×

মুক্তচিন্তা

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের রায় দ্রু ত কার্যকর হোক

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০১৭, ০৭:২৭ পিএম

এই রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে সেগুলোর বাস্তবায়নের ওপর সরকারের জোর দেয়া উচিত। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই বিচারকার্য পরিচালনা রাষ্ট্রের একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এই বিচারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র একটা বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। এখন আমরা এই রায়ের দ্রুত কার্যকর দেখার অপেক্ষায়।

বহুল আলোচিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের দায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ১৮৫ জনকে। বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়েছে ১৯৬ জনের। প্রমাণ না হওয়ায় ৪৯ জন অভিযোগ থেকে খালাস পেয়েছেন। বিচারপতি মো. শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রায় দিয়েছেন। গত রোববার এ রায় ঘোষণা শুরু হয়, পরদিনও দীর্ঘ এই রায় পড়া হয় উচ্চ আদালতে। শুরুতেই দীর্ঘ পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়, যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। বিডিআর বিদ্রোহ বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পন্ন হওয়া ইতিবাচক দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার দায়িত্ব নেয়ার এক মাসের মাথায় ২০০৯ সালে ২৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহ করে সৈনিকরা। সেদিন বিডিআরের দরবারের আনুষ্ঠানিকতা ছিল এবং বাহিনীটির অফিসারদের প্রায় সবাই ছিলেন সেখানে। এই সময় নির্বিচারে হত্যা করা হয় ৭৪ জন সেনা সদস্যকে। যার মধ্যে ৫৭ জনই ছিলেন চৌকস সেনা অফিসার। এ ধরনের নৃশংস ও জঘন্য অপরাধের বিষয়ে এ দেশের মানুষের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। বিদ্রোহীরা একে অপরের সহযোগিতায় নির্বিচারে সেনা অফিসারদের হত্যার গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তাদের এই গোপন আঁতাত দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি ছিল। দীর্ঘ ৮ বছর পর আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায়ে দেশের জনগণ এবং নিহত স্বজনরা স্বস্তি ফেলছেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, আট বছর আগে সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে সংঘটিত বিদ্রোহের পেছনে ছিল স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র। সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে সরকারকে বিপদে ফেলা এবং রাজনৈতিক সংকট তৈরির চেষ্টা করা হয়েছিল। হাইকোর্ট রায়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ দিয়েছেন। বিচারিক আদালতের মতো হাইকোর্টও বলেছেন, ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রির মতো কাজে সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে জড়ানো ঠিক নয়। সে সঙ্গে কর্মকর্তা ও সৈনিকদের মধ্যে পেশাদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা, অধস্তনদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির ক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক মানসিকতার পরিবর্তন এবং তাদের কোনো ক্ষোভ থাকলে তার প্রশমনের তাগিদ এসেছে হাইকোর্টের রায়ে। বিদ্রোহের আগে গোয়েন্দারা কেন তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছিল- তাও সরকারকে তদন্ত করে দেখার সুপারিশ করেছে হাইকোর্ট।

আমরা মনে করি, এই রায়ে যেসব পর্যবেক্ষণ উঠে এসেছে সেগুলোর বাস্তবায়নের ওপর সরকারের জোর দেয়া উচিত। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই বিচারকার্য পরিচালনা রাষ্ট্রের একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এই বিচারের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র একটা বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। এখন আমরা এই রায়ের দ্রুত কার্যকর দেখার অপেক্ষায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App