×

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ অক্টোবর ২০১৭, ১১:৩২ এএম

রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যে আচরণ করছে মিয়ানমার, সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গ্লোবাল ম্যাগনিৎস্কি আইনের অধীনে মিয়ানমারের দায়ীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা চিন্তা করছে তারা। উল্লেখ্য, বিশ্বের যেকোনো স্থানে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন ও দুর্নীতি করার দায়ে গ্লোবাল ম্যাগনিৎস্কি আইনের অধীনে দায়ীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ। এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়লে সেসব ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারে না, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সম্পদ তারা ভোগ করলে তা ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে সম্প্রতি যেসব ঘটনা ঘটছে এবং রোহিঙ্গা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের  বিরুদ্ধে সহিংস ও নির্যাতনমূলক যে আচরণ করা হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি।’ বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘বেসরকারি গোষ্ঠী ও নজরদারি কমিটিসহ যেকোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই নৃশংসতার জন্য দায়ী হলে তাদের নিশ্চিতভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।’ গত আগস্ট মাসে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমার সেনাবাহিনী বর্বর অভিযান শুরু করলে হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এখনো রোহিঙ্গারা আসছে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, এ পর্যন্ত ৫ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এ সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি বিশ্বসম্প্রদায় আহ্বান জানালেও তাতে কান দেয়নি তারা। রোহিঙ্গাদের শত শত গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী ও স্থানীয় উগ্র বৌদ্ধদের হামলায় বহু মানুষ মারা গেছে। গণহত্যা, ধর্ষণ চালানো হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা যেন রাখাইনে নিজেদের বাড়িতে ফিরতে না পারে, সেজন্য বিক্ষোভ-মিছিল করেছে স্থানীয় বৌদ্ধ জনতা। রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ভয়াবহ এই নির্যাতনকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন চালানোর জন্য মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে দায়ী করেছেন। কিন্তু সেনাবাহিনীর দাবি, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক নয়, তারা বাঙালি। কিন্তু ইতিহাস বলছে, প্রায় সাড়ে ৭০০ বছর ধরে রোহিঙ্গা মুসলিমরা রাখাইনে বসবাস করছে। রোহিঙ্গা নির্যাতনের জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে দায়ী করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে তখন তিনি কিছু বলেননি। তবে এবার তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানালো, নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে তারা। নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়া সফরে আসছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফিলিপাইনের ম্যানিলায় আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন তিনি। মিয়ানমারও আসিয়ানের সদস্য। এমন সময়ে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি নিঃসন্দেহে মিয়ানমারকে চাপে ফেলবে। কয়েক মাস ধরে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্যাতন-নিপীড়ন চললেও এবারই প্রথম মিয়ানমারকে কড়া ভাষায় ‍হুঁশিয়ারি দিল যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বারাক ওবামার আমলে মিয়ানমারের ওপর থেকে তুলে নেওয়া অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আবার বহালের মতো বড় কোনো পদক্ষেপের দিকে যাচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের ধীরগতির পদক্ষেপের সমালোচনা করছে আন্তর্জাতিক সমালোচকরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App