণা ও উদ্যোগ ঐতিহ্যগতভাবে কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও আসতে পারে। সাধারণত নিম্ন পর্যায়ে থেকে আগত উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলো অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র আকারের এবং স্থানীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কাছ থেকেও এটা আসতে পারে। সাধারণত নিম্ন পর্যায়ে থেকে আগত উদ্ভাবনী উদ্যোগগুলো অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র আকারের এবং স্থানীয় পর্যায়ের সমস্যা কেন্দ্রিক, যা সরাসরি প্রান্তিক সেবা গ্রহীতাদের জন্য নতুন সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে। তবে এ ধরনের উদ্যোগগুলো কম প্রচার বা প্রসার লাভ করে। বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ এবং সাধারণ জনগণের কাছ থেকেও সরাসরি উদ্ভাবনী ধারণা আসার বৃহত্তর সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে সমস্যা চিহ্নিতকরণ, উদ্ভাবনী ধারণার সঞ্চালন, উদ্ভাবনী প্রকল্পের ডিজাইন ও পরিকল্পনা প্রণয়ন, বাস্তবায়ন এবং মূল্যায়ন তথা সমগ্র উদ্ভাবন চক্রে সেবাগ্রহীতা সরাসরি সংশ্লিষ্ট থাকে।

সরকারি পর্যায়ে উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী নেতৃত্ব, জনপ্রশাসনে উদ্ভাবনী সংস্কৃতির বিকাশ, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, গণকর্মচারীদের দক্ষতা, প্রণোদনা এবং ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা জরুরি বলে ধরা হয়। জনপ্রশাসনে উদ্ভাবনী উদ্যোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানে দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, যোগ্য ও দক্ষ কর্মকর্তাদের পৃষ্ঠপোষকতা এবং উৎসাহিত করা প্রয়োজন। আর উদ্ভাবনের সফলতার জন্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী বা দলনেতার অবশ্যই সরকারি খাতে উদ্ভাবন সম্পর্কে, উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি সম্পর্কে, সম্পৃক্ত উপকারভোগী গোষ্ঠীর সমস্যা ও চাহিদা এবং প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের আলোকে কোথায় কোন সময়ে উদ্ভাবন প্রয়োজন সে সম্পর্কে স্বচ্ছ এবং সুস্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার। এখন দুনিয়াজুড়ে সরকারি পর্যায়ে উদ্ভাবনের লক্ষ্যে নানা প্রচেষ্টা, উদ্যোগ সহজেই চোখে পড়ে। এটা হঠাৎ বিশেষ কোনো প্রয়োজনে না হয়ে প্রাত্যহিক রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ইনোভেশন বা উদ্ভাবন যাতে ঠুনকো কোনো বিষয় না হয়ে টেকসই হয় সে জন্য সরকারি দপ্তরে দপ্তরে পৃথক ইনোভেশন টিম গড়ে তোলার বিষয়টি এখন খুব চোখে পড়ছে।

