×

ফিচার

তারকাদের কিপটামি!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ নভেম্বর ২০১৭, ০১:৫২ পিএম

বিলাসিতায় গা-ভাসানো এহেন সেলেবদের দেখে আপনি কি ভাবতে পারেন, আপনার সেই কিপটে বন্ধুটির মতো এরাও খরচ এড়িয়ে চলেন
আমাদের বলিউডের সেলেবদের মধ্যেও এমন কয়েকজন আছেন, পেছনে যাদের সবাই কিপটে বলে ডাকেন। তারা প্রতি অনুষ্ঠানে নতুন নতুন ডিজাইনার আউটফিটে শোভিত হয়ে, ফটোগ্রাফারদের হাসিমুখে পোজ দেন। জুতো কি ব্যাগেও থাকে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডের বিচ্ছুরণ। বিলাসিতায় গা-ভাসানো এহেন সেলেবদের দেখে আপনি কি ভাবতে পারেন, আপনার সেই কিপটে বন্ধুটির মতো এরাও খরচ এড়িয়ে চলেন। এমনকি, বডিগার্ড বা মেকআপম্যানকেও মাসের মাইনেটা দিতে ভুলে যান! আর ফিল্মি দুনিয়ার গল্প তো অসংখ্য কানে পৌঁছে দেয়ার জন্য অনেকেই আছে। সেভাবেই কিছু গল্প আমাদের কানে এসে পৌঁছেছে। এর সত্যতা মাপার জন্য আমরা নিক্তি নিয়ে বসিনি। শুধু কী শুনলাম, সে ব্যাপারে অবগত করছি। শুরুটা শ্রীদেবীকে দিয়ে। তখন শ্রী’র সঙ্গে সিনেমার যোগাযোগ ক্ষীণ। টুকটাক অনুষ্ঠানে দেখা যেত। তার দুই মেয়ে জাহ্নবী, খুশি বেশ ছোট। খুশি-জাহ্নবীর দেখভালের জন্য যিনি ছিলেন, তাকে যে কোনো অনুষ্ঠানে দেখা গেলেই নাকি খুব খিটখিটে মেজাজে পাওয়া যেত। শোনা যায়, একবার মিডিয়ার সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি জানান, মালকিন ঠিকমতো মাইনে দেন না! প্রযোজক বনি কাপুরের স্ত্রী, এক সময়ের বলিউডের এক নম্বর নায়িকা এমনটা করতে পারেন নাকি? ‘এরা কোনো ল’ মানে না, তাই এদের নাম ললনা!’ এই দলেই পড়েন কাপুর সিস্টার্সও। হ্যাঁ, কারিশমা এবং কারিনা। বড় বোন কারিশমা সম্পর্কে নাকি একটা কথা প্রায় প্রবাদের পর্যায়ে চলে গিয়েছে। তিনি সঙ্গে পার্স ক্যারি করেন না! হ্যাঁ, সঙ্গে লুই ভিতো বা শানেলের লাখ টাকার ব্যাগ থাকতে পারে, কিন্তু তাতে টাকা থাকতে হবে, এমন আইন কে বানিয়েছে? বছর পাঁচ-সাতেক আগে একবার নাকি সুনীল শেঠির স্ত্রী মানা শেঠি ডিজাইনার গার্মেন্টের এক চ্যারিটি এগজিবিশন অর্গানাইজ করেছিলেন। চাকচিক্য বাড়াতে সেখানে হাজির ছিলেন সেলেবরা। সেখানে প্রদর্শনী ভরা সূর্য-তারার মাঝে একজন ছিলেন কাপুর নন্দিনীও। সেখানে তিনি কয়েকটি জিনিস পছন্দ করে, ব্যাগে ভরে যখন গুটিগুটি পায়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসছেন, তখন দামের কথা বলা হলে তিনি নাকি বিনা সংকোচে বলে দেন, তিনি পার্স ক্যারি করেন না! যাহ বাবা! তার বোন কারিনা, যতই নবাব-গৃহিণী হোন, তিনি যে ‘কঞ্জুস’ নিজেই স্বীকার