×

মুক্তচিন্তা

সাংবাদিক উৎপল দাসের খোঁজ মিলবে কবে?

Icon

কাগজ অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৭, ০৫:৫৬ পিএম

একজন সাংবাদিক হঠাৎ ‘নাই’ হয়ে যাবেন। প্রায় চার সপ্তাহে সন্ধানে কোনোই ক‚লকিনারা করা যাবে না- এটা বিস্ময়কর। এ ক্ষেত্রে তদন্তকারী পুলিশ-গোয়েন্দাদের আন্তরিকতা, সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হতেই পারে। তবে এটাও ঠিক দ্রুততম সময়ে অনেক জটিল রহস্যভেদের বা অপরাধী শনাক্ত করার দৃষ্টান্ত আমাদের দেশের পুলিশ-গোয়েন্দাদের রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, তারা এই রহস্যও উন্মোচন করতে পারবেন।

সাংবাদিক উৎপল দাসের নিখোঁজ হওয়ার পর তিন সপ্তাহের বেশি পেরিয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান মিলছে না। তাকে উদ্ধারের কার্যকর প্রক্রিয়াও দৃশ্যমান নয়। এটা হতাশার এবং উদ্বেগের। ১০ অক্টোবর রাজধানীর মতিঝিলে তার কর্মস্থল পূর্বপশ্চিমবিডি ডট নিউজ অফিস থেকে বের হওয়ার পরই নিখোঁজ হন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমটির জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক উৎপল দাস। নিখোঁজের ঘটনায় ১২ অক্টোবর মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরি করে পূর্বপশ্চিমবিডি ডট নিউজ পোর্টাল কর্তৃপক্ষ। আরেকটি ডায়েরি করা হয় তার পরিবারের পক্ষ থেকে। কিন্তু আজতক তাকে উদ্ধারে বা ঘটনা তদন্তে কোনো অগ্রগতি দৃশ্যমান না হওয়ায় বাড়ছে হতাশা।

নিখোঁজ হওয়ার পরপরই বন্ধ হয়ে যাওয়া উৎপলের মুঠোফোন থেকে অর্থ দাবি করে একটি কল আসার খবর প্রকাশিত হয় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে। কিন্তু মুক্তিপণ আদায় উদ্দেশ্য হলে তো ২৫ দিন সময়ের মধ্যে এ ব্যাপারে অপহরণকারীরা উৎপলের স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করত। অবশ্য পুলিশ নিশ্চিত করেছে, ফোন কলটি উৎপলের মুঠোফোন থেকে আসেনি। পুলিশের ধারণা, স্পুফিং প্রযুক্তি ব্যবহার করা হতে পারে। এই প্রযুক্তিতে যেকোনো নম্বর কল গ্রহীতার মুঠোফোনের পর্দায় দেখানো সম্ভব, কিন্তু বাস্তবে সংশ্লিষ্ট নম্বরের ব্যবহার নাও ঘটতে পারে। এরকম কিছু হলে তো তা আরো অস্বাভাবিক কিছু ঘটার ইঙ্গিত দেয়। অন্যদিকে উৎপলের পরিবারের দাবি, কারো সঙ্গে তার এমন কোনো দ্ব›দ্ব বা শত্রুতা ছিল না, তাই এখানে ফৌজদারি অপরাধের সংশ্লিষ্টতাও ধারণা করা যাচ্ছে না। সবকিছু মিলিয়ে রহস্যই ঘনীভূত হচ্ছে- এটা আত্মগোপন, অপহরণ নাকি অন্যকিছু?

নিখোঁজ হওয়ার ৬ দিনের মাথায় উৎপল দাসের সন্ধান পাওয়া গেছে, তিনি টাঙ্গাইলে একটি হাসপাতালে আছেন এরকম সংবাদ প্রচার পেল, কিন্তু প্রচারের পরপরই জানা গেল এটি ভুয়া। এসআই রিপন পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি এরকম মিথ্যা তথ্য দিয়ে টাকাপয়সা হাতিয়ে নেয়ার ফন্দি আঁটছিল। অর্থাৎ উৎপল নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে সুযোগ সন্ধানীরা প্রতারণার ছকও ইতোমধ্যে আঁটতে শুরু করেছে, যা বিপর্যস্ত-উৎকণ্ঠিত উৎপলের পরিবার-পরিজনদের জন্য আরো যন্ত্রণার, বিড়ম্বনার।

উৎপল দাস একজন সাংবাদিক। হতে পারে পেশাগত দায়িত্বপালন করতে গিয়ে তার কাজে কোনো মহলের স্বার্থ ক্ষুণœ হয়েছে, তারা তাকে অপহরণ করেছে। হতে পারে কোনো ব্যক্তিগত শত্রু তার জের ধরে এমনটা ঘটেছে। একজন সাংবাদিকের হঠাৎ অন্তর্ধান নানা রকম শঙ্কারই ডালাপালা ছড়াতে পারে। একমাত্র যথাযথ তদন্তেই বেরিয়ে আসতে পারে সত্য। এটা বের করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। একজন সাংবাদিক হঠাৎ ‘নাই’ হয়ে যাবেন। প্রায় চার সপ্তাহ ধরে তার সন্ধানে কোনোই ক‚লকিনারা করা যাবে না- এটা বিস্ময়কর। এ ক্ষেত্রে তদন্তকারী পুলিশ-গোয়েন্দাদের আন্তরিকতা, সক্ষমতা প্রশ্নবিদ্ধ হতেই পারে। তবে এটাও ঠিক দ্রুততম সময়ে অনেক জটিল রহস্যভেদের বা অপরাধী শনাক্ত করার দৃষ্টান্ত আমাদের দেশের পুলিশ-গোয়েন্দাদের রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি তারা এই রহস্যও উন্মোচন করতে পারবেন। আমরা চাই, আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ তাদের সব রকম সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত সাংবাদিক উৎপল দাসের সন্ধান দিক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App