পৃথিবীব্যাপী এখন দেশে দেশে ইনোভেশন প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, যাদের কর্মকাণ্ড ইতোমধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে। এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার সেন্টার ফর পাবলিক সার্ভিস ইনোভেশন, সিঙ্গাপুরের পিএস ২১ অফিস, কলম্বিয়ার সেন্টার ফর সোস্যাল ইনোভেশন, ডেনমার্কের মাইন্ডল্যাব, যুক্তরাজ্যে নেস্টা ইনোভেশন ল্যাব, মেক্সিকোতে ওপেন মেক্সিকো, মালয়েশিয়ার পারফরম্যান্স ম্যানেজমেন্ট এন্ড ডেলিভিারি ইউনিট, দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ইনোভেশন ব্যুরো ইত্যাদির নাম উল্লেখ করা যায়। সরকারের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ইনোভেশন টিম গঠনের পাশাপাশি এর যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য পৃথক বাজেট বরাদ্দেরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যে সব দেশে ইনোভেশন টিম গঠন করা হয়েছে তা বিশ্লেষণে দেখা যায় যে, অবস্থান, গঠন কাঠামো, সংখ্যা এবং অনুসৃত কর্মপদ্ধতি ইত্যাদি বিবেচনায় এ টিমগুলোর মধ্যে বিভিন্নতা রয়েছে। তবে লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্যের দিক থেকে এগুলো একই। আর তা হচ্ছে সমাজের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যা সেবা গ্রহীতার সেবা প্রাপ্তিকে নিশ্চিত করে এবং সেবা প্রাপ্তির প্রক্রিয়াকে সহজতর করে। উদ্ভাবনের জন্য ইনোভেশন টিমকে আলাদা উদ্ভাবনী উদ্যোগ পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। উদ্ভাবনী উদ্যোগের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। উদ্ভাবন সংক্রান্ত কাজ এগিয়ে নিতে প্রয়োজন জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, ব্যবহারিক ও তাত্তি¡ক শিক্ষা। তবে সবার আগে দরকার উদ্ভাবনের নীতি-পদ্ধতি প্রণয়ন।

প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উদ্ভাবন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ধরনের প্রতিক‚লতা এসে সব প্রক্রিয়াকে থামিয়ে দিতে পারে। সরকারি খাতে উদ্ভাবনের প্রধান প্রতিবন্ধকতা অনেক। তবে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো- আমলাতন্ত্রের ঐতিহ্যগত ধারা অনুসরণ, মাঝে মাঝে হঠাৎ স্থবির হয়ে পড়ার প্রবণতা, ঝুঁকি গ্রহণের ব্যাপারে অনাগ্রহ, পূর্বসূরিদের সব কিছু ভালোমন্দ যাচাই না করে অন্ধভাবে অনুকরণ, সুনির্দিষ্ট নিয়ম কাঠামোর বাইরে গিয়ে নতুন ধারা অনুসরণের ক্ষেত্রে, সংশয়, ভীতি, বৈচিত্র্য এবং ব্যতিক্রমকে নিরুৎসাহিত করা, কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়া চলবে না, এমন মনোভাব পোষণ করা। সরকারি আমলা এবং সাধারণ কর্মকর্তা এমনকি কর্মচারীরা এ ধরনের মনমানসিকতা নিয়ে স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে দায়িত্ব পালন করেন। তারা ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক দর্শন পূর্বসূরিদের কাছ থেকে পেয়ে আসছেন। যার আছর থেকে মুক্ত হতে আপ্রাণ চেষ্টা করেও বের হতে পারছেন না। তারা রুটিনের বাইরে যে কোনো ধরনের কাজ করতে অভ্যস্ত নন সাধারণত। রুটিনমাফিক কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এর বাইরে কিছু করাটাকে অফিসের শৃঙ্খলাবিরোধী বলে মনে করেন। এর ফলে ব্যতিক্রমধর্মী, সৃজনশীল, গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়। কেউ আন্তরিকভাবে নতুন কিছু করতে উদ্যোগ নিয়েও বারবার পিছিয়ে আসেন নানা ধরনের শঙ্কা এবং ভয়ের কারণে। ঝুঁকি গ্রহণের ব্যাপারটি সরকারি অফিস-আদালতে একদম সহজভাবে গ্রহণ করেন না বটে। বরং এটিকে ব্যক্তিগত অভিলাষ কিংবা স্বেচ্ছাচারিতা হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে প্রায় সময়ই। আবার কেউ যদি সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে ভালো একটি কাজ করে ফেলে যা উদ্ভাবন বা ইনোভেশনের পর্যায়ে পড়ে। এ জন্য সেই মেধাবী কর্মোদ্যোগী কর্মকর্তাকে কোনোভাবেই পুরস্কৃত করা হয় না, এমনটা দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রেই। উদ্ভাবনের জন্য আলাদা প্রণোদনার ব্যবস্থা না থাকায় তেমন কেউ এ বিষয়ে সচেষ্ট হন না সাধারণত। এ ছাড়াও আমাদের দেশে সম্পদের অপ্রতুলতা, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সমর্থনের অভাব, নতুন কোনো উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে পদে পদে বাধা পাওয়া, বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এবং কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণের অজ্ঞতা, অসচেতনতা, পশ্চাৎপদতা, আইনগত জটিলতা এবং ঝুঁকি গ্রহণ না করার প্রবণতা প্রভৃতিকে উদ্ভাবনের পথে বিরাট প্রতিবন্ধক। এগুলো অপসারণে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

