×

ফিচার

তিন দশক ধরে শিল্পী সাজাচ্ছেন সেলিম মোহাম্মদ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০১৭, ০৫:১৩ পিএম

সময়টা সেই ১৯৮৪। চলচ্চিত্রের ওপর ভালোবাসা অনুভব করেই রূপসজ্জা শিল্পকে পেশা হিসেবে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলেন সেলিম মোহাম্মদ। তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্ত রয়েছেন এ পেশার সঙ্গে। পুরো নাম সেলিম মোহাম্মদ হলেও তিনি সবার কাছে মেকআপ আর্টিস্ট সেলিম নামেই পরিচিত। তিনি মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন নায়ক রাজ রাজ্জাক, আলমগীর, ফারুক, ইলিয়াস কাঞ্চন, দিতি, ববিতা, শাবানা, রোজিনা, নূতন, মৌসুমী, শাবনূর, শাকিব খান, অপু বিশ্বাস, ববি, মাহি, ওপার বাংলার ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তসহ আরো অনেকের সঙ্গেই। যদিও তিনি শাবনূরের মেকআপ আর্টিস্ট সেলিম নামেই বেশি পরিচিত। সেলিম যখন এ পেশায় এসেছেন তখন বাংলা চলচ্চিত্রের সুদিন ছিল। কিন্তু এখন দেখছেন তার বিপরীতটা! তারপরও হতাশ নন সেলিম। তার বিশ্বাস, একদিন না একদিন এ অবস্থার পরিবর্তন হবেই। নতুন দিনের নতুন সব প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করছেন অনেকের মতো সেলিমও। সহকারী হিসেবে তার ওস্তাদের সঙ্গে (মেকআপ আর্টিস্ট বাবুল) প্রায় ১৫ বছরেরও বেশি সময় কাজ করেছেন সেলিম। এরপর পুরোদস্তুর মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। সে হিসেবে প্রথম ছবি ‘সুজন সখি’। মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে এখন পর্যন্ত ২০০টিরও বেশি সিনেমায় কাজ করেছেন। আর সহকারী হিসেবে ১৫০-এর মতো ছবিতে। তার ঝুলিতে রয়েছে ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘দুই নয়নের আলো’, ‘তুমি শুধু তুমি’, ‘গোলাপি এখন বিলেত’, ‘হঠাৎ বৃষ্টি’, ‘সাগরিকা’, ‘চুপি চুপি’সহ আরো অসংখ্য জনপ্রিয় ছবি। কীভাবে চলচ্চিত্রে আসলেন এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সেলিম বললেন, আমি ঢাকায় আসি ১৯৮১-৮২ সালের দিকে। এরপর ১৯৮৩-৮৪ সালের দিকে আমার সঙ্গে ওয়াসিমুল বারী রাজীব যিনি বাংলা চলচ্চিত্রে ভিলেন রাজীব নামেই পরিচিত তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে। তার বাড়ি পটুয়াখালী। তার গ্রামের বাড়ি আর আমার বাড়ি পাশাপাশি। রাজীব ভাইয়ের এক বন্ধু ছিলেন, সেও মারা গিয়েছেন। তার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। তার মাধ্যমেই মূলত আমার চলচ্চিত্রে প্রবেশ করা। সেলিম আরো বলেন, আমার যখন বোঝার বয়স হয়েছে তখন থেকেই আমি বাংলা সিনেমাকে ভালোবেসে ফেলেছি। আমি কত বড় মেকআপ শিল্পী হয়েছি সেটা বলতে পারব না। তবে আমি ফিল্মকে ভালোবাসি। সেলিম মনে করেন তার ক্যারিয়ারে সবচেয়ে টার্নিং পয়েন্ট আনেন চিত্রনায়িকা শাবনূর। কারণ ক্যারিয়ারের অনেকটা সময় তিনি তার মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন। আর সেলিমের ভাষায় বলতে গেলে, শাবনূর আপা যদি ২০০ ছবিতে অভিনয় করেন, আমি ১৯০টিতে মেকআপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করেছি। কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে সেলিম বলেন, কোনো একটি সিনেমা নির্মাণের প্রসঙ্গ এলেই শুরুতে আসে মেকআপ আর্টিস্টের কথা। আর সে আর্টিস্ট এখন কত টাকা পান কিংবা তার সম্মানী কত টাকা হওয়া উচিত এ বিষয়ে নিয়মনীতি কী হবে, সেসব কিছু কি রয়েছে? একজন শিল্পী গড়ে ওঠার পেছনে অনেকেরই ভ‚মিকা থাকে। সেদিক থেকে মেকআপ আর্টিস্টরা অনেকটাই এগিয়ে থাকেন। কারণ না হলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যায়। আর তাদের যাদের পর্দায় নিত্যনতুন রূপে তুলে ধরতে সবচেয়ে বড় সহযোগিতা যারা করেন, তারা যদি এভাবে অবহেলিত হতে থাকে, তাহলে তো আমাদের অসম্মান করা হয়! তাদের জন্য কোনো একটা নিয়মনীতি থাকা উচিত। এখনো থাকলেও তা কতটা কার্যকর হয় সেটি নিয়ে ভাবনার সময় এসেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App