×

মুক্তচিন্তা

জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের শেষ কোথায়?

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ অক্টোবর ২০১৭, ০৭:৪০ পিএম

বিরূপ আবহাওয়া আর টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই একই পরিস্থিতি। তবে রাজধানীবাসীর দুর্ভোগের মাত্রা ছিল অসহনীয়। রাজধানীর নিচু এলাকায় কোথাও হাঁটুপানি, কোথাও কোমরপানি। মহানগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তলিয়ে যায়। চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশালসহ অন্যান্য নগরীতেও জলাবদ্ধতায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন। বৃষ্টি হলে রাজধানীসহ দেশের প্রধান শহরগুলোতে জলাবদ্ধতা যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। এ রূপ নিত্যদিনের। উত্তরণের বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও কোনোটাই কাজে আসছে না। এ দুর্ভোগ থেকে কি কোনোই মুক্তি নেই?

এই হেমন্তে গত শুক্র-শনিবারের টানা বৃষ্টিতে রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে ছিল জলাবদ্ধতা। রাজধানীর বেশিরভাগ সড়ক যখন খোঁড়াখুঁড়ির শিকার সেই মুহূর্তে তিন দিনের ঘন বৃষ্টিপাত ঢাকা মহানগরীকে আরো অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ভয়াবহ জলজট-যানজটে পাঁচ মিনিটের রাস্তা অতিক্রম করতে অনেকের এক ঘণ্টা ব্যয় হচ্ছে। বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সিংহভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে তিন দিন ধরে। জলাবদ্ধতা এখন এই বন্দর নগরীর প্রধান এক সমস্যা। চট্টগ্রামে বৃষ্টি হলেই নেমে আসে জলাবদ্ধতার অভিশাপ। কর্ণফুলীর জোয়ারে প্লাবিত হয় নগরীর নিম্নাঞ্চল। প্রতিটি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা জলাবদ্ধতা নিরসনের প্রতিশ্রুতি দেন। নির্বাচিত হয়ে তাদের কেউ কেউ সমস্যার সমাধানে কিছু পদক্ষেপও নেন। কিন্তু সমন্বিত পদক্ষেপের অভাবে তা ফলপ্রসূ ভ‚মিকা রাখতে পারছে না। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতার সঙ্গে রয়েছে জোয়ারের প্রভাব। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম মহানগরীর নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাধার মুখে পড়েছে, যা জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ। এটা সত্যি যে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ নগরীগুলোর বিশেষ করে রাজধানীর জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ হলো জলনিষ্কাশনের যথাযথ ব্যবস্থার অভাব, ড্রেনগুলো বুজে যাওয়া, খাল-নালাগুলো ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়া।

নগরীর জলাবদ্ধতা নিয়ে গণমাধ্যমে লেখালেখি কম হয়নি। সরকারের নানামুখী উদ্যোগ, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পরামর্শ কোনোটাই যেন কাজে আসছে না। দেশের দুই বৃহত্তম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে শুধু সিটি কর্পোরেশন নয়, সরকারকেও এগিয়ে আসতে হবে। আমরা মনে করি, সমন্বয়হীনতার কারণেই বারবার এ দুরবস্থা তৈরি হচ্ছে। ওয়াসা, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর এবং সিটি কর্পোরেশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কারো সঙ্গে কারো কোনো সমন্বয় নেই। তারা ঢাকায় স্বাধীনভাবে এবং নিজেদের খেয়ালখুশিমতো কাজ করছে। এ সমন্বয়হীনতা দূর করতে না পারলে নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব হবে না।

রাজধানীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ওয়াসার কাছ থেকে সিটি কর্পোরেশনের হাতে ন্যস্ত করার সিদ্ধান্ত হলেও তা অজ্ঞাত কারণে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে না। এদিকে খাল-নালা উদ্ধারও ঠিকমতো হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে খাল-নালা উদ্ধার কর্মসূচি বাস্তবায়ন হয় না। এই অবস্থার পরিবর্তন জরুরি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা নিরসনে সুসমন্বিত বৃহৎ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App