আমাদের দেশে উন্নয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে একাত্তরে পাকিস্তানি শোষণ-শাসনের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠনে সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তখন থেকে উদ্ভাবনের আহ্বান  জানিয়েছিলেন। যা দিনে দিনে আরো ব্যাপক এবং শক্তিশালী হওয়ার কথা থাকলেও স্বাধীনতা অর্জনের পর ৪৫-৪৬ বছর অতিক্রান্ত হলেও প্রত্যাশিত পর্যায়ে পৌঁছেনি। উদ্ভাবনের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বর্তমান সরকার খুবই তৎপর। খোদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সব মন্ত্রণালয়, সরকারি দপ্তরে উদ্ভাবনী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কারিগরি সহযোগিতা, প্রশিক্ষণ, অভিজ্ঞতা বিনিময় কর্মসূচিসহ নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। যা গোটা দেশব্যাপী প্রশাসন, ব্যাংক ব্যবস্থা, প্রকল্প উন্নয়ন, দাপ্তরিক কাজকর্মে এক ধরনের উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। সব জায়গাতেই এটাকে পজেটিভলি গ্রহণ করা হয়েছে।

সবাইকে আজ এটা গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিয়ত উদ্ভাবনী উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং এর মাধ্যমে জনগণের কাক্সিক্ষত সেবাকে মানসম্মত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। উদ্ভাবনে সফলতার নির্ধারিত বিশেষ কোনো ফর্মুলা বা উপায় নেই। তবে এ ক্ষেত্রে সফলতা পেতে হলে যোগ্য ও কার্যকরী নেতৃত্ব, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অকুণ্ঠ সমর্থন, সহযোগিতা ও প্রণোদনা লাভের পাশাপাশি উদ্ভাবন সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। আমরা আসলে কি চাইছি? আমাদের গন্তব্য কোথায়? কত দূর যেতে চাই এসব ঠিক করে তারপর এগোতে হবে। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে প্রতিষ্ঠানে উদ্ভাবন সংস্কৃতি গড়ে তোলা প্রয়োজন। সবাইকে ঝুঁকি গ্রহণের মানসিকতা ধারণ করতে হবে। পুরনো ধ্যান-ধারণা ত্যাগ করতে হবে। জুনিয়র বা অধস্তনদের উদ্ভাবনী উদ্যোগকে বাঁকা চোখে না দেখে এটাকে সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে। তাদের উদ্যোগকে উৎসাহ জোগাতে হবে, যদি তাদের উদ্ভাবনী উদ্যোগ ব্যর্থও হয় তাহলে সেটাকে সহজভাবে মেনে নিতে হবে। উৎসাহিত করতে হবে পরবর্তী উদ্যোগের জন্য সমালোচনা বিতর্ক সৃষ্টি করে অহেতুক জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা যাবে না। উদ্ভাবনী প্রক্রিয়া সচল রাখতে বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা তা আার্থিক হোক কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের স্বীকৃতি হোক ব্যবস্থা রাখতে হবে। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে বিস্তারিত লেখার প্রত্যাশা থাকলো।

রেজাউল করিম খোকন : ব্যাংক কর্মকর্তা, লেখক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App