×

জাতীয়

পাকুন্দিয়ায় ১৪৪ ধরা ভঙ্গ করায় পুলিশের লাঠিচার্জ

Icon

কাগজ অনলাইন প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:৫৫ পিএম

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় পুলিশ ও আওয়ামী লীগের একাংশের নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে।

এতে পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে।

আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনুর সমর্থকরা লগিবৈঠা নিয়ে মিছিল করলে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

তবে রেনু গ্রুপের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, শুধু পুলিশ নয় স্থানীয় এমপি সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকরাও পথে পথে তাদের মিছিলে হামলা চালিয়েছে।

পাকুন্দিয়া সদরের ঈদগাহ মাঠে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেনু মিছিল ও সমাবেশের ডাক দেন। আজ সোমবার বিকেল ৩টায় এ সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল।

এদিকে, স্থানীয় এমপি সোহরাব উদ্দিনের সমর্থক স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগ একই স্থানে একই সময় সমাবেশ আহ্বান করে শনিবার বিকেলে মাইকিং করে। দুই পক্ষ একই স্থানে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকায় এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এর জের ধরে রবিবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এ পরিস্থিতিতে রাত ৯টার দিকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে উপজেলা প্রশাসন।

সমাবেশে যোগ দিতে বিকেল ৩টা থেকে জাংগালিয়া, চরফরাদী, এগারসিন্দুর, বুরুদিয়া, পাটুয়াভাঙ্গা, হোসেন্দী, নারান্দী, চণ্ডিপাশা, সুখিয়া, পাকুন্দিয়া পৌরসভা ও কটিয়াদী এলাকা থেকে লগি-বৈঠা, নৌকা, ফেস্টুনসহ নাচ-গান, ঢাক-ঢোল ও বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশে যোগ দিতে হাজার হাজার সমর্থক আসতে থাকে।

এসব মিছিল উপজেলা সদরে প্রবেশ করে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পৌরসদরের গরুর হাট এলাকা, টিঅ্যান্ডটি রোড ও পাকুন্দিয়া হাইস্কুলের সামনে বিকেল ৪টার দিকে উপস্থিত হলে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও বেধড়ক লাঠি পেটায় মিছিলগুলো ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পুলিশের রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও লাঠিপেটায় অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। এ সময় পুলিশের কনস্টেবল কবির হোসেন আহত হয়ে পাকুন্দিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। ঘটনাস্থল থেকে হৃদয় নামের একজনকে আটক করে পুলিশ। এ অবস্থায় পুরো উপজেলা সদরের দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম রেনু বলেন, "এমপি সোহরাব উদ্দিন তার সমর্থকদের দিয়ে পাল্টা মিটিং ডেকে আমার জনসভায় প্রশাসনকে দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করিয়েছে এবং এমপির ক্যাডারদের হামলা ও পুলিশের রাবার বুলেট-টিয়ারশেল নিক্ষেপ এবং তাদের লাঠিপেটায় অন্তত ৫০ জনের মতো নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ছাড়া হৃদয় নামের একজন কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগেও এমপি সোহরাব উদ্দিন আমার দুইটি জনসভায় প্রশাসনকে দিয়ে ১৪৪ ধারা জারি করিয়েছেন।"

এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংসদ মো. সোহরাব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।

পাকুন্দিয়া থানার ওসি মো. শামসুদ্দিনের সঙ্গে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। দুই পক্ষ একই জায়গায় সমাবেশ ডাকায় প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছিল। কিন্তু একপক্ষ আইন অমান্য করে লগি-বৈঠা নিয়ে মিছিল করে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ অবস্থায় পুলিশ আত্মরক্ষা ও জনগণের জানমাল রক্ষায় লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে।" কত রাউন্ড গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়েছে?- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, "এখনও এ হিসাব করা হয়নি।"

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App