করেছিলেন এক টিভি শোয়ে এসে। বলেছিলেন, মালাইকা আর অমৃতার সঙ্গে বেরোলে কখনো টাকা নিয়ে বেরোন না। কারণ ওরা কারিনার বাড়িতে এলেই খাইখাই করেন! এরপর আসি শিল্পা শেঠির কথায়। খরচা না করার সুখ্যাতি এক সময় তারও ছিল বলে শোনা যায়। অবশ্য সেটা বিবাহপূর্ব শিল্পা। সে সময় তিনি নাকি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেতেন এক মেকআপ আর্টিস্টের কাছে মেকআপ সেরে। তার জন্য সে বেচারার পারিশ্রমিক চাওয়া ছিল বারণ। শর্ত থাকত, শিল্পা যে ছবিতে অভিনয় করবেন, সেখানেও নাকি সে মেকআপ করার সুযোগ পাবে। তার পর সে পাওনাগন্ডা বুঝে নেবে প্রযোজকের কাছ থেকে। শিল্পার টাকাও বাঁচল, আবার মেকআপ আর্টিস্টও খুশ! এখন কিন্তু তাকে এমন বদনাম কেউ দিতে পারবে না। ধনী ব্যবসায়ী পত্নী মিসেস শিল্পা শেঠি কুন্দ্রার আঙুলের হীরকখন্ডের দ্যুতিতে পুরনো দিনের সেসব ঘটনা অন্ধকারে বিলীন! তবে বলিউডে মেকআপ আর্টিস্ট ও ড্রাইভারদের প্রাপ্য টাকা না দেয়ার খেলা নাকি বরাবরই চলে। ড্রাইভারদেরও নাকি অনেক তারকাই মাসমাইনে দেন না। ছবির সেটে যে তারকা যত দামের গাড়ি নিয়ে আসেন, তার ওপর একটা ভাতা ধরা থাকে। যত দামি গাড়ি, তত বেশি ভাতা। ড্রাইভারের জন্যও আলাদা অ্যালাওয়েন্স থাকে। পুরো খরচ প্রযোজকের। ড্রাইভারদের প্রতি নাকি অলিখিত নির্দেশ থাকে, খরচ তুলে নিতে হবে সেখান থেকে। এবার আসি বাউন্সার প্রসঙ্গে। সালমান খান বা বরুন ধাওয়ান কিংবা অক্ষয় কুমারের বাউন্সারদের দেখে ভাববেন না, সব তারকার বাউন্সাররাই অত ভাগ্যবান। এই যেমন মালাইকা অরোরার এক সাবেক বাউন্সার। শোনা যায়, তিনি চাকরি ছেড়েছিলেন মালকিনের কাছ থেকে ঠিকমতো মাইনে না পাওয়ায় ও তার খিটখিটে মেজাজের কারণে। তবে কিপটেমির দৌড়ে এদের চেয়ে অনেক এগিয়ে কপিল শর্মা। তিনি নাকি মাঝেমধ্যেই স্টুডিওতে আসতেন অটোতে, কিন্তু ভাড়া দিতেন না বলে শোনা যায়। না না, অটোওয়ালাও ছেড়ে দিতে চাইতেন না। কিন্তু কপিল বলতেন, ‘আমি কপিল শর্মা, চেন না!’ করন জোহরের প্রোডাকশন হাউস নিয়েও বহু কথা শোনা যায়। মাস গেলে মাইনে নাকি অনেকেই পান না। বিশেষ করে যেসব বিগ বাজেটের ছবি ফ্লপ করেছে, তার সঙ্গে যুক্ত বহু কর্মী নাকি এখনো কাঁদেন টাকা না পাওয়ার দুঃখে। এরকমই আরেক বড় প্রযোজক সঞ্জয়লীলা বানসালি। তার সেট যতই মহার্ঘ্য হোক, তা দেখে মানুষটাকে বিচার করবেন না যেন। আদতে তিনি কিন্তু প্রচন্ড হিসেবি মানুষ। তবে ভাববেন না যেন ইন্ডাস্ট্রির সবাই এরকম। এখানে সালমান, রণবীর সিংহ, রানী, দীপিকা, বরুনের মতো দিলদরিয়া অভিনেতারাও আছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App