×

মুক্তচিন্তা

মৈত্রীর বন্ধন জোরদার হোক

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ নভেম্বর ২০১৭, ০৮:৪১ পিএম

আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগ যত বৃদ্ধি পাবে, দুদেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নও তত ত্বরান্বিত হবে। রেল যোগাযোগ খাতে নতুন প্রকল্প উদ্বোধন, বিশেষ করে কলকাতা-খুলনা নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়া দুই দেশের মৈত্রীর বন্ধন জোরদার করে উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এগিয়ে নেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

দীর্ঘ সাড়ে চার যুগ পর আবার সরাসরি কলকাতা-খুলনা রুটে রেল চলাচল শুরু হলো। বৃহস্পতিবার এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে খুলনা-কলকাতা রেলপথে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আমরা আশা করছি, কলকাতা-ঢাকা রুটের পাশাপাশি কলকাতা-খুলনা রুটে সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হওয়ায় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের নাগরিক পর্যায়ের যোগাযোগ আরেক ধাপ উন্নীত হবে। দুদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য তথা অর্থনৈতিক সম্পর্কও বেগবান হবে।

উল্লেখ্য, পাকিস্তান আমলে কলকাতা-খুলনা রুটে ট্রেন চললেও ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পর তা বন্ধ হয়ে যায়। বন্ধন এক্সপ্রেস চালুর মাধ্যমে কলকাতার সঙ্গে সরাসরি ট্রেনসেবার জন্য খুলনার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হলো। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে রেল যোগাযোগ সংশ্লিষ্ট যে চারটি প্রকল্প উদ্বোধন করেন, এর মাঝে কলকাতা-খুলনা রুটে মৈত্রী এক্সপ্রেস চালু ছাড়াও রয়েছে, ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেসের জন্য উভয়প্রান্তে বহির্গমন ও কাস্টমস কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চিতপুরে কলকাতা রেলস্টেশনে একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল, ভারতীয় অর্থায়নে নির্মিত দুটো রেল সেতু। কলকাতা-ঢাকা মৈত্রী এক্সপ্রেসের বহির্গমন ও কাস্টমস কার্যক্রমের ওয়ান স্টপ সার্ভিস চালু হওয়ায় ভ্রমণ সময় কয়েক ঘণ্টা কমে যাবে। অন্যদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ভৈরব ও তিতাসের পুরনো সেতু দুটি ভারতীয় ঋণে নির্মিত হওয়ায় ডাবল লাইনে ক্রসিং ছাড়াই ট্রেন চলাচল করতে পারবে। এতে করে যাতায়াতের সময় কমে আসবে। রেলওয়ে খাতে দুদেশের মধ্যে চমৎকার সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে এই সম্পর্ক আরো জোরালো হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৬৫ সালের পূর্ব পর্যন্ত যে সব লাইন চালু ছিল, যা ১৯৬৫ সালের পর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল- সেগুলো পুনরায় চালু করার ব্যাপারে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন দুদেশের প্রধানমন্ত্রীই, যা খুবই আশাজাগানিয়া।

বর্তমান যুগ যোগাযোগ বা কানেকটিভিটির যুগ। রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা যত জোরদার হবে, উন্নয়নও ততই ত্বরান্বিত হবে। এই চিন্তা থেকেই আমাদের এই অঞ্চলেও আন্তরাষ্ট্রীয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বহুমুখীকরণে উদ্যোগী হয়েছেন রাষ্ট্রনেতারা। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারত এখন শুধু রেল, সড়ক, নদী বা আকাশ পথে সংযুক্ত নয়, গত মে মাসে সাউথ-এশিয়ান স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে সহযোগিতার ক্ষেত্র মহাকাশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগ যত বৃদ্ধি পাবে, দুদেশের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নও তত ত্বরান্বিত হবে। রেল যোগাযোগ খাতে নতুন প্রকল্প উদ্বোধন, বিশেষ করে কলকাতা-খুলনা নতুন ট্রেন সার্ভিস চালু হওয়া দুই দেশের মৈত্রীর বন্ধন জোরদার করে উভয় দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এগিয়ে নেবে- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App