আপন জুয়েলার্সের তিন মালিক কারাগারে
কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০১৭, ০৬:৫১ পিএম
আপন জুয়েলার্সের মালিক তিন ভাইকে শুল্ক ফাঁকির মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের তিন মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
একদিনের রিমান্ড শেষে সোমবার ঢাকার হাকিম সাদবীর ইয়াসির আহসান চৌধুরী এবং দেবপ্রদ বিশ্বাসের আদালত কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন।
কারাগারে পাঠানো তিন ভাই হলেন, বনানীর আলোচিত দ্য রেইন ট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের প্রধান আসামি সাফাত আহমদের বাবা দিলদার আহমেদ সেলিম, দিলদারে ভাই গুলজার আহমেদ ও আজাদ আহমেদ।
মামলাগুলোর তদন্তকারী কর্মকর্তা শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ, মোহাম্মাদ জাকির হোসেন এবং শিবলু ঘোষ আসামিদের গত ২ নভেম্বর তিন দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর রিমান্ড হওয়া তিনটি মামলাসহ পাঁচটি মামলায় সিএমএম আদালতে আত্মসমর্পণ করে আসামিরা জামিনের আবেদন করলে শুনানি শেষে তিনজন বিচারক আসামিদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, আসামিরা মামলাসমূহে গত ২২ আগস্ট হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করলে হাইকোর্ট তাদের চার সপ্তাহের জন্য জামিন মঞ্জুর করেন। চার সপ্তাহ পর তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের প্রার্থনা করার কথা ছিল। কিন্তু তারা প্রায় নয় সপ্তাহ পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
এর আগে গত ১২ আগস্ট চোরাচালানের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণ ও হীরা জব্দের ঘটনায় ওইসব মূল্যবান ধাতু কর নথিতে অপ্রদর্শিত ও গোপন রাখার দায়ে আপন জুয়েলার্সের মালিক ওই তিন ভাইয়ের বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা দায়ের করে শুল্ক গোয়েন্দা।
মামলাগুলোয় আসামিরা গত ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের জামিন পান। এরপর তারা নিম্ন আদালতে জামিননামাও দাখিল করেন। হাইকোর্টের জামিনের মেয়াদ শেষে হলেও নিম্ন আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ২২ ও ২৩ অক্টোবর তিনটি মামলায় তাদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
শুল্ক গোয়েন্দার পাঁচ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা যথাক্রমে এম আর জামান বাঁধন, বিজয় কুমার রায়, মো. শাহরিয়ার মাহমুদ, মোহাম্মদ জাকির হোসেন এবং মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে এসব মামলা করেন।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধনী ২০১৫) এর ধারা ২ (ঠ) এবং কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ এর ধারা ১৫৬(৫) অনুযায়ী শুল্ক গোয়েন্দা ওই মামলা দায়ের করা হয়।
আপন জুয়েলার্সের বিরুদ্ধে শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণালঙ্কার মজুদের অভিযোগে কাস্টমস অ্যাক্ট, ১৯৬৯ অনুযায়ী কাস্টম হাউস ঢাকায় আরও পাঁচটি কাস্টমস মামলা বিচারাধীন।
প্রসঙ্গত, বনানীর আলোচিত দ্য রেইন ট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া দুই তরুণীতে জন্মদিনের পার্টিতে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করেন আপন জুয়েলার্সের অন্যতম মালিক দিলদার হোসেন সেলিম ছেলে সাফাত ও তার সহযোগীরা। ওই ঘটনার পরই রাজধানীতে আপন জুয়েলাসের পাঁচটি শোরুম থেকে প্রায় ১৫ মণ স্বর্ণ ও হীরার অলঙ্কার জব্দ করা হয়। পরে এসব অলঙ্কার বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া হয়।