×

জাতীয়

মোবাইল ব্যাংকিং: একাউন্টে ৩ লাখ টাকার বেশি নয়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৭, ০৯:৩৫ পিএম

সন্ত্রাস-জঙ্গি অর্থায়ন, হুন্ডিতে রেমিটেন্স প্রেরণসহ অন্যান্য জালিয়াতি প্রতিরোধে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে আরও কঠোরতা আরোপ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক। একটি একাউন্টে ৩ লাখ টাকার বেশি জমা রাখা যাবে না। কোন একাউন্টে এর বেশি থাকলেও ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে তা কমিয়ে আনতে হবে। এর আগে একাউন্ট খোলা ও লেনদেন সংক্রান্ত বেশ কিছু কঠোরতা আরোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ এ সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে জারি করা সার্কুলারে বলা হয়েছে, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের অপ্যবহার রোধ এবং সুশৃঙ্খল ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে আগামী ১ জানুয়ারীর হতে একজন গ্রাহকের গ্রাহক তাঁর ব্যক্তি মোবাইল হিসাবে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা রাখতে পারবেন। যে সকল ব্যক্তি মোবাইল হিসাবে ৩ লাখ টাকার অধিক স্থিতি রয়েছে, সে সকল হিসাবের স্থিতি আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে উপর্যুক্ত সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে হিসাবধারীর হিসাবের সাথে সংযুক্ত ব্যাংক হিসাবে অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে তা করা যেতে পারে।

এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি জারি করা সার্কুলারে মাধ্যমে বলা হয়, একটি জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহারে একটি মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে একটি মাত্র একাউন্ট চালু রাখা যাবে। প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার এবং মাসে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা জমা (ক্যাশ ইন) করা যাবে। এছাড়া প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা এবং মাসে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন (ক্যাশ আউট) করা যাবে। আগে প্রতিদিন ২৫ হাজার এবং মাসে দেড় লাখ টাকা ক্যাশইন ও ক্যাশ আউট করা যেতো।

ওই সার্কুলারে আরও বলা হয়েছে, দিনে সর্বোচ্চ ২ বার ক্যাশ ইন করা যাবে, আগে ক্যাশ ইন করা যেতো ৫ বার। তবে মাসিক ক্যাশ ইন সংখ্যা ২০ বার অপরিবর্তিত রাখা হয়। এছাড়া ক্যাশ আউটের সংখ্যা ৩ বার থেকে কমিয়ে দিনে ২ বার এবং মাসে ১০ বার অপরিবর্তিত রাখা হয়। এছাড়া টাকা ক্যাশইন করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে ৫ হাজার টাকার বেশি ক্যাশ আউট করা যাবে না। কোন মোবাইল হিসাবে ৫ হাজার টাকার বেশি ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউট করতে হলে গ্রাহককে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখাতে হবে এবং এজেন্ট ওই পরিচয়পত্রের নম্বর রেজিস্টার খাতায় লিখে রাখবেন। ক্যাশ ইন ও ক্যাশ আউটের আলাদা রেজিস্ট্রার খাতায় গ্রাহকের স্বাক্ষর বা টিপসহি রাখতে হবে। এই নির্দেশগুলো পরিপালন না করলেও এজেন্টশিপ বাতিল করতে হবে। এজন্য এজেন্টদের প্রতি নজরদারি বাড়াতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান, মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সন্ত্রাসে ও জঙ্গী কার্যক্রমে অর্থায়ন, মানবপাচার ও মাদক ব্যবসায়ীদের অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। কেন্দ্রীয় বাংক ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে এসবের প্রমাণও পাওয়া গেছে। সম্প্রতি ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যাংক কর্মকর্তারা মোবাইল ব্যাংকিং সেবা ব্যবহারে হুন্ডি হওয়ার অভিযোগ করেন। এতে করে মোবাইল ব্যাংকিং সেবায় লেনদেনের পরিমাণ কমিয়ে দিয়ে হুন্ডি হ্রাসের চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ২০১০ সালে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে ১৮টি ব্যাংকের লাইসেন্স রয়েছে। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যন্ত মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এজেন্ট সংখ্যা ৭ লাখ ৭৩ হাজার ২৮৩ জন। নিবন্ধনকৃত ৫ কোটি ৭৭ লাখ একাউন্টের মধ্যে ৩ কোটি একাউন্ট সচল রয়েছে। সেপ্টেম্বরে দৈনিক গড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৭১৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App